ঋণখেলাপি নিয়ে ইসির দ্বিমুখী নীতি
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঋণ খেলাপিদের নিয়ে দ্বিমুখী নীতি গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
নির্বাচনের আগ মুহূর্তে এসে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে সংশোধনী এনে এ নীতি নিয়েছে সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানটি। এজন্য খেলাপিদের সুবিধা দেয়ার ক্ষেত্রে বৈষম্য তৈরি হয়েছে। তবে এতে কোনো সমস্যা নেই বলে জানিয়েছে ইসি।
তফসিল ঘোষণার কয়েকদিন আগে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন করে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ও ফার্মের অংশীদারদের এ সুবিধা দেয়া হয়। তারা মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার আগের দিন পর্যন্ত ঋণ বা কিস্তি পরিশোধের সুযোগ পাবেন। তবে ক্ষুদ্র কৃষিঋণ ব্যতীত বাকি ঋণ গ্রহীতাদের মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সাতদিন আগে ঋণ বা কিস্তি পরিশোধ করতে হবে। অন্যথায় তাদের প্রার্থিতা বাতিল হবে।
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ইসির জারি করা পরিপত্র-১-এ বৈষম্যের এ চিত্র উঠে এসেছে। একটি মহলের চাপে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে ইসির একাধিক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে জানান।
এর আগে সব ধরনের প্রার্থীকে সাতদিন আগে খেলাপি ঋণ পরিশোধ করতে হতো। কিন্তু এবার প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ও ফার্মের অংশীদারদের জন্য সেটা শিথিল করেছে ইসি।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, ‘আরপিওর ১২ এর ‘এম’ ‘উপ-ধারা সংশোধন হওয়ায় কোম্পানির পরিচালক বা ফার্মের অংশীদার কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে গৃহীত ঋণ বা তার কোনো কিস্তি মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার আগে পরিশোধে খেলাপি হলে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য হবেন।’
‘কিন্তু আরপিওর ১২ ধারার ১-এর ‘এল’ ‘উপ-ধারা সংশোধন না হওয়ায় কৃষি কাজের জন্য গৃহীত ক্ষুদ্র কৃষিঋণ ব্যতীত মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সাত দিন আগে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে গৃহীত ঋণ বা কোনো কিস্তি পরিশোধে খেলাপি হলে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য হবেন। সেই সঙ্গে ১২ ধারা ১-এর ‘এন’ উপ-ধারা একইভাবে সংশোধন না হওয়ায় ব্যক্তিগতভাবে মনোনয়নপত্র দাখিলের সাত দিন আগে প্রদেয় সরকারি টেলিফোন, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি বা অন্য কোনো সেবা প্রদানকারী সংস্থার বিল পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য হবেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আরপিও সংশোধন কমিটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম জাগো নিউজকে বলেন, ‘এতে কোনো সমস্যা নেই। কোম্পানির প্রধানরা অনেক সময় ব্যস্ত থাকেন। কেউ কেউ ঘন ঘন বিদেশ যান। এ জন্য এ আইন করা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, আগামী ২৩ ডিসেম্বর রোববার সংসদ নির্বাচনের ভোট। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ১৯ নভেম্বর। যাচায়- বাছাইয়ের দিন ২২ নভেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৯ নভেম্বর। আর প্রতীক বরাদ্দ ৩০ নভেম্বর।
এইচএস/এএইচ/পিআর