কলকাকলিতে মুখর শিশুপার্ক
ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিনে শিশুরা ভিড় জমিয়েছে রাজধানীর শাহবাগের শিশু পার্কে। বৃহস্পতিবার শহীদ জিয়া শিশুপার্ক বাচ্চাদের কলকাকলিতে মুখর হয়ে ওঠে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় শিশুপার্ক খুলে দেয়া হয়েছে। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি রাইডের সামনে দীর্ঘ লাইন। রাইডে ওঠার জন্য শিশুদের নিয়ে অপেক্ষা করছেন অভিভাবকেরা।
‘আমাদের দেশটা স্বপ্নপুরী...’ গানের সঙ্গে ঘোরে ‘আনন্দ ঘূর্ণি’। শিশু পার্কে এসে কৃত্রিম ঘোড়ায় চড়ে দোল খাওয়ার সুযোগ কোন শিশুই হাত ছাড়া করে না। অভিভাবকদেরও নিজের শিশুর ‘ঘোড়ায় চড়া শিশু একটি ছবি তুলে নিজের কাছে রাখার বেশ শখ। তাই ‘আনন্দ ঘূর্ণি’র সামনে লম্বা লাইন।
যাত্রাবাড়ী থেকে ৫ বছরের মেয়ে জুঁথিকে নিয়ে এসেছেন বাবা শহিদুল ইসলাম। বলেন, ‘আনন্দ ঘূর্ণির ঘোড়া দেখে মেয়ে বলছে, এটাতে সে চড়বেই। এটাতে না চড়ে অন্য কোথাও যাবে না। তাই রোদের মধ্যেই লাইনে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছি।’
এছাড়া উড়ন্ত বিমানে চড়ার জন্য লাইনটা সবচেয়ে বড়। এই লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন মীর হাজিরবাগ থেকে ১০ বছরের ভাতিজা সোহলকে নিয়ে আসা চাচা আমিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘শিশুদের বিমানে চড়াটা ভীষণ আনন্দের। তাই সবাই উড়ন্ত বিমানে উঠতে চায়। রাইডে চড়তে লাইনে কমপক্ষে আধা ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হবে।’
আনন্দ ঘূর্ণি, উড়ন্ত বিমানে উঠে চমকিত হচ্ছে শিশুরা। ভিন্নতায় বাধভাঙা আনন্দ ভাসিয়ে নিচ্ছে তাদের।
এছাড়া উড়ন্ত নভোযান, ব্যাটারি কার, ফুলদানি আমেজ, ঝুলন্ত চেয়ার, ছোট সোনামনিদের রেলগাড়ি, রোমাঞ্চ চক্রে শিশু ও অভিভাবকদের বেশ ভিড় দেখা গেছে। এসব রাইডে উঠে আনন্দে মেতে উঠছে শিশুরা।
রাইড পরিচালনার দায়িত্বরত কর্মীরা জানান, ছোটমনিদের রেলগাড়িতে এক সঙ্গে ৬০ জন, উড়ন্ত বিমানে ২৪ জন, আনন্দ ঘূর্ণিতে ২৯ জন চড়তে পারে। অবস্থান করতে পারে ৩ থেকে ৪ মিনিট।
বর্তমানে শিশু পার্কে ১০টি রাইড আছে। প্রতিটি রাইডে চড়ার জন্য জনপ্রতি ১০ টাকা করে পরিশোধ করতে হয়। পার্কে প্রবেশ মূল্য ১৫ টাকা।
পার্কের মধ্যে হকার না থাকার কথা থাকলেও অনেক হকার দেখা গেছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (শিশু পার্ক) জাকির হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘পার্কে দর্শক সমাগম মোটামুটি। আজ মেলা চলবে রাত ৮টা পর্যন্ত। আশা করছি আজকেই ২০ হাজারের মতো দর্শক হবে। গত ঈদে দর্শনার্থী ৫০ হাজার পেরিয়েছিল। তবে শিশুপার্কে গড়ে ৪ থেকে ৫ হাজারের মতো দর্শক হয়ে থাকে।’
কিছুদিনের মধ্যে শিশু পার্ক নিয়ে একটি নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তখন অনেক নতুন রাইড যুক্ত হবে। পুরনো কিছু রাইড বাদও দেয়া হবে।’
শিশুপার্কে হকারের উপদ্রুপ নিয়ে উপ-সহকারী প্রকৌশলী বলেন, ‘আমরাও চাই হকারমুক্ত সুন্দর পরিবেশে শিশুরা আনন্দ করবে। কিন্তু হকার নিয়ন্ত্রণে আমরা ব্যর্থ।’ তবে এ বিষয়ে তিনি এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি।
প্রাণ মামা ওয়েফারের পাপেট শো
শিশু পার্কের উত্তর পাশে খোলা জায়গা চার দিনব্যাপী পাপেট (পুতুল) শো’র আয়োজন করেছে প্রাণ মামা ওয়েফার। পাশে রয়েছে প্রাণ মামা ওয়েফার গেম জোন। পার্কে আসা শিশুদের আনন্দ দিতে কিছুক্ষণ পরপরই পুতুলের মাধ্যমে শিশুদের বিনোদন দেয়া হচ্ছে।
পাপেট শো বন্ধ রেখে গেম জোনে শিশুদের বাস্কেটবল ও হাত দিয়ে বোর্ডে ফুটবল খেলার প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হচ্ছে। লেখায় বিজয়ীদের দেয়া হচ্ছে প্রাণ মামা ওয়েফার।
ইভেন্ট সুপারভাইজার আল-আমিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘শিশুদের বিনোদন দিতে বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া পাপেট শো ও গেম চলবে আগামী চারদিন। শিশু পার্কে আসা যে কোন শিশু পাপেট শো দেখতে পারবে। গেমে অংশ নিয়ে বিজয়ী হয়ে মামা ওয়েফার জিতে নিতে পারবে।’
আরএমএম/এমআরএম/পিআর
আরও পড়ুন
সর্বশেষ - জাতীয়
- ১ সব ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
- ২ কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে কয়েদির মৃত্যু
- ৩ সৌদিতে সেবাদানকারী কোম্পানির সঙ্গে হজ এজেন্সিকে চুক্তির নির্দেশ
- ৪ বঙ্গবন্ধু রেল সেতু দিয়ে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলবে মঙ্গলবার
- ৫ পুলিশের দুর্বলতা ছিল বলেই ঘটনা সংঘর্ষের দিকে গেছে: উপদেষ্টা নাহিদ