শরতের রূপ ঝলসে গেছে ভ্যাপসা গরমে
শেফালী, জুঁই, মালতী, টগর, কামিনী সবই ফুটলো। কদম ফুটেছিল আরও আগে। তবুও রূপের ঘাটতি! ভরা ভাদ্র এখন। ঋতু রাজ্যে শরৎ আসে অন্তহীন রূপের খেলা নিয়ে। প্রকৃতি রঙ্গের খেলায় মেতে ওঠে।
বর্ষণ বিধৌত প্রকৃতি। তবে বর্ষার নিদারুণ সর্বনাশাটুকু থাকে না ভাদ্র-আশ্বিনের প্রেমমেলায়। মেঘমুক্ত আকাশ, তাতে সাদা মেঘের খানিক লুকোচুরি। সুউচ্চ শরৎ আকাশে আলো-ছাঁয়ার খেলা। নদী তীরে কাঁশফুলের মনকাড়া ছোঁয়া। প্রভাতে তৃণপল্লবে সূর্যকণার হেয়ালিপনা। শুভ্র জ্যোৎস্নায় মাধবী রাত্রী।
সবই তো এলো! তবে কোথায় যেন শরৎ রূপ ফ্যাকাশে হয়ে আছে। আছে বৈকি! গ্রীষ্মের দাবদাহ শরতের মিষ্টি রোদকে রীতিমত ম্লান করে দিলো এবারে।
বর্ষা বেলাতেই সূর্যের তেজ কমার কথা। কমলো না। তাই বলে শরতেও থাকবে! যেন ঋতু পরিবর্তনের ধারাপথে ঘোর লেগেছে। জৈষ্ঠের সূর্য যেন ভাদ্রে এসে মাথার উপরে খাড়া। অসহনীয় গরমে অতীষ্ট জনজীবন। বৃষ্টি আছে, বৃষ্টি নেই। অথচ গরমের কোনোই কমতি নেই।
ভাদ্র-আশ্বিনে অনবরত বারিধারা শরতের রূপ বাড়ায়। এবার বৃষ্টিও কম। নদীতে পানি বাড়ছে সবে। তবে আকাশে মেঘ নেই। শরতের শেষ বেলায় বৃষ্টির ঘনঘটা থাকবে কিনা তারও কোনো ইঙ্গিত মিলছে না। খনার বচনে আছে ‘উনো বর্ষায় দিনো শীত’। বর্ষার তেজ তো কম ছিল, তবুও তো উষ্ণতা কমছে না।
কাঠফাটা রোদে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে নগরজীবন। আর ভ্যাপসা গরমে যন্ত্রণাময় হয়ে উঠছে রাত্রীযাপনও। গরমের এই বাড়াবাড়িই যেন এবারে শরৎকে খানিক রূপহীন করে রেখেছে।
শরতের চলমান আবহাওয়াকে বৈরীই বললেন ঢাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী। দক্ষিণ বাড্ডার একটি স্কুলের শিক্ষক মোহাম্মদ আলী বলেন, আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটছে, তা সহজেই বোঝা যাচ্ছে। ভাদ্র মাসে গরম থাকে বটে। কিন্তু এভাবে দিনের পর দিন গরম দেখিনি। বৃষ্টি যা হচ্ছে, তাতে গরমের হেরফের হচ্ছে না।
এএসএস/এমআরএম/জেআইএম