ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

গ্যাস নেই, জ্বলছে না চুলা, বন্ধ রান্না

মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল | প্রকাশিত: ০১:৫৬ পিএম, ০৫ নভেম্বর ২০১৮

রাজধানীতে তিতাস গ্যাসের সরবরাহ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গেছে বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা। এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের সরবরাহ ছিল খুবই কম। কিন্তু গত শনিবার রাত থেকে একেবারেই গ্যাস আসছে না।

ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, গত বেশ কিছুদিন যাবত গ্যাসের মারাত্মক সঙ্কট চলছিল। দিনের অধিকাংশ সময়ই গ্যাস থাকতো না। রাতের বেলায় স্বল্প পরিমাণে যে গ্যাস পাওয়া যেত তা দিয়ে কোনো রকমে রান্না কাজ চলতো। কিন্তু গত শনিবার রাত থেকে গ্যাস আসা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে বাসাবাড়িতে রান্না-বান্না বন্ধ রয়েছে।

আজ (সোমবার) দুপুরে তিতাস গ্যাসের অভিযোগ কেন্দ্রের দায়িত্বরত কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সকাল থেকে তারাও উত্তর ও দক্ষিণ উভয় সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে বলে শত শত অভিযোগ পাচ্ছেন। কিন্তু কী কারণে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে তা ঠিক বলা যাচ্ছে না।

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আরমানুর রেজা ভুঁইয়া গ্যাসের তীব্র সঙ্কটের কথা স্বীকার করে বলেন, গত শনিবার থেকেই গ্যাসের সমস্যা চলছে। রাজধানীতে দৈনিক গ্যাসের যে পরিমাণ চাহিদা রয়েছে তা জাতীয় গ্রিডে পাওয়া যাচ্ছে না। এ সমস্যা আজ আরও তীব্রতর হয়েছে। তবে সরবরাহ একেবারে বন্ধ হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।

তিতাসের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, চট্টগ্রামের মহেশখালীতে রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের (আরপিজিসিএল) প্ল্যান্ট (কারখানা) রয়েছে। তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড যেমন পেট্রোবাংলার একটি প্রতিষ্ঠান, তেমনি আরপিজিসিএলও পেট্রোবাংলার একটি প্রতিষ্ঠান। আরপিজিসিএল থেকে গ্যাস রূপান্তর করে তিতাস গ্যাসের জাতীয় গ্রিড পাঠানো হয়। কিন্তু সম্প্রতি আরপিজিসিএলের প্ল্যান্টের যন্ত্রাংশে মারাত্মক ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে। এই সমস্যা হওয়ার আগে আরপিজিসিএল জাতীয় গ্রিডে প্রতিদিন গড়ে তিন হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করতো। রাজধানী ঢাকায় এক হাজার ৭শ মিলিয়ন ঘনফুট গাসের চাহিদা রয়েছে। চাহিদার বিপরীতে দেড় হাজার মিলিয়ন সরবরাহ পাওয়া যেতো। কিন্তু আরপিজিসিএলের প্ল্যান্টে সমস্যার কারণে গ্যাসের সরবরাহ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে বলে ওই কর্মকর্তা মন্তব্য করেন।

রাজধানীর লালবাগের খাজেদেওয়ান প্রথম লেনের বাসিন্দা গৃহবধূ সালমা জানান, সকাল বেলা চুলা জ্বালাতে গিয়ে দেখতে পাই গ্যাস নেই। ছেলেমেয়েরা স্কুলে যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে বসে আছে। এ সময় তিনি গৃহকর্মীকে দ্রুত হোটেল থেকে নাস্তা কিনে আনতে পাঠান। কিন্তু সেখান থেকেও খবর পান গ্যাস নেই তাই হোটেলে পরোটা ভাজা বন্ধ।

এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, প্রথমে প্রতিবেশী পরে আশেপাশের এলাকার আত্নীয়-স্বজনদের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলে জানা যায় তাদেরও একই অবস্থা। এ অবস্থায় দুপুরে কোথা থেকে খাবার কিনে আনবেন তা নিয়ে চিন্তিত বলে জানান তিনি।

কামরাঙ্গীরচরের বাসিন্দা আমেনা খাতুন আজিমপুর নতুন পল্টন এলাকার এক বাসায় কাজ করেন। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, তাদের এলাকায় গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে গ্যাস নেই। ভোর রাতের দিকে আধ ঘণ্টার জন্য গ্য্যাস আসে। কিন্তু গতরাত থেকে সেটাও বন্ধ হয়ে গেছে।

এ ছাড়া মিরপুর ও রায়েরবাগ এলাকাতেও গ্যাস নেই বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এমইউ/এমবিআর/জেআইএম

আরও পড়ুন