চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর শপথ নিলেন শেখ হাসিনা
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সোমবার বঙ্গভবনে তাকে শপথ বাক্য পাঠ করান। এ শপথের মধ্যে দিয়ে টানা তৃতীয়বার এবং চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হলেন শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা বিকেল সাড়ে ৩টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে প্রবেশ করেন। এরপর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বিকেল ৩টা ৩৩ মিনেটে শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করছেন।
শপথ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা, বিচারপতিরা, শিক্ষক, কূটনীতিকরাসহ এক হাজারের মতো অতিথি উপস্থিত আছেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে এমপি হিসেবে শপথ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শপথ অনুষ্ঠান শেষে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায় তিনি সংসদ নেতা হিসেবে নির্বাচিত হন।
১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পর দলের দায়িত্ব নিয়ে শেখ হাসিনা প্রথম নির্বাচনে অংশ নেন ১৯৮৬ সালে। মিডিয়া ক্যু করে এরশাদের সামরিক সরকার আওয়ামী লীগকে হারিয়ে দেন। তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো বিরোধীদলীয় নেতা হন শেখ হাসিনা। পরে স্বৈরাচার পতনের পর ১৯৯১ সালে পঞ্চম সংসদে তিনি বিরোধীদলীয় নেতার আসনে বসেন।
১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে প্রথমবারের মতো সরকার গঠন করেন তিনি। এরপর ২০০১ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করতে না পারলেও ভোট বাড়ে আওয়ামী লীগের। সরকার গঠন করে বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট। বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে সংসদে বসেন শেখ হাসিনা।
এরপর নবম সংসদ নির্বাচন থেকে একাদশ সংসদ পর্যন্ত টানা তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নবম সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৬৪টিতেই শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট জয়লাভ করে। এরপর থেকেই বাংলাদেশে ‘দিন বদলের শুরু’ হয়। দেশের প্রতিটি খাতে অভূতপূর্ব উন্নতি শুরু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। শেখ হাসিনার জয়রথ চলমান থাকে দশম সংসদ নির্বাচনেও। ওই বছরের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আবারও বিজয়ী হয়ে টানা দুই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীত্বের শপথ নেন শেখ হাসিনা।
২০১৪ সালের নির্বাচনের পর অনেকেই ভেবেছিলেন, পূর্ণ মেয়াদে সরকার পরিচালনা করতে পারবেন না শেখ হাসিনা। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন চাপের মুখে মধ্যবর্তী নির্বাচন দিতে বাধ্য হবেন তিনি। কিন্তু তাদের সবার ধারণা ভুল প্রমাণ করে দিয়ে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলন-জ্বালাও পোড়াও মোকাবেলা করে পূর্ণ মেয়াদ সরকার পরিচালনা করেন শেখ হাসিনা। মেয়াদের শেষ দিকে এসে বিএনপিসহ সরকারবিরোধী জোট আবারও সংসদ ভেঙে নির্বাচনের দাবি জানায়। কিন্তু সংবিধানের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, সংসদ বহাল রেখেই একাদশ সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিতের জন্য টানা এক সপ্তাহ দেশের সক্রিয় সব রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে নির্বাচনী সংলাপে বসেন তিনি। ফলে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্ট। এই নির্বাচনেও ঐক্যফ্রন্ট মাত্র ৭টি আসনে জয়ী হয়। আর ২৮৮টি আসন পায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট।
এফএইচএস/জেএইচ/আরআইপি/এসজি