ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

১২ ঘণ্টা দাঁড়িয়েও মিলল না এসি টিকিট

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১০:৪০ এএম, ১১ আগস্ট ২০১৮

২০ আগস্টের টিকিট পেতে কমলাপুরে মানুষের দীর্ঘ লাইন। কমলাপুর স্টেশনে চতুর্থ দিনের মতো ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হচ্ছে। আজ শনিবার দেয়া হচ্ছে আগামী ২০ আগস্টের টিকিট। তবে বিগত তিনদিনের তুলনায় আজ টিকিট প্রত্যাশী মানুষের উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি।

শনিবার সকাল ৮টায় কমলাপুর স্টেশনে ২৬টি কাউন্টারে টিকিট বিক্রি শুরু হয়। বিগত দিনগুলোর তুলনায় আজ টিকিট প্রত্যাশীদের উপস্থিতি অনেক বেশি দেখা গেছে। কাউন্টারের সামনে থেকে মানুষের লাইনে বাইরের রাস্তায় গিয়ে ঠেকেছে। গতরাত থেকে এই লাইনে দাঁড়িয়েও অনেকেই এসি টিকিট পাননি বলে অভিযোগ জানিয়েছেন।

সিল্কসিটি ট্রেনের টিকিটের জন্য গত রাত ৯টায় লাইনে দাঁড়িয়ে সারা রাত অপেক্ষার পরও এসি টিকিট পাননি বেসরকারি চাকরিজীবী মিজানুর রহমান।

তিনি বলেন, শত ভোগান্তি নিয়ে ১২ ঘণ্টারও বেশি লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম এসি টিকিটের জন্য। টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই জানিয়ে দেয়া হলো, এসি টিকিট শেষ। ঈদের সময় এত ভিড়ের মধ্যে ছোট বাচ্চা নিয়ে এসি ছাড়া যাওয়া সম্ভব নয়। যে কারণে এত ভোগান্তি সহ্য করে সারা রাত লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম। লাইনের প্রথম দিকে থেকেও যদি এসি টিকিট না পাই তাহলে কারা টিকিট পাচ্ছে।

শুধু মিজানুর রহমানই নয়, এসি টিকিট না পাওয়ার এমন অভিযোগ জানিয়েছেন গতরাত থেকে লাইনে দাঁড়ানো বেশিরভাগ টিকিট প্রত্যাশীই। তারা বলছেন, একজন মানুষ ১২/১৪ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পরও এসি টিকিট পায় না। খুব অল্প সময়ের মধ্যে জানিয়ে দেয়া হয় এসি টিকিট শেষ। যতই কোটা থাকুক, ১০০ জনের মধ্যে লাইনে দাঁড়ানো ৬৫ জনের তো এসি টিকিট পাওয়ার কথা। কিন্তু লাইনের ১০ জনের পরের মানুষও এসি টিকিট পায় না।

train

যে ২৬টি কাউন্টার থেকে টিকিট বিক্রি হচ্ছে তার মধ্যে দু’টি কাউন্টার নারীদের জন্য সংরক্ষিত। এই লাইনে দাঁড়িয়ে কাঙ্ক্ষিত টিকিট পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন নাদিরা আক্তার নামের এক নারী। গত রাতে স্বামীর সঙ্গে এখানে এসে কাউন্টারের সামনে লাইনে দাঁড়িয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, আমার স্বামীর অফিস আছে, যে কারণে আমাকে লাইনে দাঁড় করিয়ে দিয়ে তিনি অফিসে চলে গেছেন। এই কাউন্টার থেকে মহিলাদের টিকিট দেয়া হচ্ছে কিন্তু খুবই ধীর গতিতে। এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়ানো মহিলাদের খুবই ভোগান্তি হচ্ছে। এ ছাড়া সারা রাত ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পরও ফ্রেশ হওয়ার কোনো জায়গা নেই। সব মিলিয়ে খুব ভোগান্তির মধ্যে আমাদের টিকিট কাটতে হয় প্রতিবারই।

এদিকে টিকিট বিক্রির সার্বিক বিষয় নিয়ে কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার সীতাংশু চক্রবর্তী বলেন, সকাল ৮টা থেকে ২৬টি কাউন্টারে অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয়েছে। সকাল থেকেই প্রতিটি কাউন্টারের সামনেই মানুষের উপচেপড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে। যাত্রী চাপ মাথায় রেখে প্রতিটি ট্রেনেই আমরা অতিরিক্ত বগি সংযুক্ত করছি। ঈদের সময় সবাই এসি টিকিট চায়, কিন্তু আমাদের এসি সিট তো সীমিত তাই সবাইকে দেয়া সম্ভব হয় না। প্রতিটি লাইনে মানুষ সুশৃঙ্খলভাবে দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ করছেন। এ ছাড়া ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রিতে যেন কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে জন্য আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীসহ রেলওয়ের নিজস্ব বাহিনী তৎপর রয়েছে।

আজ চতুর্থ দিনের মতো বিক্রি হচ্ছে ঈদের অগ্রিম টিকিট। আগামীকাল রোববার দেয়া হবে ২১ আগস্টের টিকিট। বরাবরের মতো এবারও মোট টিকিটের ৬৫ শতাংশ দেয়া হচ্ছে কাউন্টার থেকে। বাকি ৩৫ শতাংশের ২৫ শতাংশ অনলাইন ও মোবাইলে। ৫ শতাংশ ভিআইপি ছাড়াও রেল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ৫ শতাংশ।

এদিকে সুষ্ঠ ও নিরাপদে ট্রেন চলাচলের সুবিধার্থে ট্রেন পরিচালনার সাথে সম্পৃক্ত রেলওয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হবে। ২১, ২২ আগস্ট মৈত্রী এক্সপ্রেস এবং ২৩ আগস্টে বন্ধন এক্সপ্রেস চলাচল করবে না। একজন যাত্রীকে একসঙ্গে সর্বোচ্চ চারটি টিকিট দেয়া হচ্ছে এবং বিক্রিত টিকিট ফেরত নেয়া হবে না। এদিকে পবিত্র ঈদুল আজহার ৫ দিন আগে ১৮ আগস্ট থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত সব আন্তঃনগর ট্রেন সাপ্তাহিক বন্ধের দিনও চলাচল করবে।

এএস/এনএফ/এমএস

আরও পড়ুন