আড়াই বছরে কড়াইল বস্তিতে ৪ বার আগুন
রাজধানীর বনানীর কড়াইল বস্তি। প্রায় প্রতি বছরই এ বস্তির বাসিন্দাদের জন্য আসে একটি বিভীষিকার রাত। যে রাতে ঘুমন্ত বস্তিবাসীর ঘুম ভাঙে আগুনের লেলিহান শিখায়। শনিবার রাতেও এসেছে এমন একটি রাত। এ রাতে এই বস্তিতে ঘটেছে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। ফায়ার সার্ভিসের ৬টি ইউনিট প্রায় আড়াই ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে। তবে এ আগুনে বস্তিবাসীদের কী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি। এই কড়াইল বস্তির এ আগুন এবারই প্রথম নয়। গত আড়াই বছরে কড়াইল বস্তিতে এ নিয়ে চারবার আগুন লাগলো। আর এর তিনবারই লেগেছে রাতে।
পুড়ে যাওয়া জিনিসপত্র উদ্ধার করছেন বাসিন্দারা। ছবিটি শনিবার রাতে কড়াইল বস্তি থেকে তোলা। ছবি- মাহবুব আলম
গত বছরের ভয়াবহ আগুনে কয়েকশ ঘরবাড়ি পুড়ে যায়, ছবিটি গত বছরের
২০১৭ সালের ১৬ মার্চ রাত ৩টায় সর্বশেষ আগুন লাগে এই বস্তিতে। সেসময় ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিট রাতভর চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এর আগে ২০১৬ সালের ৪ ডিসেম্বরে দুপুরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যায় প্রায় পাঁচশ’র বেশি ঘর। গৃহহীন হয় সহস্রাধিক মানুষ। একই বছরের ১৪ মার্চ আগুনে পুড়ে বস্তির অর্ধশত ঘর। আগুনের সময় ছুটোছুটিতে আহত হন দুজন।
স্থানীয় ও বস্তিবাসীরা জানান, গুলশান লেকের দুই তীরে দেড়শ একরের বেশি জমির ওপর বিশাল এলাকা নিয়ে এই বস্তিতে কয়েক লাখ লোকের বসবাস। ঢাকার অভিজাত এলাকা গুলশান-বনানীর বুকের মধ্যে গড়ে ওঠা এই বস্তি পোশাক শ্রমিক, রিকশাচালকসহ ঢাকার নিম্ন আয়ের বহু মানুষের ঠিকানা।
ছবিটি গত বছরের
বস্তির জমির মূল মালিক বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)। তারা আদালতের আদেশ নিয়ে ২০১২ সালে কড়াইলে জমি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা শুরু করে। প্রথম দিনের অভিযানে ৪০০টি ঘর উচ্ছেদ করা গেলেও দ্বিতীয় দিন হাজার হাজার বস্তিবাসী গুলশান-মহাখালী এলাকার সড়কে নেমে ওই এলাকা কার্যত অচল করে দেয়। পরে আর তাদের উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি। বস্তিবাসীর ধারণা, পরিকল্পিতভাবে বারবার আগুন দেয়া হচ্ছে বস্তিতে।
এআর/জেডএ