ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

অস্তিত্ব সংকটে বাংলাদেশে আল-কায়েদা

প্রকাশিত: ০৭:৩২ এএম, ০৯ আগস্ট ২০১৫

প্রবল অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে কথিত ‘আন্তর্জাতিক জিহাদি সংগঠন’ আল-কায়েদা। তাই তারা ভারতীয় উপমহাদেশে তাদের শাখা স্থাপনের ঘোষণা দিয়ে এখন বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। অনলাইনে বাংলাদেশের তরুণদের টার্গেট করে সদস্য করার চেষ্টা করছে।

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) গোয়েন্দা শাখার (ইন্টেলিজেন্স) পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জাগো নিউজকে বলেন, আল-কায়েদা ইতিমধ্যে বাংলাদেশে পরোক্ষভাবে কাজ করছে। বাংলাদেশের কিছু তরুণ অনলাইনে আল-কায়েদার কার্যক্রম দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করছে। তাদের অনুসরণ করছে।

সম্প্রতি রাজধানী থেকে আল-কায়েদা ভারতীয় উপমহাদেশের (একিউআইএস) ১২ সদস্যকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাদের ‘অনেকেই’ আল-কায়েদার সঙ্গে নিজেদের মতাদর্শগত মিল থাকার কথা স্বীকার করেন। তাদের রিমান্ডে নেয়া মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল বাশার জাগো নিউজকে বলেন, তারা আল-কায়েদার মিডিয়া উইংয়ের সঙ্গে অনলাইনে যোগাযোগ করতো। তাদের পোস্ট ও ছবি শেয়ার করতো। তাদের দিয়ে বাংলাদেশে বড় ধরণের নাশকতার পরিকল্পনা করিয়েছিল আল-কায়েদা।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গোয়েন্দা সূত্র জানায়, গত ১০ বছর ধরে বাংলাদেশের কয়েকটি জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করছে। তারা বাংলাদেশে নানা নাশকতা কর্মকাণ্ডের সঙ্গে আল-কায়েদার নাম জড়ানোর প্রস্তাব দেয়। তবে কয়েক দফায় বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠনগুলোর প্রস্তাব নাকচ করে আল-কায়েদা।

সম্প্রতি ‘জিহাদের’ নামে বিশ্বজুড়ে ‘সন্ত্রাস কর্মকাণ্ড’ চালাচ্ছে ইসলামিক স্টেটস বা আইএস। গলা কেটে হত্যার মতো বীভৎস ঘটনার ভিডিও প্রকাশ করছে তারা। ইতিমধ্যে বিশ্বের মানুষের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করেছে আইএস। গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য মতে, অনেক বাংলাদেশি তরুণ যোগ দিচ্ছে সংগঠনটিতে। এ নিয়ে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে আল-কায়েদা।

এবিষয়ে মহানগর গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য বিভাগের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, আল-কায়েদার বিশেষ কিছু নির্ণায়কের (ক্রাইটেরিয়া) ভিত্তিতে কোন দেশে নিজেদের ঘাটি স্থাপন করে থাকে। বাংলাদেশের নির্ণায়ক তাদের সহায়ক না হওয়ায় বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের আমন্ত্রণের পরও তারা বাংলাদেশে আসেনি।

তবে বর্তমানে আইএসকে আদর্শ মেনে জামা’তুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) ও হরকাতুল জিহাদ (হুজি) বাংলাদেশে নিজেদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। এ দেখে টনক নড়েছে আল-কায়েদার। নিজেদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ে যাওয়ার আশংকায় তারা বাংলাদেশের কার্যক্রম শুরু করেছে।

২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে আল-কায়েদা নেতা আয়মান আল জাওয়াহিরি ভারতীয় শাখা গড়ে বাংলাদেশে কাজ করার ঘোষণা দেন। ব্লগার অভিজিত রায় এবং অনন্ত বিজয় দাসকে হত্যার পর আল-কায়েদার উপর দায় চাপিয়ে নিজেদের টুইটার একাউন্টে একটি পোস্ট দেয় আনসারুল্লাহ বাংলা টিম। তবে গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, আল-কায়েদা নয় ব্লগারদের খুন করেছে আনসারুল্লাহ নিজেই, আল-কায়েদাকে খুশি করার জন্য তাদের নাম জুড়ে দিয়েছে। তবে অস্তিত্ব সংকটের কারণে আনসারুল্লাহর দাবির কোন প্রতিবাদ করেনি আল-কায়েদা।

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) গোয়েন্দা শাখার পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জাগো নিউজকে বলেন, আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সঙ্গে আল-কায়েদার প্রত্যক্ষ কোন যোগাযোগ নেই। তবে আনসারুল্লাহ যদি আল-কায়েদার মতাদর্শগত কোন ঘটনা ঘটায় তাহলে আল-কায়েদা সেটা ওন করে। তাই তারা এর প্রতিবাদ করে না।

সম্প্রতি ঢাকায় আল-কায়েদার ১২ জনকে গ্রেফতারের পর ধারণা করা হচ্ছে বাংলাদেশের সীমারেখায় আল-কায়েদা আধিপত্য বিস্তার করছে। এমন প্রশ্নের জবাবে র‌্যাবের গোয়েন্দা প্রধান বলেন, বাংলাদেশে আল কায়েদার কার্যক্রম পরোক্ষ, এখনো তা উৎকণ্ঠার পর্যায়ে যায়নি। কিছু তরুণ অনলাইনে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। আমরা তাদের গ্রেফতার করেছি। কঠোর নজরদারি করা হচ্ছে তাদের।

এআর/এআরএস/পিআর