ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

আইন-শৃঙ্খলা ও বিচারিক দুর্নীতি উদ্বেগজনক : টিআইবি

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৪:০৫ পিএম, ৩০ আগস্ট ২০১৮

২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে দুর্নীতি না কমায় উদ্বেগ জানিয়েছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

তিনি বলেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দুর্নীতি সবচেয়ে বেশি। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা ও বিচারিক ক্ষেত্রে দুর্নীতি খুবই উদ্বেগের। জবাবদিহিতা ও আইনের শাসন সুপ্রতিষ্ঠিত না থাকায় এ দুর্নীতি হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস ভবনে টিআইবি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘সেবাখাতে দুর্নীতি: জাতীয় খানা জরিপ ২০১৭’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশের সময় তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, দুর্নীতি সবার জন্যই ক্ষতিকর। সবার কাছেই অগ্রহণযোগ্য। এর বোঝা সবাইকেই বহন করতে হয়। বিশেষ করে যারা নিম্ন আয়ের মানুষ তাদের উপর এর বোঝা সবচেয়ে বেশি। সরকারি চাকরিজীবীরাও দুর্নীতির শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবীরা ভাতা উত্তোলনে দুর্নীতির শিকার হয়েছেন।

সম্প্রতি ‘সরকারি চাকরি আইন’ মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে। ওই আইনে ‘দায়িত্ব পালনের সঙ্গে সম্পর্কিত অভিযোগে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোনো সরকারি কর্মচারীকে ফৌজদারি মামলায় গ্রেফতার করা যাবে না’। এমতাবস্থায় কি সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতির ক্ষেত্রে জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে থেকে যাবেন? এমন প্রশ্নে টিআইবি নির্বাহী পরিচালক বলেন, ঈদের আগের দিন মন্ত্রিসভায় এটি অনুমোদন পায়। এরপরই টিআইবি প্রতিবাদ জানিয়েছে। আইনে চোখে সকলে সমান। কিন্তু এ আইন দ্বারা ব্যক্তি কিংবা একটি নির্দিষ্ট পেশার মানুষকে বিশেষ সুবিধা দেয়া হচ্ছে। এ আইনের কারণে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি আরও বাড়বে বলে মনে করি। এ আইন মন্ত্রীসভায় পাসের পর দুদক চেয়ারম্যান যে বক্তব্য দিয়েছেন তারও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। কারণ তিনি কিছু ধারা সংশোধনের কথা বলে পক্ষান্তরে এ আইনকেই সমর্থন করেছেন। তার এমন বক্তব্য আশা করা যায় না।

টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন ও গবেষণা উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, দেশে একই রকম প্রশাসন দীর্ঘ দিন থাকলেই যে দুর্নীতি বাড়বে বা কমবে তা বলা মুশকিল। তবে দুর্নীতি বন্ধে যারা দেশ পরিচালনা করেন তাদের রাজনৈতিক সদিচ্ছা বড় ভূমিকা রাখে। সেটা যদি না থাকে তবে সেবাখাতের কারও জবাবদিহিতা থাকে না। তখন ইচ্ছে করলে তারা ঘুষ ছাড়া সেবা দেয়া বন্ধ রাখবেন। আগে দেশ পরিচালনাকারীদের জবাবদিহিতা দরকার। দেশ ও জনগণের প্রতি তাদের যে অঙ্গিকার তা তাদের মানতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে ঘুষ দেয়া বা দুর্নীতির সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। দুর্নীতির সঙ্গে বসবাস ও দুর্নীতিকে মেনে নেয়ার সংস্কৃতি জাতিগতভাবে আমাদের অমর্যাদাকর। কারণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা শুধু ভূখণ্ড দখল কিংবা লুটপাটের জন্য না। মর্যাদা ও আত্মসম্মান নিয়ে বাঁচতেই মুক্তিযুদ্ধ করতে হয়েছিল। অথচ সেটাই অবহেলিতই থেকে যাচ্ছে।

টিআইবি প্রকাশিত জরিপে, দেশের বিদ্যমান সেবাখাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্থ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা। ২০১৭ সালে সার্বিকভাবে ৬৬.৫ শতাংশ মানুষ সেবাখাতগুলোতে দুর্নীতির শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৭২.৫ শতাংশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, পাসপোর্ট ৬৭.৩ শতাংশ এবং বিআরটিএ ৬৫.৪ শতাংশ দুর্নীতি হয়েছে। ২০১৭ সালে টিআইবি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, স্থানীয় সরকার প্রশাসন, ভূমি, কৃষি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, বিচারিক সেবা, বিদ্যুৎ, ব্যাংকিং, বিআটিএ, কর ও শুল্ক, এনজিও, পাসপোর্ট, বীমা, গ্যাস সেবাখাতে জরিপ করে। জরিপে সর্বোচ্চ দুর্নীতিগ্রস্থ সেবাখাত গুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, দ্বিতীয় পাসপোর্ট, তৃতীয় বিআরটিএ এবং চতুর্থ স্থানে বিচারিক সেবাখাত উঠে এসেছে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপদেষ্টা নির্বাহী ব্যবস্থাপনা পরিষদ ড. সুমাইয়া খায়ের ও রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

জেইউ/এএইচ/জেআইএম

আরও পড়ুন