বাকরুদ্ধ গোলাম আযম
গোলাম আযম কথা বলতে পারছেন না। এমনকি হাত-পাও ঠিকমতো নাড়াতে পারছেন না। তবে তার জ্ঞান আছে।
বৃহস্পতিবার রাতে গোলাম আযমের ছেলে আব্দুল্লাহ-হিল আমান আযমী বলেন, ‘বিকেলে আব্বাকে (গোলাম আযম) সিসিইউতে (করোনারি কেয়ার ইউনিট) নেওয়া হয়েছে। তিনি কথা বলতে পারছেন না, হাত-পাও নাড়াতে পারছেন না। তবে তিনি ডাকে সাড়া দিচ্ছেন। জ্ঞান আছে।’
এদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের উপ-পরিচালক নাজমুল আলম বলেন, গোলাম আযমের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে সিসিইউতে নেওয়া হয়েছে। সন্ধ্যার পর ডাক্তার দেখেছেন। তিনি সুস্থ আছেন। ডাক্তারের পরবর্তী পরামর্শ না পাওয়া পর্যন্ত তাকে সিসিইউতে রাখা হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুল মজিদ ভূঁইয়া বলেন, আগামীকাল (শুক্রবার) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ডাক্তারের সমন্বয়ে জরুরিভিত্তিতে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হবে। শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার চিকিৎসার ব্যাপারে নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বর্তমান অবস্থা সর্ম্পকে পরিচালক বলেন, সন্ধ্যা (বৃহস্পতিবার) থেকে তিনি শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন। খাবার খেতেও সমস্যা দেখা দেয়। তাৎক্ষণিকভাবে বিভিন্ন পরীক্ষা করে তাকে সিসিইউতে নেওয়া হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুল মজিদ ভূঁইয়া বলেন, ২০১২ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের প্রিজন সেলে আসেন। ওই সময় থেকেই তিনি একাধিক রোগে আক্রান্ত ছিলেন। একাধিকবার তাকে নিয়ে মেডিকেল বোর্ডও গঠন করা হয়েছে।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত বছরের ১৫ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ গোলাম আযমকে ৯০ বছর কারাদণ্ড দেন। বয়স ও অসুস্থতা বিবেচনায় রায়ের পর থেকে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের প্রিজন সেলে রাখা হয়।
২০১৩ সালের ১৭ এপ্রিল প্রসিকিউশন ও আসামিপক্ষের চূড়ান্ত যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মামলার রায় অপেক্ষমাণ (সিএভি— কোর্ট অ্যাওয়েটিং ভারডিক্ট) রাখেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ২ মাস ২৮ দিনের মাথায় রায় ঘোষিত হয়।
৯২ বছর বয়সী গোলাম আযমকে গ্রেফতার করা হয় ২০১২ সালের ১১ জানুয়ারি। স্বাস্থ্য ও বয়স বিবেচনায় ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে গ্রেফতারের দিন থেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের প্রিজন সেলে রাখা হয় তাকে।