ভোটের মাঠে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা
আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য নাশকতা, অগ্নিসংযোগ ও মানব বিপর্যয়ের যেকোনো ঘটনা তাৎক্ষণিক মোকাবেলায় চট্টগ্রামের ১৬ আসনের ৪৯টি গুরুত্বপূর্ণ স্পটে অবস্থান নিয়েছে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা। নির্বাচনের মাঠে এবারই প্রথম সরাসরি অংশ নিচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের প্রায় ৮০০ সদস্য।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স সূত্রে জানা গেছে, ভোটকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য যেকোনো ধরনের সহিংসতা-পরবর্তী অগ্নিসংযোগ কিংবা মানব বিপর্যয়ের মতো ঘটনাগুলোতে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমাতেই এ ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের অগ্নিসন্ত্রাস হলে তা প্রতিরোধের কৌশল হিসেবে সারাদেশে ফায়ার সার্ভিসের বিশেষ মহড়া শুরু হয়েছে। নির্বাচনের আগ পর্যন্ত পালাক্রমে প্রতিদিনই এ মহড়া চলবে।
আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জননিরাপত্তায় ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের ১৬টি আসনে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিজিবি, পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনী বিভিন্ন নির্বাচনী আসনগুলোতে দায়িত্ব পালন করা শুরু করে দিয়েছে। এসব বাহিনীর সঙ্গে এবার প্রথমবারের মতো যোগ দিল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ।
নির্বাচনী যেকোনো ধরনের সহিংসতামূলক কর্মকাণ্ড, অগ্নিসংযোগ, রাসায়নিক বা বোমা বিস্ফোরণের মতো ঘটনাগুলোতে ক্ষয়ক্ষতি রোধে এ বাহিনীটির সদস্যরা কাজ করবেন। নির্বাচনকে ঘিরে অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধার কাজে নিয়োজিত এ বাহিনীটির পক্ষ থেকে এ ধরনের তৎপরতা এবারই প্রথম। ইতোমধ্যেই চট্টগ্রাম মহানগরসহ ১৬টি নির্বাচনী আসনে টহল দেয়া শুরু করেছে দুর্যোগ মোকাবেলায় নিয়োজিত এ বাহিনীটি।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স সূত্রে আরও জানা গেছে, নির্বাচনী দায়িত্বে রেসকিউ টিম, হাজমত টিম, রিজার্ভ টিম, মোবাইল টিম ও স্পেশাল টিম মাঠে কাজ করছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রয়োজনীয় তৎপরতা চালানোর বিষয় নিয়ে মঙ্গলবার (২৫ ডিসেম্বর) ১৬টি নির্বাচনী এলাকার ফায়ার স্টেশনের কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক মো. জসীম উদ্দিন বলেন, ‘জনগণের জানমাল রক্ষায় ফায়ার সার্ভিস সবসময়ে প্রস্তুত রয়েছে। অগ্নিসন্ত্রাসের বিষয়ে জনগণকে সচেতন করতে নিয়মিত সচেতনতা মহড়া চলেছে। এবার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেকোনো ধরনের অগ্নিসংযোগ বা অগ্নিসন্ত্রাস প্রতিরোধে সারাদেশে বিশেষ মহড়া চলছে। পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে ফায়ার সার্ভিস যৌথভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে যে ধরনের সহিংসতা, উচ্ছৃঙ্খলতা দেখা দিয়েছিল তার পরিপ্রেক্ষিতে এবার নির্বাচনে সার্বিক সতর্কতার কথা বিবেচনা ও জানমালের রক্ষার্থে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দলই অংশগ্রহণ করছে। কাজেই এ নির্বাচনে কোনো সহিংসতা, অগ্নিদুর্ঘটনা বা বিস্ফোরণ হলে আমাদের লোকেরা যাতে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে পারে, সে লক্ষ্যে তারা মাঠে নিয়োজিত রয়েছে।’
জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা ৪৯টি ঝুঁকিপূর্ণ স্পট চিহ্নিত করেছি। এসব ঝুঁকিপূর্ণ স্পটগুলো তদারকির জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকবল নিয়ে ফায়ার সার্ভিসের বিশেষ একটি টিম গঠন করা হয়েছে। তারা মাঠে নিয়োজিত রয়েছে। কেমিকেল জনিত কোনো বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলে ফায়ার সার্ভিসের টিমের লোকেরা কাজ করবে। এভাবে পাঁচটি পৃথক টিম গঠন করা হয়েছে। সবমিলিয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ৮০০ সদস্য এ নির্বাচনী কাজে যুক্ত হয়েছে।’
আবু আজাদ/এসআর/এমএস