নদীভাঙন রোধে ১ হাজার ৭৭ কোটি টাকার প্রকল্প
শরীয়তপুরের জাজিরা ও নড়িয়া উপজেলায় নদীভাঙন রোধে এক হাজার ৭৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকার প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার। এটি বাস্তবায়ন করবে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিডেট। এ সংক্রান্ত ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
বুধবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এ প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠকে কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বাস্তবায়নাধীন ‘শরীয়তপুর জেলার জাজিরা ও নড়িয়ায় পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় আট দশমিক ৯০ কিলোমিটার তীর সংরক্ষণ, ৯ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার ড্রেজিং, ০.০৮৯ কিলোমিটার ইন্ড টার্মিনেশন এবং আটটি আরসিসি পাকা ঘাট নির্মাণ কাজ সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে বাস্তবায়নে ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদ দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে এক হাজার ৭৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। এটি বাস্তবায়ন করবে খুলনা শিপয়ার্ড লিমিটেড।
এর আগে গত সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় নদীভাঙন বিষয়ে পূর্বপ্রস্তুতি না নেয়ায় সংশ্লিষ্টদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সূত্র জানায়, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নদীভাঙন কবলিত এলাকার সংসদ সদস্য, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীসহ জড়িতদের উদ্দেশ্যে বলেন, ভাদ্র মাসে নদীতে পানির টান পড়ে। তাই এ সময় নদী ভাঙনের ঘটনা ঘটে। আগে থেকে বোঝা যায় না কোন এলাকায় নদীভাঙন হবে। এরপরও যেসব এলাকা নদীভাঙন কবলিত বলে চিহ্নিত সেসব এলাকায় পূর্ব প্রস্তুতি নেয়া উচিত ছিল। কিন্তু সেরকম কোনো প্রস্তুতি নেয়া হয়নি।
তিনি বলেন, এমনকি নদী ভাঙন বিষয়ে তাকে কেউ জানায়নি। এ জন্য তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্তদের ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য আর্থিক সহায়তা দিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, গত কিছুদিন ধরে শরিয়তপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক নদী ভাঙনের ঘটনা ঘটেছে। শরীয়তপুরে এখনও অব্যাহত রয়েছে পদ্মার ভাঙন। গত দেড় বছরে পদ্মার ভাঙনে নিঃস্ব হয়েছে পাঁচ হাজার ৮১টি পরিবার। ঝুঁকিতে রয়েছে আরও আট হাজার পরিবার। ভাঙনে নড়িয়ার কেদারপুর, মোক্তারের চর ইউনিয়ন ও নড়িয়া পৌরসভা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এ ছাড়া উত্তারাঞ্চলেরও বেশ কয়েকটি এলাকায় নদী ভাঙনে বহু পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব এলাকায় সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ হাজার হাজার ঘরবাড়ি বিলিন হয়ে গেছে। হাজার হাজার পরিবার নিঃস্ব হয়ে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে।
এমইউএইচ/এএইচ/এমএস