গরুর সঙ্গে থাকা-খাওয়া
আর মাত্র চারদিন পরই সারাদেশে পালিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ। এ লক্ষ্যে রাজধানীর অস্থায়ী পশুর হাটগুলো ইতোমধ্যে প্রস্তুত হয়ে গেছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসব হাটে কোরবানির পশু আনতে শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা।
হাটে গরু-ছাগল রাখার ব্যবস্থা থাকলেও ব্যবসায়ীদের থাকা-খাওয়ার নির্ধারিত কোনো স্থান নেই। ফলে পশু রাখার স্থানেই নিজেদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে নিয়েছেন তারা।
কোরবানি উপলক্ষে রাজধানীতে যে কয়েকটি স্থানে অস্থায়ী পশুর হাট বসে এরমধ্যে অন্যতম রামপুরা খালের পার্শ্ববর্তী আফতাব নগর। বাড্ডা-রামপুরা-মালিবাগ সড়ক থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার ভিতরের এই হাটে শুক্রবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায় সেখানে গরু-ছাগল নিয়ে এসেছেন কয়েক শ’ ব্যবসায়ী।
যে স্থানে গরু-ছাগল বেঁধে রেখেছেন, সেখানেই নিজেদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন এসব ব্যবসায়ী। এ জন্য তারা পশুর খাবারের পাশাপাশি নিজেদের জন্য চাল-ডালও নিয়ে এসেছেন গ্রামের বাড়ি থেকে। সেই সঙ্গে নিয়ে এসেছেন রান্নার জন্য কেরোসিনের চুলা। পাশাপাশি মাথার ওপর কিছুটা ছায়া তৈরির জন্য এনেছেন পলিথিন।
কুষ্টিয়া থেকে গরু আনা কয়েকজন ব্যবসায়ীকে একটি তাবুর নিচে বসে খাবার খেতে দেখা যায়। সেই তাবুর নিচেই রাখা হয়েছে বেশ কয়েকটি গরু। মো. বাবুল নামে তাদের একজন বলেন, ‘এখানে গরু রাখার ব্যবস্থা থাকলেও আমাদের থাকার জন্য আলাদা কোনো স্থান নেই। তাই এখানেই থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছি।’
তিনি বলেন, ‘গ্রামের বাড়ি থেকে আমরা চাল, ডাল, আলু, লবন, তেলসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে এসেছি। খাবার রান্নার স্টোভও নিয়ে এসেছি। আমরা একসঙ্গে পাঁচজন এসেছি। সবাই মিলেমিশে রান্না করি। তবে বেশিরভাগ সময় খিচুড়ি অথবা আলু ভর্তা দিয়ে ভাত খাওয়া হয়। এতে আমাদের কোনো সমস্যা নেই।’
ইয়াসিন নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরা নয়জন দু’টি ট্রাকে বৃহস্পতিবার বিকেলে ৩৬টি গরু নিয়ে এসেছি। তবে এখনও একটি গরু বিক্রি হয়নি। গরু আনার আগেই আমরা ধরে নিয়েছি ঈদের আগের রাত পর্যন্ত থাকতে হবে। তাই এই কয়দিন নিজেদের খাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে এসেছি। কারণ এখানে হোটেলে খেয়ে আমাদের পোষাবে না।
তিনি বলেন, শুধু খাওয়া নয়, আমরা ঘুমাইও এখানে। তবে রাত অথবা দিন যখনই হোক আমরা সবাই এক সঙ্গে ঘুমাই না। গরুর নিরাপত্তার জন্য সব সময়ই কেউ না কেউ জেগে থাকি।
ঝিনাইদহ থেকে আসা ইমদান নামের একজন বলেন, আফতাব নগরে কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ থেকে প্রায় তিন শতাধিক ব্যবসায়ী গরু নিয়ে এসেছেন। সবাই যেখানে গরু রাখছেন, সেখানেই নিজেদের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। এছাড়া উপায় নেই।
এমএএস/এমএমজেড/এমএস