সিইসির পদত্যাগ দাবি ঐক্যফ্রন্টের
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার পদত্যাগ দাবি করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে জরুরি এক বৈঠক শেষে এ দাবির কথা জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল বলেছেন, এটা কোনো নির্বাচন হচ্ছে না রক্তের হলি খেলা হচ্ছে। সব জায়গায় আমাদের প্রার্থীদের ওপর হামলা করা হচ্ছে। নারীরাও বাদ যাচ্ছে না।
সংবাদ সম্মেলনের আগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে দেখিয়ে বলেন এটি হলো ২০১৮ সালের নির্বাচন। রক্তাক্ত সাবেক মন্ত্রী গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
ফখরুল আরও বলেন, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরীও আক্রান্ত হয়েছেন। কাউকে বাদ দিচ্ছে না। দেখে মনে হচ্ছে এটা কোনো নির্বাচন নয়।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ, অকার্যকর এটা আজ জাতির সামনে প্রমাণ হয়েছে। আমরা এ মুহূর্তে সিইসির পদত্যাগ চাই। এখনই চাই তিনি পদত্যাগ করুন।
এরপর ঐক্যফ্রন্টের বিবৃতি পড়েন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পক্ষে তিনি এটি পড়ে শোনান।
বিবৃতিতে বলা হয়, সারা দেশে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের ওপর হামলা মামলা, নির্যাতনের বিষয়ে অবহিত করতে নির্বাচন কমিশনে গিয়েছিলাম ড. কামাল হোসেন ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে সিনিয়র নেতারা। কিন্তু আমাদের অভিযোগ শুনে সিইসি নূরুল হুদা সরকার দলীয় নেতার মত আচরণ করেছেন।
এতে আরও বলা হয়, সিইসির ড. কামাল হোসেনসহ ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের সঙ্গে যে আচরণ করেছে তা ছিল অত্যন্ত অশোভন। ঐক্যফ্রন্ট নেতারা তাৎক্ষণিক ক্ষোভ জানিয়ে বৈঠক বর্জন করেন।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ দাবি করছি। রাষ্ট্রপতির কাছে আহ্বান করছি যাতে একজন নিরপেক্ষ সরকারকে সিইসি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। কারণ এমন মেরুদণ্ডহীন কমিশনের কাছ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা যায় না।
নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা জনগণকে আহ্বান জানাব জনগণের ঐক্য গড়ে তুলে জনগণের দাবি আদায় করার।
এরপর আজ প্রচারণার সময় হামলার শিকার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, নির্বাচন কমিশনের আচরণ দেখে মনে হচ্ছে ইসি ৭১ সালের আল বদর, আল শামস বাহিনীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে ক্ষমতাসীনদের বিজয়ী করতে।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে জনগণ যেভাবে পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাজিত করেছে ঠিক একইভাবে ৩০ তারিখের নির্বাচনে বর্তমান ক্ষমতাসীনদের পরাজিত করবে। আমরা বলতে চাই রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরও দিব।
এর আগে দুপুরে নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করে বৈঠক বর্জন করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা।
বৈঠক বর্জন করে বিএনপি মহাসচিব ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সিইসির আচরণ ভদ্রজনিত ছিল না। এ জন্য আমরা সভা বয়কট করেছি। তবে আমরা নির্বাচনে ফাঁকা মাঠে গোল দিতে দেব না।
দুপুর ১২টায় বৈঠক শুরু হয়। প্রায় দুই ঘণ্টার পর ২টার দিকে তারা বৈঠক বর্জন করেন। বৈঠক থেকে বের হয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন মির্জা ফখরুল। সংবাদ সম্মেলনের আগে বৈঠক থেকে ক্ষুদ্ধ ড. কামাল হোসেনও বেরিয়ে চলে যান।
নির্বাচন কমিশনের এমন আচরণের পর সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ বৈঠকে বসে ঐক্যফ্রন্ট।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ।
কেএইচ/জেএইচ/আরআইপি