‘প্লিজ বাবাকে ফিরিয়ে দিন’
বাবা হারানো দুরন্ত শিশু আদিবা ইসলাম হৃদি। লেখাপড়া করছে সবে মাত্র প্রথম শ্রেণিতে। ছোট্ট বয়সেই মঞ্চে উঠে কথা বলছে। তাও আবার নিজের হারানো বাবাকে ফিরিয়ে আনার দাবিতে। সেই ছোট্ট বেলায় বাবা চলে গেছে কোথায়, হৃদি জানে না। কেউ জানে না।
বাবা পারভেজ রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন, বংশাল থানা ছাত্রদলের নেতা। তার হঠাৎ উধাও হয়ে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন আছে, কিন্তু জবাব নেই। বন্ধু, সহপাঠী আর পরিচিতজনরা বাবার সঙ্গে স্কুলে আসে, ঘুরতে যায় দেখে কান্না পায় হৃদির।
আন্তর্জাতিক গুম দিবসে উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার পারভেজের মতো হঠাৎ নিখোঁজ কয়েকজনের স্বজনকে জড়ো করে বিএনপি। সুপ্রিমকোর্টের শহীদ সফিউর রহমান মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
হৃদির কথায় মঞ্চের সামনে বসা অনেকের চোখেই ভিজেছে। হৃদি ছাড়াও আরও দুই শিশু তাদের বাবার খোঁজে মঞ্চে উঠেছিল। হৃদির মতো তাদেরও একই আকুতি বাবাকে ফিরে পেতে চাই তারা।
হৃদির মতোই বাবাকে ফিরে পাওয়ার আকুতি জানিয়ে কেঁদেছে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ূয়া মো. সাদমান শিহাব আরিয়ানও। তার বাবা খালেদ হোসেনের দেখা নেই পাঁচ বছর ধরে।
আরিয়ান চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলে। বয়সে অনেক ছোট হওয়ায় বড় ডায়াসের সামনে থেকে দেখা যাচ্ছিল না আরিয়ানকে। তাই ছোট একটি চেয়ারে দাঁড় করানো হয় তাকে।
তেজগাঁওয়ের স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা কাওসারের কন্যা লামিয়া আক্তার মীম মঞ্চে উঠে শুরুতেই বলে, ‘আমার বাবা কোথায়? আপনারা তো জানেন আমার বাবা কোথায়। আমার বাবাকে খুঁজে দেন আপনারা। আমার বাবাকে ছাড়া ভালো লাগে না। আপনারা কেন আমার বাবাকে খুঁজে দিচ্ছেন না।’
এই অনুষ্ঠানে প্রিয়জনের ছবি হাতে নিয়ে এসেছিলেন অনেকে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও মির্জা আব্বাস। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমানের সভাপতিত্বে সাবেক ছাত্র নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ঢাকা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, শহিদুল ইসলাম বাবুল, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদ, ডা. সায়ান্ত সাখাওয়াত প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
কেএইচ/এফএইচ/এনএফ/এমএস