ঢাকাসহ তিন জেলায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ৫
রাজধানী ঢাকার রায়েরবাজার, কক্সবাজার ও পাবনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে রায়েরবাজারে দুইজন, কক্সবাজারে দুইজন ও পাবনায় একজন নিহত হয়েছেন।
আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক জসীম উদ্দীন জানিয়েছেন, সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ৩টার দিকে রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে র্যাব-২ এর সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ‘ডাকাত দলের দুই সদস্য’ নিহত হয়েছেন। প্রাথমিকভাবে নিহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক এএসপি মিজানুর রহমান তাকে জানিয়েছেন, রাতে ডাকাতির উদ্দেশ্যে একদল ডাকাত প্রস্তুতি নিচ্ছে খবরে র্যাব সদস্যরা অভিযানে যায়। র্যাব সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। র্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। দু’পক্ষের গুলিবিনিময়ের সময় ডাকাত দলের দুই সদস্য গুলিবিদ্ধ হন। এ ঘটনায় র্যাব-২ এর দুই সদস্য আহত হয়েছেন। এ ছাড়া ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র, গুলি ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাচ্চু মিয়া জানান, সকালে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ বন্দুকযুদ্ধে আহত দুই ডাকাতকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ দুটি মর্গে রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
কক্সবাজার প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার মরিচ্যা বাজার চেকপোস্ট এলাকায় র্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে দুইজন নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন- আবদুস সামাদ (২৭) ও মোহাম্মদ আবু হানিফ (৩০)। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি।
র্যাবের দাবি, নিহতরা মাদক বিক্রেতা। ঘটনাস্থল থেকে এক লাখ ৩০ হাজার পিস ইয়াবা ও দেশি-বিদেশি কয়েকটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে একটি ট্রাকও।
র্যাব-৭ কক্সবাজার ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান জানান, মালবাহী ট্রাকে করে ইয়াবার বিশাল চালান আসছে- এমন খবর পেয়ে ভোরে মরিচ্যা চেকপোস্ট এলাকায় তল্লাশি চালায় র্যাব। র্যাবের তল্লাশি চৌকির কাছাকাছি আসামাত্র কক্সবাজারমুখী একটি মালবাহী ট্রাক থেকে র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। এ সময় আত্মরক্ষার্থে র্যাবও গুলি চালায়। ট্রাক থেকে গুলি করা বন্ধ হলে সেখানে গিয়ে গুলিবিদ্ধ দুটি মরদেহ পাওয়া যায়। এছাড়াও ট্রাক থেকে দুটি দেশীয় তৈরি অস্ত্র, একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ওয়ানশুটার গান, আটট রাউন্ড গুলি ও আট রাউন্ড খালি খোসাও জব্দ করা হয়। দুটি মরদেহ ও উদ্ধার অস্ত্রগুলো উখিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান এই র্যাব কর্মকর্তা।
পাবনা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, পাবনার আতাইকুলায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে কোরবান হোসেন (৩৬) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন পুলিশের চার সদস্য।
পুলিশের দাবি, নিহত কোরবান চরমপন্থী নকশাল দলের আঞ্চলিক নেতা। তিনি আতাইকুলার যাত্রাপুর গ্রামের কিয়ামুদ্দিন প্রামাণিকের ছেলে।
আতাইকুলা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাছুদ রানা জানান, সোমবার রাত দেড়টার দিকে খবর আসে যে আতাইকুলা থানার কৈজরী গ্রামের সোবহানের কাঠাল বাগানে একদল চরমপন্থী সন্ত্রাসী গোপন বৈঠক করছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের একটি দল ওই স্থানে পৌঁছালে পুলিশের উপস্থিতি টেরে পেয়ে সন্ত্রাসীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেলে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে স্থানীয়রা কোরবানের পরিচয় শনাক্ত করেন।
ওসি আরও জানান, এ ঘটনায় পুলিশের চার সদস্য এএসআই মন্টু হোসেন, ফারুক হোসেন, কনস্টেবল আব্দুর রউফ ও শাহিন আলী আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থাল থেকে একটি রিভলবার, ৪ রাউন্ড কার্তুজ, ২টি কার্তুজের খোসা, ২০ পিছ ইয়াবা ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত কোরবানের বিরুদ্ধে আতাইকুলা ও পার্শ্ববর্তী আটঘরিয়া থানায় হত্যা-ডাকাতিসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।
জেইউ/এনএফ/আরএআর/জেআইএম