ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

নৈরাজ্যের সামান্য চেষ্টা হলেও কঠোরভাবে দমন

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১২:৪১ পিএম, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮

ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি) মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশি-বিদেশি একটি মহল অপপ্রচার ও গুজব রটাচ্ছে। ভোটকেন্দ্রে যেতে ভোটারদের বাধা, ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি, জ্বালাও পোড়াও ও নৈরাজ্যের সামান্য চেষ্টা হলেও কঠোরভাবে দমন করা হবে।

শনিবার দুপুর সোয়া ১২টায় নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে কাউন্টার টেররিজম প্রধান মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত কমিশনার কৃঞ্চপদ রায়, আব্দুল বাতেন ও কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের ডিসি প্রলয় কুমার জোয়ার্দার উপস্থিত ছিলেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, স্বশস্ত্র বাহিনী, বিজিবি, র্যাব পুলিশসহ সকল বাহিনী মিলে সমন্বিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ভোটকেন্দ্র ভিত্তিক নিরাপত্তা থাকবে। মোবাইল টহল টিম থাকবে, স্ট্রাইকিং ফোর্স রিজার্ভ থাকবে। নির্বাচন কমিশন, রিটার্নিং কর্মকর্তা, বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়, জেলা প্রশাসকসহ ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ভোটাররা যেন নিশ্চিন্তে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারেন সে জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মোবাইল টহল চলছে। ভোট চলাকালে কোনো ধরনের যাতে গোলযোগ, পেশীশক্তির ব্যবহার যাতে না হয়, কেউ যেন পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে ভোটারদের উপর প্রভাব বিস্তার করতে না পারে সে জন্য আমরা সতর্ক রয়েছি। আমাদের কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে।

ভোটার, প্রার্থী ও প্রার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে কমিশনার বলেন, আমরা সবাই নির্বাচন কমিশনের কোড অব কনডাক্ট মেনে চলব। কারো নিরাপত্তার প্রয়োজন হলে তাৎক্ষণিকভাবে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে।

আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘ভোটার, প্রার্থী, এজেন্ট ও সংশ্লিষ্টদের সুস্পষ্ট করে বলতে চাই, কেউ যদি নৈরাজ্য করার চেষ্টা করে, ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি চেষ্টা, ভোট কেন্দ্র দখল ও ভোটারদের নিরাপত্তা বিঘ্নিতে সামান্য অপচেষ্টা করে, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে, পেশীশক্তির ব্যবহারের চেষ্টা করে তাহলে তাকে কঠোরভাবে দমন করা হবে। এখন থেকে নির্বাচন শেষ না অবধি ঢাকা মহানগরী নিরাপত্তা চাঁদরে আবৃত থাকবে। সোয়াট, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, এই নির্বাচন শুধু সরকার পরিবর্তনের নির্বাচন নয়, এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা আগামী দিনের সমৃদ্ধির বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি। আমরা সকল বাহিনীর সাথে চমৎকার সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছি। তবে একটি অবাধ, স্বচ্ছ নিরপেক্ষ ভীতিহীন ও উৎসব মুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব শুধু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নয়, এ দায়িত্ব প্রত্যেকটি নাগরিকের।

সব নাগরিক ও নেতার নিরাপত্তা নিশ্চিতে তৎপর পুলিশ
কয়েক দিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখা যাচ্ছে ড. কামালসহ কয়েকজনকে হত্যার ষড়যন্ত্রের কথা প্রচার চলছে। এটা কি শুধু গুজব নাকি সত্যতা আছে জানতে চাইলে কমিশনার বলেন, একটি দেশি-বিদেশি স্বার্থান্বেষী মহল সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে দেশের গণতন্ত্র, স্বার্বভৌমত্ব, উন্নয়নের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। নানাভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে কার্যক্রমে নিরুৎসাহিত করা ও চাপে রাখার কৌশলও দেখা গেছে। সাইবার ক্রাইম ইউনিট ও গোয়েন্দা সংস্থা তথ্য সংগ্রহ করে এসব বিষয়ে বিচার বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।

বিভিন্ন নেতার নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার যে সংবাদ সোশ্যাল ও অনলাইন মিডিয়াতে এসেছে সেগুলোর ব্যাপারে আমরা অত্যন্ত সতর্ক ও গুরুত্বের সাথে নিয়েছি। আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, কোনো ষড়যন্ত্র ও অপতৎপরতা সফল হতে দেয়া হবে না। যারা ফেইক আইডি খুলে ভীতি সৃষ্টি করতে চায়, নির্বাচনকে বিতর্কিত করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থা কঠোর ও সুস্পষ্ট। ভীতির কোনো কারণ নাই।

দেশের প্রত্যেকটি নাগরিকের নিরাপত্তার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধু ড. কামাল হোসেন কিংবা জাতীয় নেতারা নন, যে কোনো নাগরিকের নিরাপত্তা ঝুঁকি আছে বলে তথ্য ও অনুসন্ধানে প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে আমরা তৎপর ও সতর্ক রয়েছি। নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য প্রকাশ্যে গোপনে আমাদের সব কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।

ঢাকায় কার্যত কোনো ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র নেই
ঝুঁকিপূর্ণ আসনের ব্যাপারে পুলিশের পরিকল্পনা জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, প্রত্যেকটা নির্বাচনে কিছু ঝুঁকি থাকে। প্রার্থী ও তাদের এজেন্ট অনেক ক্ষেত্রে অতি উৎসাহী হয়ে আচরণবিধি লঙ্ঘন ও বলপ্রয়োগ করে থাকেন। সেই বিবেচনায় আমরা কিছু কিছু কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ বলেছি। সবকিছু মিলেই কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ বলা হয়ে থাকে। তবে ওই অর্থে ঢাকার কোনো কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ নয়। কারণ, ঝুঁকি থাকলেও তা মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনকে উৎসব মুখর করা, সংঘাতহীন, গোলযোগহীন করার জন্য আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে আসুন ও ভোট প্রদান করুন।

জেইউ/আরএস/জেআইএম

আরও পড়ুন