‘নতুন সড়ক পরিবহন আইনে জনমতের প্রতিফলন ঘটেনি’
মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত ‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’ এর খসড়ায় ‘চালকের খামখেয়ালিপনায় সংঘটিত দুর্ঘটনা’র জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান না রাখায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি।
আজ সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সঞ্জীব বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে এক বিবৃতিতে এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
তবে এই আইনে চালক ও সহকারীর ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ, কন্ডাক্টর ও সহকারীর লাইসেন্স বাধ্যতামূলককরণ, ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচলের জন্য মালিককে শাস্তির আওতায় আনা এবং দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য ট্রাস্টি বোর্ড গঠনের বিধান রাখায় সরকারকে সাধুবাদ জানিয়েছে জাতীয় কমিটি।
বিবৃতিতে বলা হয়, দুর্ঘটনার ঝুঁকিমুক্ত জনবান্ধব গণপরিবহন ব্যবস্থার জন্য বিভিন্ন অরাজনৈতিক সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যমান ‘মোটরযান অধ্যাদেশ ১৯৮৩’ সংশোধন করে যুগোপযোগী আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়ে আসছে। যার মধ্যে প্রধান দাবি ছিল বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার জন্য দায়ী চালকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় মামলা দায়ের ও সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু অনুমোদিত আইনের খসড়ায় বাস্তবসম্মত এই গণদাবিকে পাশ কাটিয়ে বেপরোয়া চালকের সর্বোচ্চ শাস্তি ‘পাঁচ বছরের জেল ও জরিমানা’র বিধান রাখা হয়েছে।
এছাড়া জাল লাইসেন্সধারী চালকের শাস্তি আগের মতো দুই বছরের জেল রাখা হলেও জরিমানা এক লাখ টাকা বাড়িয়ে তিন লাখ টাকা করা হয়েছে। তবে জাল লাইসেন্সধারী চালক নিয়োগের অপরাধে মালিককে শাস্তির বাইরে রাখা হয়েছে। তাই মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত আইনে জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ সারা দেশে দুর্ঘটনার ঝুঁকিমুক্ত একটি জনবান্ধব গণপরিবহন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অনুমোদিত আইনটির খসড়া সংশোধন করে বেপরোয়া গতিতে কিংবা প্রতিযোগীতামূলকভাবে গাড়ি চালানোর জন্য সংঘটিত দুর্ঘটনায় প্রাণহানির দায়ে চালকের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও জাল লাইসেন্সধারী চালক নিয়োগের জন্য গাড়ির মালিককেও শাস্তির আওতায় আনার বিধান প্রণয়নের দাবি জানান।
গতকাল সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত সাপ্তাহিক বৈঠকে ‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’ এর খসড়া অনুমোদন হয়।
এফএইচএস/বিএ