ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

সেন্টমার্টিনের কিছু অংশ দাবি মিয়ানমারের, কড়া প্রতিবাদ বাংলাদেশের

কূটনৈতিক প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৬:০৪ পিএম, ০৬ অক্টোবর ২০১৮

বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনকে নিজেদের ভূখণ্ডের অংশ হিসেবে উপস্থাপন করেছে প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার। এর প্রতিবাদে ঢাকায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ লুইন ও-কে তলব করে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

শনিবার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল (অবসরপ্রাপ্ত) মো. খুরশেদ আলমের দফতরে মিয়ানমার রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হয়।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, ‘মিয়ানমার ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট ইউনিটের ২০১৫-২০১৮ সালের ম্যাপে আমাদের সেন্টমার্টিন দ্বীপকে তাদের সীমানার অংশ দেখানো হচ্ছে। বিষয়টা বাইরের ম্যাপটা দেখলে বোঝা যায় না। কিন্তু ভেতরে ঢুকলে বিষয়টা স্পষ্ট হয়।’

jagonewsপররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবের কক্ষ থেকে বেরিয়ে আসছেন মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত লুইন উ

‘আমরা মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে এর কড়া প্রতিবাদ করেছি। বলেছি, এটা ঠিক নয়, এটা ঠিক করো।’

‘এ সময় মিয়ানমার রাষ্ট্রদূতের হাতে সেন্টমার্টিন দ্বীপ নিয়ে মালিকানার দাবির বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে একটি কূটনৈতিক পত্র দেয়া হয়’- বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে জানানো হয়, সেন্টমার্টিন বাংলাদেশের অংশ। তার পুঙ্খানুপুঙ্খ প্রমাণও রয়েছে। পাশাপাশি ওই চিঠিতে মিয়ানমারের এমন আপত্তিকর কাজের জবাবও চাওয়া হয়।

সেন্টমার্টিন দ্বীপের কিছু অংশ নিজেদের দাবি করে নতুন করে বিতর্কে জড়ালো মিয়ানমার। এর আগে গত বছর আগস্টে রাখাইনের বেশ কয়েকটি পুলিশ ও সেনাপোস্টে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিরীহ রোহিঙ্গাদের উপর নির্মম অভিযান চালায় দেশটির সেনাবাহিনী। অভিযানের নামে সেখানে হত্যা, ধর্ষণ ও নিপীড়ন চালায় সেনা সদস্যরা।

jagonewsমিয়ানমারের সরকারি দপ্তরের মানচিত্রে একই রঙে সেইন্ট মার্টিন দ্বীপপুঞ্জ

মিয়ানমারের নিপীড়ন থেকে বাঁচতে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মিয়ানমার মুখে সব কথা রাখে কিন্তু কাজের বেলায় কোনো কিছুই করে না।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারকে নিরাপত্তা দিয়েই ফিরিয়ে নিতে হবে।
এদিকে, রোহিঙ্গা ইস্যুর যথাযথ সমাধান না করায় মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচির সম্মানসূচক নাগরিকত্ব কেড়ে নিয়েছে কানাডা। সেন্টমার্টিন দ্বীপ নিয়ে মিয়ানমারের এমন হঠকারী আবদার দু’দেশের মধ্যকার সম্পর্কের তিক্ততা আরও বাড়িয়ে দেবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মিয়ানমারকে জানানো হয়েছে যে, ব্রিটিশ শাসনাধীনে ১৯৩৭ সালে যখন বার্মা ও ভারত ভাগ হয়, তখন সেন্টমার্টিন ভারতে পড়েছিল। ১৯৪৭ সালে যখন ব্রিটিশরা এ অঞ্চল ছেড়ে চলে যায় তখন সেন্টমার্টিনকে পাকিস্তানের অংশ হিসেবে মানচিত্র করা হয়েছে। আর যখন ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে এটি বাংলাদেশে অন্তর্গত।

১৯৭৪ সালে সেন্টমার্টিন দ্বীপপুঞ্জকে বাংলাদেশের ধরে নিয়েই মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা চুক্তি হয়। আর সর্বশেষ ২০১২ সালে আন্তর্জাতিক আদালতেও এর মীমাংসা করা হয়েছে বাংলাদেশের অংশ হিসেবে দেখিয়ে।

সূত্র জানায়, শুধু নিজেদের সরকারি ওয়েব সাইটে আপলোড করা মানচিত্রে সেন্টমার্টিনকে নিজেদের অংশ হিসেবে দেখিয়ে ক্ষান্ত থাকেনি মিয়ানমার। দুটি আন্তর্জাতিক সংস্থাকেও এ মানচিত্র দিয়েছে দেশটি।

জেপি/এমএআর/আরআইপি

আরও পড়ুন