ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়নের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৮:১৫ পিএম, ১৮ অক্টোবর ২০১৮

খাদ্য নিরাপত্তার জন্য সামাজিক নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি থাকা সত্ত্বেও দেশে মোট জনসংখ্যার অতিদরিদ্র ২ কোটি এবং দরিদ্র ২ কোটিসহ ৪ কোটি মানুষ। সরকারের সংস্থা বিবিএস-এর তথ্যানুযায়ী, যার অর্ধেক বেশি কম ও অপর অর্ধেক অল্প কম খেতে পায়। প্রধানত এ জনগোষ্ঠীই দরিদ্র বলে প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পুষ্টি পায় না।

অপরদিকে সমাজে আয়-বৈষম্যের কারণে শীর্ষ ১০ ভাগ ধনী পরিবারের আয় মোট জাতীয় আয়ের ৩৮ শতাংশ এবং নিম্ন অবস্থানকারী ১০ ভাগ অতি দরিদ্র জনগোষ্ঠী মোট জাতীয় আয়ের মাত্র ১ শতাংশের মালিক।

এ পরিস্থিতিতে দেশে সব মানুষের মৌলিক অধিকার খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা, বস্ত্র ও বাসস্থান প্রতিষ্ঠার বিষয়কে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন করে তুলেছে। এ প্রেক্ষাপটে অবিলম্বে ‘খাদ্য অধিকার আইন’প্রণয়নে উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে অতিদরিদ্র ও দরিদ্র ৪ কোটি মানুষের খাদ্য ও পুষ্টি অধিকার নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

বৃহস্পতিবার সিরডাপ আন্তর্জাতিক কনফারেন্স সেন্টারে ইকো কো-আপারেশনের সিভিক এনগেজমেন্ট অ্যালায়েন্স প্রোগ্রাম ও ক্রিশ্চিয়ান-এইড এর সহায়তায় খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ আয়োজিত ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন লক্ষ্য ও খাদ্য অধিকার আইনের প্রাসঙ্গিকতা’ শীর্ষক এক জাতীয় সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা। ‘খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ’ ও ‘পিকেএসএফ’-এর চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মো. কামরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

বিশেষ অতিথি ছিলেন মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের মহাপরিচালক কাজী রওশন আক্তার। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ এতে সম্মানীয় অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। আয়োজকদের পক্ষে বক্তব্য দেন ইকো কো-আপারেশনের হেড অব প্রোগ্রাম আবুল কালাম আজাদ। সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ও ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী।

সরকারের উন্নয়নমুখী পদক্ষেপের কারণে দেশের দারিদ্র্য দ্রুত কমছে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, ‘দলীয়করণের ঊর্ধ্বে এবং সততার সঙ্গে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে পারলে দেশে হতদরিদ্র মানুষের সংখ্যা কমে আসবে।’

খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে একমত পোষণ করে তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নেটওয়ার্কের প্রতিনিধিদের বৈঠকের বিষয়ে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।’

কাজী রওশন আক্তার বলেন, ‘নারীর খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে খাদ্য ও বিভিন্ন ভাতাসহ তাদের দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের ওপর জোর দেয়া হচ্ছে । এতে হ্রাস পাচ্ছে মাতৃ ও শিশুমৃত্যু হার। জাতীয় উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের উদ্দেশ্যেই জীবনচক্রভিত্তিক সামাজিক সুরক্ষা কৌশল প্রণয়ন করা হয়েছে। অর্থাৎ এ ক্ষেত্রে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গিতেও উত্তরণ ঘটেছে।’

ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, ‘অধিকার নিশ্চিতকরণে আইনি স্বীকৃতির বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খাদ্য নীতির পাশাপাশি খাদ্য অধিকারের আইন খাদ্য ও পুষ্টি অধিকার নিশ্চিতকরণে জোরালো ভূমিকা রাখবে।’

খাদ্য অধিকার আইন বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তাবনা প্রণয়ন কমিটি ও নির্বাচনী ইশতেহারে খাদ্য অধিকার আইনের বিষয়টি অন্তর্ভুক্তির দাবিতে তিনি সংহতি প্রকাশ করেন।

প্রবন্ধ উপস্থাপনে খাদ্য অধিকার আইনের প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরে মহসিন আলী বলেন, খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের উদ্যোগে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিগত জুলাই থেকে ডিসেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত ‘খাদ্য ও পুষ্টি অধিকার ক্যাম্পেইন’বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে। এ ক্যাম্পেইনের অধীনে নির্বাচনের পূর্বে খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়নে সমাজের সর্বস্তরের ৩০ লাখের বেশি মানুষের স্বাক্ষর সংগ্রহের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

এমএ/এনডিএস/জেআইএম

আরও পড়ুন