‘১৫ টাকা ভাড়ার জায়গায় দিতে হচ্ছে ১০০ টাকা’
পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘটের মধ্যে রাজধানীতে একটু দূরের রাস্তার যাতায়াতে মূল বাহন এখন মোটরসাইকেল। ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন সোমবার রাজধানীর মাতুয়াইল, শনির আখড়া, ডেমরাসহ আশেপাশে এলাকার রাস্তায় শত শত মোটরসাইকেল চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে এসব মোটরসাইকেলে যাত্রী পরিবহনের ভাড়া অনেক বেশি।
‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ সংশোধনসহ ৮ দফা দাবিতে গতকাল রোববার সকাল ৬ থেকে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। তাদের ডাকা এ ধর্মঘটে গণপরিবহন শূন্য হয়ে পড়েছে রাজধানী ঢাকা।
মোটরসাইকেলের যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রায়েরবাগ শনির আখড়া থেকে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার দিয়ে গুলিস্তান চলাচলকারী বাসগুলো ভাড়া নিত ১৫ টাকা। কিন্তু মোটরসাইকেলে ৫ কিলোমিটারের এ রাস্তায় জনপ্রতি ভাড়া নিচ্ছে ১০০ টাকা।
সোমবার সকাল ৯টার দিকে রায়েরবাগ ওভারপাসের নিচে দাঁড়িয়ে ছিলেন মতিঝিলের এক ব্যাংককর্মী ফরিদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘এখানে গুলিস্তান বা মতিঝিল চলাচলকারী বাস থাকে সব সময়, ভাড়া নেয় ১৫ টাকা। কিন্তু ধর্মঘটের কারণে গতকাল (রোববার) থেকে কোনো বাস নেই। সেভাবে সিএনজি অটোরিকশাও চালাচল করছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এর মধ্যে প্রচুর মোটরসাইকেল দেখছি। এর আগে ধর্মঘটের সময় এভাবে দেখিনি। মোটরসাইকেলে ভাড়াটা অনেক বেশি। গুলিস্তান যেতেই ১৫ টাকা ভাড়ার জায়গায় দিতে হচ্ছে ১০০ টাকা। কিন্তু কোনো উপায়ও তো নেই।’
রায়েরবাগ, শনির আখড়া, কাজলা, যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, টিকাটুলি, গুলিস্তান ঘুরে দেখা গেছে, এসব এলাকার সড়কও মূলত মোটরসাইকেল ও রিকশার দখলে। সিএনজি চালিত অটোরিকশাও হাতে গোনা। এ সুযোগে কোনো কোনো সড়কে ব্যাটারি চালিত রিকশাও নেমে পড়েছে।
রিকশা ভাড়া ক্ষেত্রেও কোনো লাগাম নেই। মানুষের দুর্ভোগের সুযোগে ইচ্ছে মতো ভাড়া নিচ্ছেন রিকশা চালকরা। দু-একটা সিএনজি চালিত অটোরিকশা মিললেও কাড়াকাড়ি পড়ে যায়। আর তাতেও ভাড়া আকাশচুম্বী।
ধর্মঘটের প্রথম দিন (রোববার) সকালে রাজধানীর বাসস্ট্যান্ডগুলোতে মানুষের যেমন ভিড় ছিল আজ (সোমবার) দ্বিতীয় দিন তেমনটা চোখে পড়েনি। যাত্রীদের কেউ কেউ জানান, আজও গাড়ি চলবে না -এটা সবাই জানেন। তাই গন্তব্যে যেতে ভোর হতেই সবাই গাড়ির অপেক্ষা না করে হেঁটেই চলে গেছেন। তাই আজ লোকজন বেশি দেখা যাচ্ছে না।
মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে বিপুল সংখ্যক মানুষকে গুলিস্তানের দিকে যেতে দেখা গেছে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের গুলিস্তান টোল প্লাজায় মোটরসাইকেলের দীর্ঘ সারিও দেখা যায়।
গতকালের মতো আজও সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে কোনো দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়নি। বিভিন্ন রুটের বাসগুলো বাসস্ট্যান্ডের ভেতর ও এর আশেপাশে পার্ক করা রয়েছে। তবে রোববারের মতো আজ যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদসহ বিভিন্ন পয়েন্টে পরিবহন শ্রমিকদের অবস্থান নিতে দেখা যায়নি।
আরএমএম/আরএস/জেআইএম