ইজতেমা ময়দানে সংঘর্ষ : বিচারবিভাগীয় তদন্ত চান সাদপন্থীরা
গাজীপুরের টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে তাবলিগ জামাতের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ফৌজদারি মামলা করে তদন্তের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণার পর দুইপক্ষই নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছে। সাদপন্থীরা ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তসহ ছয় দফা দাবি জানিয়েছেন।
দিল্লির মাওলানা সাদপন্থীদের সঙ্গে মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীদের সংঘর্ষে নিহত মুন্সীগঞ্জের ইসমাইল মণ্ডলকে (৬৫) দুইপক্ষই নিজেদের সমর্থক বলে দাবি করছেন। পাশাপাশি প্রশ্ন তুলেছেন পুলিশের ভূমিকা নিয়েও।
গত রোববার রাজধানীর পুরানা পল্টনে সংবাদ সম্মেলন করে সংঘর্ষের সময় পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি সাদপন্থী ওয়াসিফুল ইসলাম ও শাহাবুদ্দিন নাসিমকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ ছয় দফা দাবি জানান মাওলানা জুবায়েরপন্থী মুসল্লিরা।
অন্যদিকে আজ (সোমবার) বিকেলে রাজধানীর ডিআরইউর সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন করেন সাদপন্থীরা। সেখানে তাবলীগ জামাতের সাম্প্রতিক বিভাজন এবং মাদরাসা ছাত্রদের দ্বারা টঙ্গী ইজতেমা মাঠ দখল করে চালানো তাণ্ডব এবং হতাহতের বিষয়ে বক্তব্য তুলে ধরা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে কাকরাইল মসজিদের মুরুব্বি মাওলানা আশরাফ আলী বলেন, ‘প্রতিক্রিয়াশীলরা দেশকে অস্থিতিশীতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তাবলিগ জামাতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ গোটা জামাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। অরাজনৈতিক এ দ্বীনি মেহনতকে তারা রাজনীতির হাতিয়ার বানিয়েছে।’
তিনি বলেন, গত দুই মাস তারাই পেশীশক্তির বলে টঙ্গী ইজমেতা ময়দান দখল করে রেখেছিল। মাদ্রাসা ছাত্রদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে তাবলিগের মূলধারা সাথীদের ময়দানে প্রবেশে বাধা দিয়েছে। গেটে তালা ঝুলিয়ে মাদরাসা ছাত্রদের পাহারা বসিয়ে দেয়। প্রশাসনের আশ্বাসের পরও ভেতর থেকে ইটপাটকেল পড়তে থাকে। সূচনা হয় সংঘর্ষের। প্রবেশপথগুলোতে আক্রমণ তীব্র হয়। তাদের থামতে বলেও নিভৃত করা যায়নি। সংঘর্ষে মারা যান মুন্সিগঞ্জের ইসমাইল মণ্ডল। এ ছাড়া দুই শতাধিক আহত হয়।
তিনি দাবি করেন, নিহত ইসমাইল তাদের পক্ষের সমর্থক।
এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ঘটনায় মূল সূত্রপাতকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
সাদপন্থীদের ছয় দফা
সংবাদ সম্মেলন থেকে ছয় দফা দাবি পেশ করা হয়। দাবি গুলো হলো-
অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টিকারীদের শনাক্ত ও বিচারবিভাগীয় তদন্ত করা; হতাহতদের ক্ষতিপূরণ ও পরিবারের দায় গ্রহণ; ইজতেমা ময়দান সরকারের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দখলমুক্ত করা ও মাদরাসা ছাত্রদের বিরোধে কোনোভাবে ব্যবহার না করা; দেশে স্থিতিশীল পরিবেশ ও সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রেখে ওয়াজারহাতি জোড়ের নামে সারাদেশে উসকানিমূলক সভা ও প্রোপাগান্ডা বন্ধ করা; জামাতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বহিরাগতদের অযাচিত হস্তক্ষেপ বন্ধ করা এবং আগামী ১১, ১২ ও ১৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য বিশ্ব ইজতেমা যথা সময়ে সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে সহায়তা করা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন কাকরাইল মসজিদের মুরুব্বি মাওলানা মুনির বিন ইউসুফ, মাওলানা মুহাম্মাদুল্লাহ, মাওলানা আবদুল্লাহ, মাওলানা সাইফুল প্রমুখ।
জেইউ/এনডিএস/এমএস