সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার নেপথ্যে তথ্যপ্রযুক্তি
অন্যান্য বছরের তুলনায় চলতি বছর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে হজের সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি উভয় ব্যবস্থাপনায় হাজিরা বড় ধরনের কোনো ঝামেলা ছাড়া নির্বিঘ্নে হজ করতে পেরে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। চলতি বছর মোট ১ লাখ ২৭ হাজার ২৯৮ জন হজ করেছেন।
ধর্ম মন্ত্রণালয়, হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব), মক্কা হজ অফিস, সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও সর্বোপরি সৌদি সরকারের সার্বিক সহযোগিতায় হজ ব্যবস্থাপনায় এ সাফল্য এসেছে।
তবে সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার নেপথ্যে গুরত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নিয়োগপ্রাপ্ত আইটি প্রতিষ্ঠান বিজনেস অটোমেশন। এই প্রতিষ্ঠান প্রাক নিবন্ধন, নিবন্ধন, সৌদিতে মোয়াল্লেম নিয়োগ, বাড়িভাড়া, বিমান টিকিট ক্রয় ও ভিসাসহ সব হালনাগাদ তথ্য প্রদানের মাধ্যমে সরকারি ও বেসরকারি হজ এজেন্সির কার্যক্রমকে জবাবদিহির আওতায় আনতে সক্ষম হয়। ধর্মমন্ত্রী ও ধর্মসচিব কম্পিউটারের মাউসে বা মোবাইলে এক ক্লিক করেই হালনাগাদ তথ্য জেনে পরবর্তী প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিতে পেরেছেন।
জানা গেছে, সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে ঢাকা ও মক্কার হজ অফিস সমন্বয় করে কার্যক্রম চালানো হয়। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে একটি অগ্রবর্তী টিম সৌদি আরব যায়। প্রায় ৩৫-৩৬ জন তিনটি উপদলে বিভক্ত হয়ে মক্কা, মদিনা ও জেদ্দায় কাজ শুরু করেন।
১৫ জুলাই থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হয়। এবার সরকারি কিংবা বেসরকারি কোন ফ্লাইটে কতজন চাচ্ছেন, সে তথ্য সৌদি কর্তৃপক্ষকে সরবরাহ করা হয়। ফলে নির্বিঘ্নে ফ্লাইট চালু রাখা যায়।
হজের পাঁচদিনের মূল আনুষ্ঠানিকতায় মক্কা থেকে মিনা, মিনা থেকে আরাফা, আরাফা থেকে মুজদালিফা হয়ে মিনায় তাবুতে অবস্থানকালীন সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের হাজিদের মধ্যে বাংলাদেশিদের পথচলা অর্থাৎ নির্বিঘ্নে তাবু খুঁজে বের করতে ম্যাপ তৈরি করা হয়। হাজিদের তাবুতে পৌঁছে দিতে কাজ করে স্বেচ্ছাসেবকরাও।
সরেজমিন মক্কা হজ অফিস ঘুরে দেখা যায়, আইটি কর্মকর্তারা নিচতলায় হজ সংক্রান্ত কাজে ভীষণ ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। হজের পরে নিখোঁজ হজযাত্রীর সন্ধান, মক্কা থেকে মদিনায় যাতায়াত, ফিরতি ফ্লাইটের হাজিদের আগাম নোটিশ, মৃত হাজির সংখ্যা প্রদান ইত্যাদি তথ্য নিয়মিত দিয়ে যাচ্ছেন তারা। সামগ্রিক হজের কার্যক্রম তুলে ধরে নিয়মিত বুলেটিন প্রকাশ করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ হজ মিশনে কর্মরত আইটি কর্মকর্তা রাশিদুল হাসান লিটন জানান, এবারই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ হজ মেডিকেল সেন্টারে অটোমেটিক প্রেসক্রিপশন চালু করা হয়। সরকারি-বেসরকারি হাজিদের আইডি নম্বর মেশিনে ধরার সঙ্গে সঙ্গে প্রেসক্রিপশন বেরিয়ে আসে। এ ছাড়া সরকারি ১৮টি বাড়িতে টেলিভিশন মনিটরে হালনাগাদ সব কাজ তুলে ধরা হয়।
এমইউ/জেডএ/আরআইপি