‘অপেক্ষা করেন, দেখুন কয়লা গায়েব নিয়ে কী ব্যবস্থা আসছে’
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তদন্ত প্রতিবেদন পেলে কয়লা গায়েবের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। কিছুদিন অপেক্ষা করতে বলে তিনি জানান, দেখুন কী ব্যবস্থা আসছে।
জ্বালানি দিবস উদযাপন উপলক্ষে বুধবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সম্প্রতি দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে উত্তোলন করে রাখা এক লাখ ৪২ হাজার টন কয়লা গায়েব হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যার বর্তমান বাজার মূল্য ২২৭ কোটি টাকার বেশি। কয়লা সঙ্কটে দেশের একমাত্র কয়লাভিক্তিক দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া ৫২৫ মেগাওয়াট তাপবিদুৎ কেন্দ্রের উৎপাদনও বন্ধ হয়ে যায়। কয়লা গায়েবের ওই ঘটনায় দেশব্যাপী তোলপাড় ওঠে।
কয়লা গায়েবের জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কয়লা গায়েবের বিষয়ে একটা সাময়িক তদন্ত হয়েছে। বড় আকারে তদন্তের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয থেকে তারা গিয়েছিলেন। তারা এখনও রিপোর্ট পেশ করেননি। আশা করছি, এ সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করবেন। তারপর আমরা দাফতরিকভাবে ব্যবস্থা নেব।’
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে মামলা হয়েছে, সেটারও একটা তদন্ত চলছে। আমরা কোনোভাবে কোনো জায়গায় কোনো গাফিলতিকে প্রশ্রয় দেব না। আমরা কোনো দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেব না। আগামীতে দুর্নীতিমুক্ত জ্বালানি ব্যবস্থা তৈরি করতে চাই।’
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে তদন্ত করা ছাড়াও এক্সপার্ট, শিক্ষক, এক্টিভিস্টরা আছেন যারা এগুলো নিয়ে কাজ করেন, তারা আমাদের সাথে আলোচনা করেছেন। তারা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় বক্তব্য লিখেছেন, সেগুলোও আমরা বিবেচনায় নিয়ে আসছি। সবকিছু মিলে মনে করছি একটা ভালো ও সঠিক রিপোর্ট আমরা পেতে পারি। সেই অনুপাতে ব্যবস্থা নেব।’
নসরুল হামিদ বলেন, ‘ভবিষ্যতের জন্য এটা আমাদের পথ নির্দেশক হিসেবে কাজ করবে। ভবিষ্যতে যাতে এ রকম অঘটনা না ঘটে সেটারও একটা ব্যবস্থা নিচ্ছি। এটা তো হয়ে আসছে গত ১৩ বছর ধরে। শেখ হাসিনার সরকারের সময়েই কিন্তু এ দুর্নীতিগুলো ধরা পড়ছে। এ জায়গাটায় অন্তত কনসিডার করে আপনারা কিছুদিন অপেক্ষা করেন, দেখুন কী ব্যবস্থা নেয়া হয়।’
কয়লা গায়েব হওয়ার তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে কি না -জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অবশ্যই। সবই ট্রান্সপারেন্ট থাকবে।’
গায়েব হওয়া কয়লার মূল অংশটা প্রথম দিকের। ওই সময়ে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে যারা ছিলেন তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে কি না -এমন প্রশ্নের জবাবে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কয়লা একটা কোম্পানির অধীনে কাজ করে। তাদের দেখাশোনার বিষয়টি তাদের নিজস্ব ব্যাপার। মন্ত্রণালয় ওপর থেকে ওভারলুক করতে পারে। পলিসি মেকিংয়ে মন্ত্রণালয় সাপোর্ট দেয়। প্রতি দিনের হিসাব, গড় হিসাব, কত টাকা সেল হলো- এটা তো মন্ত্রণালয়ের দেখার বিষয় নয়, দায়িত্বও নয়। সুতরাং ওখানে টেনে-হিঁচড়ে মন্ত্রণালয়কে ঢুকিয়ে দিলে আরও কমপ্লেক্স তৈরি হবে। আমার মনে হয়, আমরা হারিয়ে যাব ওই জায়গাটা থেকে।’
তিনি বলেন, ‘যারা দায়ী, বিগত দিনের কর্মকর্তারা আছেন ওই কোম্পানিতে তাদেরও যদি গাফিলতি থাকে, অডিট কোম্পানিরগুলোর গাফিলতি যদি থাকে সবাইকে জবাবদিহিতায় আনতে হবে।’
আরএমএম/আরএস/এমএস