‘জাতীয় ঐক্য’ গড়ার দাবিগুলো সংবিধান পরিপন্থী
‘জাতীয় ঐক্য’ গড়তে দুই প্রবীণ রাজনীতিবিদ যেসব দাবিগুলো তুলেছেন সেগুলো সংবিধান পরিপন্থী, গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
রোববার সচিবালয়ে নেপালের রাষ্ট্রদূত চোপলাল ভূষালের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এবং ভিয়েতনাম সফরের বিষয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
শনিবার পাঁচ দফা দাবি আদায়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন এবং নয়টি লক্ষ্য বাস্তবায়নে জোটবদ্ধ নির্বাচন, সৎ, যোগ্য ব্যক্তিদের নেতৃত্বে সরকার গঠন করে আইন প্রণয়ন-শাসনকাজ পরিচালনার অঙ্গীকার করে জাতীয় ঐক্য গড়ার ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারার সভাপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘গণফোরামের প্রধান ড. কামাল হোসেন এবং অন্যান্যরা মিলে যে যুক্তফ্রন্ট করতে যাচ্ছে এটাকে স্বাগত, অভিনন্দন জানাই। কারণ বহুদলীয় গণতন্ত্র বাংলাদেশে, তাতে যদি কোনো দল জোট করে, আমরাও জোট করেছি অতীতে। এখনও আমাদের আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোট আছে। বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট আছে। আরেকটা জোট যদি হয় এটাকে আমরা অভিনন্দন জানাই।’
তিনি বলেন, ‘কিন্তু তারা যে প্রস্তাব করেছেন, সেগুলো গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ নির্বাচন হবে বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের অধীনে, সংবিধান অনুসারে, নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তারিখ মতে। নির্বাচনকালীন সরকার দৈনন্দিন কাজ পরিচালনা করবে। নীতিগত বড় কোনো সিদ্ধান্ত তারা নেবেন না এই তিন মাস। নির্বাচনকালীন সরকার নির্বাচন কমিশনকে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে সামগ্রিক সহায়তা দেবে।’
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘এই সংবিধানের বাইরে আমরা যাব না। ড. কামাল হোসেন বা তার সঙ্গে যারা ছিলেন তারা যে বক্তব্য রেখেছেন সেটা সংবিধান পরিপন্থী, সংবিধান সেটা অ্যালাউ করবে না। নির্বাচনকালীন এই সরকার থাকবে না, পার্লামেন্ট থাকবে না। আমাদের সংবিধানের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা কাউকে ছোট করে দেখি না। কিন্তু আমরা চাই নির্বাচনটা অংশগ্রহণমূলক হোক।’
‘অনেকে বলেন ২০১৪ সালের কন্ট্রোভার্সিয়াল ইলেকশন, ড. কামাল হোসেন নিজেও সংসদ সদস্য হয়েছেন, তাকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়নি। বঙ্গবন্ধুর ছেড়ে দেয়া সিটে...যখনই তাকে আমরা নমিনেশন দিয়েছি ১৯৮৬ সালে, ১৯৯১ সালে তিনি হেরেছেন। কোনো নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হননি। আমরা আশা করি, এবার তিনি নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিজয়ী হবেন।’
বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ তোফায়েল বলেন, ‘এদেশের মানুষ তাদের ভালোবাসে যারা দলছুট না। যারা ঘন ঘন দল বদলায়, নীতি বদলায় তাদের মানুষ পছন্দ করে না।’
এই লেভেলে বৈঠক করলে দেশের সম্মান ক্ষুণ্ন হয়
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ছাত্র জীবন থেকে রাজনীতি করি আমি খুব অবাক হয়েছি। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতিসংঘে গিয়ে তিনি বলেছেন, জাতিসংঘের মহাসচিব তাকে দাওয়াত দিয়েছেন। যেটা সঠিক নয়, তিনি দেখা করার জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। জাতিসংঘের মহাসচিব ঘানায়, দেখা করেছেন একেবারে নিচে দিকে সহকারী সেক্রেটারির সঙ্গে। এই লেভেলে সাধারণত আমরা কোনো মিটিং করি না।’
তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের একজন ডেস্ক অফিসারের সঙ্গেও মিটিং করেছেন। এটা প্রেস্টিজিয়াস, এটা একটা দেশের রাজনীতিবিদদের জন্য অপমানজনক বলেই আমি মনে করি। এই লেভেলে হলে আমি বা আমরা যেতাম না। উই নেভার গো।’
‘আন্তর্জাতিক বিশ্বে সবাই গিয়ে নালিশ করতে পারবে কিন্তু নির্বাচন হবে বাংলাদেশে সংবিধান অনুসারে।’
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘বিএনপিকে বলব, নালিশ করতে যান কিন্তু সম্মানিত ব্যক্তি যারা ডিসিশন নেন এমন মানুষের সঙ্গে বৈঠক করেন...অ্যাসিসটেস্ট সেক্রেটারি আর ডেস্ক অফিসার...এভাবে বৈঠক করলে বাংলাদেশের মান-সম্মান ক্ষুণ্ন হয়।’
আরএমএম/জেএইচ/পিআর