ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

গ্যাস নিয়ে দুর্ভোগ আরও ১০ দিন!

নিজস্ব প্রতিবেদক | চট্টগ্রাম | প্রকাশিত: ১১:৪২ এএম, ০৬ নভেম্বর ২০১৮

কক্সবাজারের মহেষখালীর সাগরতলে সঞ্চালন লাইনে ত্রুটির কারণে চট্টগ্রামে এলএনজি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে চারদিন ধরে। এতে করে নগরজুড়ে দেখা দিয়েছে তীব্র গ্যাস সঙ্কট। কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউসন লিমিটেড (কেজিসিএল) বলছে, গ্রাহকদের এই দুর্ভোগ পোহাতে হবে আরও অন্তত ১০ দিন।

এ বিষয়ে কেজিসিএল ব্যবস্থাপক (গ্রাহক) অনুপম দত্ত জাগো নিউজকে জানান, মহেষখালীর এলএনজি টার্মিনাল থেকে এলএনজি সঞ্চালন লাইনে ত্রুটির কারণে চট্টগ্রামে এলএনজি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। মহেষখালীর সাগরতলে একটি বাল্ব মেরামতের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। বিষয়টি গভীর সাগরে হওয়ায় বাল্ব মেরামতের জন্য সাগরের স্রোত ও জোয়ার-ভাটার ওপর অনেকটা নির্ভর করতে হচ্ছে। বাল্বের ত্রুটি মেরামতে অন্তত আরও দশ দিন অপেক্ষা করতে হবে। তাই আগামী ১৫ নভেম্বরের আগে এলএনজি সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

Gas Crisis

এদিকে কারিগরি সমস্যায় চারদিন ধরে এলএনজি সরবরাহ বন্ধ থাকায় নগরজুড়ে গ্যাসের জন্য হাহাকার চলছে। বন্ধ রয়েছে গ্যাস নির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর বিদ্যুৎ উৎপাদন। ব্যাহত হচ্ছে শিল্প কারখানায় উৎপাদনও।

কেজিসিএল’র কন্ট্রোল রুম সূত্র জানায়, নগরের চান্দগাঁও, বাকলিয়া, বাদুরতলা, চকবাজার, পাঁচলাইশ, খুলশি, লালখান বাজার, ফিরিঙ্গি বাজার, আগ্রাবাদ, পাহাড়তলী, শুলকবহরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রাহকদের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।

গতকাল (সোমবার) থেকে গ্যাসের চুলা ব্যবহার করতে পাছেন না নগরের চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার গৃহিণী মনোয়ারা বেগম। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ বলেন, ‘সারাদিন গ্যাস থাকে না। সকালে বাচ্চারা স্কুলে যায়, উনি (স্বামী) অফিসে যান। তাই গভীর রাতে রান্না করে রাখতে হয়। এটা অসহনীয়।’

Gas Crisis

বাকলিয়ার বাসিন্দা ফারুক মিয়া জানান, সমস্যা মেটাতে আলাদা সিলিন্ডার কিনেছেন তিনি।

কেউ কেউ বলেছেন, রান্নার জন্য কেরোসিন চুলার ব্যবস্থা করতে হয়েছে তাদের।

নগরের ষোলশহর এলাকার একটি মেসে থাকেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী শাহিন শাহরিয়ার। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘আজ দুদিন রাইস কুকারে খিচুড়ি রান্না করে খাচ্ছি। এক খিচুড়ি কয়দিন খাওয়া যায়? এভাবে চলতে থাকলে বাড়ি চলে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই।’

গত আগস্ট মাসের মাঝামাঝি থেকে এলএনজি সরবরাহ শুরু পর চট্টগ্রামে দৈনিক ২৮০ থেকে ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ দেয়া হচ্ছিল। হঠাৎ করে সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে চট্টগ্রামের সকল পর্যায়ের গ্রাহক।

Gas Crisis

মহেষখালী টার্মিনাল থেকে আসা এলএনজিসহ চট্টগ্রামে প্রতিদিন ৩৭০ থেকে ৩৮০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ দেয়া হতো। কিন্তু এলএনজি সরবরাহ বন্ধ থাকায় বর্তমানে জাতীয় গ্রিড থেকে চট্টগ্রামে ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ দেয়া হচ্ছে।

এদিকে এলএনজি সরবরাহ বন্ধ থাকায় রোববার সকাল থেকে চট্টগ্রামে গ্যাস নির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এলএনজি সরবরাহ শুরুর পর রাউজানের একটি ইউনিট ও শিকলবাহায় দুটি ইউনিটে গ্যাস সরবরাহ দেয়া হয়েছিল। এই তিনটি ইউনিট থেকে দৈনিক প্রায় ৫৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়ে থাকে। তবে সিইউএফএল ও কাফকোতে গ্যাস সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে।

কেজিসিএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক খায়েজ আহমদ মজুমদার জাগো নিউজকে বলেন, ‘এলএনজি সরবরাহ কবে চালু হবে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। চট্টগ্রামে জাতীয় গ্রিড থেকে যে পরিমাণ গ্যাস সরবরাহ দেয়া হতো এলএনজি সরবরাহের পর তা দেশের অন্য এলাকায় বিতরণ করা হচ্ছে। ফলে ওই সব এলাকায় হঠাৎ করে সরবরাহ বন্ধ করা যাবে না। তাই সরবরাহ সমন্বয় করে চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ বাড়াতে সময় লাগবে।’

এমবিআর/এমএস

আরও পড়ুন