ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

ভোটে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চান ঢাকাবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৮:১১ পিএম, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮

বছর, মাস, সপ্তাহ, দিন পেরিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এখন ঘণ্টার ব্যবধানে দাঁড়িয়েছে। রাত পোহালেই রোববারের নতুন সূর্যোদয়ের পরপরই ভোট উৎসবে মেতে উঠবে দেশবাসী। এ ভোট দেয়া নিয়ে সব শ্রেণি পেশার মানুষের মধ্যে কিছুটা শঙ্কা থাকলেও রাজধানীর বাসিন্দারা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিতে চান।

ঢাকার বাসিন্দারা যাতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিতে পারে সে জন্য আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সব বাহিনীর সমন্বিত টহলে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয়েছে রাজধানী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ও রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণা ঠেকাতে কঠোর নজরদারি চলছে সাইবার দুনিয়ায়।

সারাদেশে নির্বাচনী উৎসবের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, কোনো বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তায় কোথাও কোনো সহিংসতা হলে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। একই সঙ্গে নির্বাচন কেন্দ্রে সহিংসতা ও অনিয়ম কঠোর হস্তে দমনে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

dhakabasi

গত ১০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থীদের প্রতীক আনুষ্ঠানিকভাবে বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পরপরই নির্বাচনী প্রচারণা ও গণসংযোগে নেমে পড়েন প্রার্থীরা। তবে ঢাকার প্রতিটি অসনেই প্রচারণার মাঠ ছিল মহাজোট তথা নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের দখলে।

অপরদিকে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে বিরোধীদের বাধার কারণে তারা প্রচারণা চালাতে পারেননি।

Dhakabasi

নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থীদের অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগে নির্বাচন ঘিরে জনমনে কিছুটা শঙ্কা দেখা দিলেও রাজধানীর বাসিন্দারা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ভোট দিতে চান। সেই সঙ্গে ভোটের পরও যাতে পরিবেশ শান্তিপূর্ণ থাকে তেমনটাই দাবি ঢাকাবাসীর। প্রতীক বরাদ্দর পর থেকে শনিবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকাল পর্যন্ত শতাধিক রাজধানীবাসীর সঙ্গে কথা বলে এমনটাই অভিমত পাওয়া গেছে।

রামপুরার বাসিন্দা মো. মহিউদ্দিন বলেন, দীর্ঘ কয়েক বছর পর এবার ভোট দেয়ার সুযোগ পাচ্ছি। জানি না ভোটের সময় ভোট কেন্দ্রের পরিবেশ কেমন হবে। তবে আমি যেন নির্ভয়ে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারি এমন একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চাই। আমি চাই সবাই যার যার ভোট নিজে দিকে। ভয় পেয়ে যেন কেউ ভোট দেয়া থেকে বিরত না থাকে।

তিনি বলেন, এবারের নির্বাচন ঘিরে এক ধরনের গুমট পরিবেশ বিরাজ করছে। এ ধরনের পরিবেশ কারো কাম্য নয়। আমরা ভোটের দিন যেমন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চাই, ঠিক তেমনি ভোটের পরও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চাই। যেই সরকার গঠন করুক, সবাই যেন মারামারি, হানাহানি থেকে দূরে থাকে।

মালিবাগের বাসিন্দা মো. সাইদুর বলেন, ভোটের মাধ্যমে একদল জিতবে, অন্য দল পরাজিত হবে এটাই নিয়ম। তাই ভোটের ফলাফল যাই হোক সবাইকে মেনে নিতে হবে। তার আগে সবাই যেন ভোট কেন্দ্রে গিয়ে সুষ্ঠভাবে ভোট দিতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা আশাকরি ভোটের দিন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না।

Dhakabasi

তিনি বলেন, ভোট উপলক্ষে রাজধানীজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা নেয়া হয়েছে। গণমাধ্যমের সংবাদে তেমনটাই জানতে পারছি। টেলিভিশনে দেখলাম সেনাবাহিনীর সদস্যরা রাস্তায় নেমে গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষা করছে। গাড়ি যাতে সুশৃঙ্খলভাবে চলাচল করে তার নির্দেশনা দিচ্ছে। আশাকরি ভোটের দিন ভোটাররা এমন সুশৃঙ্খলভাবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিতে পারবে।

খিলগাঁওয়ের আনোয়ার বারি বলেন, প্রতীক বরাদ্দের পর নৌকার মিছিল, প্রচারণা বেশি দেখেছি। ধানের শীষের তেমন প্রচারণা দেখিনি। বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে দেখলাম আব্বাস সাহেব (মির্জা আব্বাস) ও তার স্ত্রী আওয়ামী লীগের বাঁধার কারণে প্রচারণা চালাতে পারছেন না বলে অভিযোগ করছেন। অপরদিকে নৌকার প্রার্থীরা বলছেন ধানের শীষের প্রার্থীরা নিজেরা ইচ্ছা করেই প্রচারণা চালাচ্ছেন না। দুই দলের প্রার্থীদের এমন অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগের কারণে এমন শঙ্কা তো দেখাই যায়। তারপরও আমরা আশা করবো ভোটের দিন কোনো সমস্যা হবে না।

যাত্রাবাড়ির মো. লিটন বলেন, ভোটের দিনের পরিবেশ নিয়ে সবার মনেই এক ধরনের শঙ্কা রয়েছে। তবে আমরা চাই ভোটের সময় যেন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। কেউ যেন হতাহত না হয়। ভোটের মাধ্যমে যেই দলই সরকার গঠন করুক, আমরা চাই সেই সরকার সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করবে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকবে ভোটের পরেও সবই মিলেমিশে শান্তিতে বসবাস করতে পারবে।

ফকিরাপুলের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি ছোটখাটো ব্যবসা করি। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে যে পরিবেশ দেখেছি, তেমন পরিবেশ আর দেখতে চাই না। হামলা, ভাঙচুর, জ্বালাও-পোড়াও দেখতে চাই না। চাই একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ, যেখানে পরিবার নিয়ে নির্ভয়ে বসাবাস এবং সুষ্ঠভাবে ব্যবসা করতে পারবো। প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কাছে আমরা তেমনই পরিবেশ চাই।

এমএএস/এএইচ/পিআর

আরও পড়ুন