‘কর্মবিরতি হলেও যাত্রী ভোগান্তি ছিল না’
অবরোধের নামে শাহজালাল বিমানবন্দরে গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং সেবাদান থেকে বিরত ছিলেন বিমানের ক্যাজুয়াল শ্রমিকরা। রোববার সকাল ৬টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত মিছিল আর অবরোধে যোগ দেয়া প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক কোনো কাজ করেননি। এই সময়ে বিমানের গ্রাহকসেবা বিভাগের পরিচালক ও সিভিল এভিয়েশনের কর্মকর্তা ও বিমানবন্দর পরিচালকররা তাদের পার্মানেন্ট স্টাফ ও বিভিন্ন সংস্থার জনবল দিয়ে গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং সেবা দিয়ে যান। ফলে যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়নি।
রোববার বিকেলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন আব্দুল্লাহ আল ফারুক এমন দাবি করেন।
আন্দোলন স্থগিতের পর তিনি জাগো নিউজকে বলেন, বিমানবন্দরে কর্মরত বিভিন্ন সংস্থার জনবল আন্তরিকতার সঙ্গে এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে যাত্রীদের ব্যাগেজ টেনেছেন। প্রত্যেকটি ফ্লাইটের ব্যাগেজ ডেলিভারি দিতে আমাদের সর্বোচ্চ ৩০ মিনিট সময় লেগেছে। যা ক্যাজুয়ালদের ক্ষেত্রে আরও বেশি সময় লাগতো।
বিমানের গ্রাহক সেবা বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, সিভিল এভিয়েশন স্টাফ, আনসার, বিমান ক্যাজুয়াল স্টাফ অ্যাসিস্ট্যান্ট, এয়ারপোর্ট সার্ভিসের জিএম এবং গ্রাহক সেবা বিভাগের পরিচালক সবাই মিলে একযোগে কাজ করায় এই অসাধ্য সাধন হয়েছে।
এদিকে বেলা ৩টায় দাবি আদায় না করেই বরাবরের মতো আশ্বস্ত হয়ে বলাকা ছাড়েন ক্যাজুয়াল শ্রমিকরা। ঘোষণার আড়াই ঘণ্টার মধ্যে অবরোধ স্থগিত করেন তারা। একই সঙ্গে পরবর্তী বোর্ড মিটিংয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার আশ্বাস মেনে নিয়েছেন তারা।
রোববার বেলা ৩টায় বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও এ এম মোসাদ্দেক আহমেদের সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছান বিমান সিবিএ সভাপতি মশিকুর রহমান।
এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অস্থায়ী শ্রমিকদের নেতা মোহাম্মদ হানিফের নেতৃত্বে একটি মিছিল সিবিএ কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ শুরু করে বলাকা ভবনের সামনে এসে অবস্থান নেয়। এ সময় সেখানে দেড় সহস্রাধিক শ্রমিক জড়ো হন। সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করবেন বলে ঘোষণা দেন।
উল্লেখ্য, বিমান শ্রমিক লীগ (সিবিএ) ২০০৯ সাল থেকে ক্যাজুয়াল শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। ইতোমধ্যে আরও কয়েকবার আলোচনার কথা বলে এভাবে শ্রমিকদের আন্দোলন ঠেকিয়েছে বিমান প্রশাসন।
এর আগেও দাবি আদায়ে মিছিল, মিটিং, সমাবেশ ছাড়াও বিমানবন্দরে ধর্মঘটও করে সংগঠনটি। সর্বশেষ গত ৪ জানুয়ারি ক্যাজুয়াল শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে আল্টিমেটাম দেয় বিমান শ্রমিক লীগ। ওইদিন বিমানের প্রধান কার্যালয় বলাকা ভবনে আয়োজিত সমাবেশে সিবিএ সভাপতি মশিকুর রহমান ৩১ জানুয়ারির মধ্যে চাকরি স্থায়ী না করলে আন্দোলনে যাওয়ার ডাক দেন। পরবর্তী সময়ে বিমান ম্যানেজমেন্টের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করে সিবিএ।
আরএম/বিএ/জেআইএম