এসডিজি বাস্তবায়নে বড় চ্যালেঞ্জ সন্ত্রাসবাদ
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নে চারটি বিষয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে সরকার। এর মধ্যে প্রধান হুমকি সন্ত্রাসবাদ। এটি মোকাবেলা করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।
বৃহস্পতিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মতিঝিলে ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বেসরকারি খাতের ভূমিকা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ। সভার আয়োজন করে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই)।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, অর্থায়ন, অবকাঠামো ও দক্ষ জনশক্তিসহ অন্যান্য চ্যালেঞ্জ থাকলেও সন্ত্রাসবাদ, সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার, গণমাধ্যম ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং সামাজিক মাধ্যমকে সব সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, কিছুদিন আগে ছোট্ট একটি ঘটনা কতটা প্রভাবিত করেছে দেশকে? সেটাকে আমি ছোট করছি না, কিন্তু সেখানে পজেটিভের চেয়ে নেগেটিভ প্রচারণা বেশি ছিল। এমন পরিস্থিতি টেকসয় উন্নয়নে বড় বাঁধা হতে পারে। কী করে এসব মোকাবেলা করা যায়, সেটা বেশি খেয়াল রাখতে হবে।
প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারে বেকার নয় বরং কর্মস্থান বাড়বে উল্লেখ করে আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা এখন স্যাটেলাইটে যুগে এসেছি। এখন সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। যদিও অনেকে মনে করে, উন্নত প্রযুক্তি কর্মসংস্থান কমবে, সেটা ভালো। এমন কথা দেশে কম্পিউটার আসার পরেও বলেছিল। কিন্তু তা না হয়ে কম্পিউটার নতুন নতুন কর্মক্ষেত্র তৈরি করেছে।
দীর্ঘ মেয়াদি বিনিয়োগে একটি স্থিতিশীল ট্যাক্স কাঠামো প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বড় বিনিয়োগকারীরা ৫-১০ বছর মেয়াদি কর কাঠামো চায়। বিষয়টি এনবিআরকে গুরুত্ব দিয়ে দেখার জন্য বলেছি। এ বিষয়ে তারা কাজ করছে। আশা করছি শিগগিরই তারা দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করবে।
বৈঠকে ডিসিসিআইয়ের সভাপতি আবুল কাশেম, সাবেক সভাপতি হোসেন খালেদ, চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম ও মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি নিহাদ কবির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
গোলটেবিলের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ। এ ছাড়া ডিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আসিফ ইব্রাহীমের পরিচালনায় মুক্ত আলোচনায় ব্যবসায়ীক বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।
নাজনীন আহমেদ বলেন, গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশের জিডিপি ব্যয়ের ৭৪ দশমিক ৭ শতাংশের মধ্যে বেসরকারি খাতে হয়েছে ৬৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ। আর বিনিয়োগের মোট ৩০ দশমিক ৫১ শতাংশের মধ্যে বেসরকারি খাতের অবদান ২৩ দশমিক ১ শতাংশ। অর্থাৎ এসডিজি বাস্তবায়নে বেসরকারি খাতের ভূমিকা সব থেকে বেশি।
নিহাদ কবীর বলেন, সরকারি বেসরকারি উভয় খাতের টেকসই উন্নয়নে কর্মসংস্থানমূলক শিক্ষার ভূমিকা রয়েছে। গতানুগতিক শিক্ষার মাধ্যমে তা সম্ভব নয়। এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি মাথায় রেখে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে।
মাহবুবুল আলম বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে বেসরকারি খাতকেও এখন থেকেই সুপরিকল্পিতভাবে কাজ করা দরকার। সে ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের সংগঠনগুলো বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। যদিও কয়েকটি সংগঠন সেভাবেই কাজ শুরু করেছে।
মুক্ত আলোচনায় বেসরকারি খাত সংশ্লিষ্টরা টেকসই উন্নয়নে নানা সুপারিশ করেন। যার মধ্যে, সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, আইনের বাস্তবায়ন, জেলাভিত্তিক অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, প্রবাসীদের ভূমিকা বৃদ্ধি, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত, পরিবেশ বান্ধব অর্থনীতি গড়ে তোলা ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঠিক সেবা নিশ্চিত এবং মানসম্মত অবকাঠামো নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়।
এসআই/এএইচ/পিআর
আরও পড়ুন
সর্বশেষ - জাতীয়
- ১ শাহজালালে লাউঞ্জ চালু করায় প্রশংসা করলেন বিমান উপদেষ্টা
- ২ সংবিধান সংশোধনের একমাত্র অধিকার পার্লামেন্টের: হাসান আরিফ
- ৩ পর্যাপ্ত ও মানসম্পন্ন জলবায়ু অর্থায়নের আহ্বান জানালো বাংলাদেশ
- ৪ ১০ ডিসেম্বর থেকে প্রবাসীদের পাসপোর্ট পৌঁছানো হবে: আইন উপদেষ্টা
- ৫ মনোনয়ন বাণিজ্যে নষ্ট হচ্ছে এমপিদের চরিত্র: সাবেক সিইসি