২২ শিক্ষার্থীকে মুক্তি না দিলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি
পুলিশের হাতে আটক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২ শিক্ষার্থীকে ঈদের আগে মুক্তি না দিলে কঠোর আন্দোলন শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীরা (বেসরকরি বিশ্ববিদ্যালয়)। সোমবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে সংহতি সমাবেশ করে তারা এমন হুঁশিয়াারি দেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ২৮ জুলাই ‘জাবালে নূর’ পরিবহনের ধাক্কায় রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় নিরাপদ সড়ক চাই দাবিতে সারা দেশে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সেই আন্দোলনে সামিল হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের এই স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনে হামলা চালায় ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিকলীগসহ সরকারের পেটুয়া পুলিশবাহিনী।
তার ধারাবাহিকতায় গত ৬ আগস্ট ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়, আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরও কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর সম্মিলিতভাবে হামলা চালায় ছাত্রলীগ ও পুলিশ। শিক্ষার্থীদের প্রায় জিম্মি করে দিনভর দফায় দফায় তাদের ওপর হামলা করা হয়। হামলায় অসংখ্য শিক্ষার্থী আহত হয়, গ্রেফতার করা হয় কয়েকশ শিক্ষার্থীকে এবং থানায় নিয়ে নির্যাতন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের আশপাশের এলাকাগুলোতে এখনো ত্রাসের রাজত্ব বিরাজ করছে, অজ্ঞাতনামা বলে মামলা করা হয়েছে অসংখ্য শিক্ষার্থীর ওপর। অবশেষে ২২ জন শিক্ষার্থীকে রিমান্ডের পর জেলহাজতে পাঠিয়েছে। আন্দোলনে গ্রেফতারকৃত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য শিক্ষার্থীদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানান তারা।
তারা বলেন, শিক্ষার্থীদের নৈতিক আন্দোলনে সরকারের এই ন্যাক্কারজনক ভূমিকার তীব্র নিন্দা জানাই। গ্রেফতারকৃত শিক্ষার্থীদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি ও শিক্ষার্থীদের ওপর করা সমস্ত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। ঈদের আগে শিক্ষার্থীদের মুক্তি না দিলে ঈদের পর শিক্ষার্থীরা জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস পপি এবং চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সংগঠক গোলাম রাব্বানী প্লাবন। শিক্ষার্থীরা ২২ ছাত্রের নিঃশর্ত মুক্তির পাশাপাশি আলোকচিত্রী শহিদুল আলমসহ আন্দোলনে গ্রেফতারকৃত সকলের মুক্তির দাবি জানান। এছাড়াও শিক্ষার্থীরা সমাবেশে সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিবহন সুবিধা এবং সকল ধরনের পরিবহনে শিক্ষার্থীদের জন্যে হাফ-পাসের দাবি জানান।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কাফিল উদ্দিন, অভিমিতা স্বর্ণা ও মশিউর সজীব, ইউল্যাবের শিক্ষার্থী কে এস আর সাইদ। এছাড়া সমাবেশে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়, স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়, গ্রিন বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বেসরকরি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
এমএইচএম/বিএ