ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক অটুট রয়েছে : দ্য ইকোনমিস্ট

প্রকাশিত: ০৯:৩৮ এএম, ০৪ অক্টোবর ২০১৪

ভারত-বাংলাদেশ সম্প্রীতির বন্ধন সর্বদাই অটুঁট, অনেকটা সিমেন্টের বন্ধনের মতো বলে মন্তব্য করেছে ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট। সেই সাথে এই দুইদেশের মধ্যকার অনেক অমীমাংসিত সমস্যার কথাও তুলে ধরা হয়েছে এই প্রতিবেদনে।

ইকোনমিস্টের চলতি সংখ্যায় প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে প্রতিবেদক টম ফেলিক্স জোয়েনক মেঘালয় সীমান্তসংলগ্ন বাংলাদেশের ছাতকে অবস্থিত লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট কারখানা ভ্রমণের ছায়াকে আলেখ্য করে বিশ্লেষণ করেছেন দুই দেশের সম্পর্কের স্বরূপ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে দ্রুত নগরায়নের কারণে বাংলাদেশে অব্যাহতভাবে বেড়েছে সিমেন্টের চাহিদা। টান পড়েছে সিমেন্টের কাঁচামালে; যার চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশকে নির্ভর করতে হয় প্রতিবেশী ভারতসহ অন্যান্য দেশের ওপর। সেই চাহিদা মেটাতেই নব্বই দশকের মাঝামাঝি ছাতকে লাফার্জের কারখানায় চুনাপাথর সরবরাহের জন্য ভারত-বাংলাদেশের সীমান্তে একটি আন্তঃসীমান্ত কনভেয়ার বেল্ট নির্মিত হয়। দুই দেশের সীমান্তে অবস্থিত ১৭ কিলোমিটার (১১ মাইল) লম্বা এই কনভেয়ার বেল্ট থেকে ভারত থেকে চুনাপাথর আসে। এটিই বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বড় আন্তঃসীমান্ত কনভেয়ার বেল্ট বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা থেকে সিলেট যাওয়ার পথে সবুজ ধানক্ষেতের মাঝে মাঝে উঁকি দেয় আলিশান ভবন। স্থানীয়ভাবে ‘লন্ডনী’ নামে পরিচিত যুক্তরাজ্য প্রবাসীরা এসব ভবনের মালিক। সিলেট শহরের পশ্চিমদিকে একটি ছোট রাস্তা ধরে এগুলে মেঘালয়ের খাসি পাহাড় নজরে আসে। এই অঞ্চলের বার্ষিক মৌসুমী বৃষ্টিপাতের অধিকাংশই হজম করে এসব পাহাড়। পাশেই অবস্থিত সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের জন্য খ্যাত ভারতের চেরাপুঞ্জি। ওই পবর্তমালা বিধৌত বেশিরভাগ পানিই সুরমা নদী ধরে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে পৌঁছে বঙ্গোপসাগরে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় চায়ের দোকানের বিক্রেতা জানালেন, এখানে (সুরমা নদী) একটি ব্রিজ হলে ভাল হতো। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার আমলে এখানে একটি সেতুর নির্মাণ শুরু হয়েছিল, কিন্তু উত্তরসূরি শেখ হাসিনা এর কাজ শেষ করেননি। ফেরি পার হতে খরচ হয় ২৫ টাকা। ফেরিঘাটে দুই ঘণ্টা অপেক্ষার পর মাত্র ৫ মিনিটেই আমরা অপরপারে পৌঁছলাম। এর ফাঁকেই আবার লাফার্জ সুরমার প্রসঙ্গে ফিরে আসেন প্রতিবেদক। সেখানে উঠে আসে বাংলাদেশে বিদেশী বিনিয়োগের বিপুল সম্ভাবনার কথা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নব্বই দশকের মাঝামাঝি ১২ লাখ টন সিমেন্ট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন প্লান্টটি বানাতে খরচ হয় ২৮ কোটি ডলার। এটাই ছিল তখন বাংলাদেশে সর্বোচ্চ একক সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ। লাফার্জ সুরমা জানিয়েছে, এই কারখানার মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রতিবছর ছয় কোটি ডলারের বৈদেশিক মুদ্রা বেঁচে যাচ্ছে। পাশাপাশি তারা সরকারকে বছরে এক কোটি ডলার কর দিচ্ছে। এছাড়া তৈরি হয়েছে এক হাজারেরও বেশি মানুষের কর্মসংস্থান। বাংলাদেশে প্রতিবছর দেড় কোটি টন সিমেন্ট চাহিদার দশ ভাগের এক ভাগ মেটায় এই কারখানাটি।

লাফার্জের ওই কারখানার চিত্র তুলে ধরার প্রসঙ্গেই ঢাকা ও দিল্লী সাম্প্রতিক কূটনৈতিক তৎপরতার বিষয়টিও তুলে ধরে বলা হয়, যদিও সীমান্ত হত্যা বন্ধ, পানি ভাগাভাগি চুক্তি এবং সিটমহল বিনিময়সহ অনেক অমীমাংসিত ইস্যুতেই ইদানীং নিজেদের মধ্যে আশ্বাসবাণী বিনিময় করছেন দুই দেশের কূটনীতিকরা। কিন্তু অগ্রগতি খুব একটা হয়নি।

এছাড়া ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে চার হাজার এক শ’ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত থাকলেও অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জনের লড়াইয়ে বাংলাদেশ যে আঞ্চলিক সহযোগিতা খুব কমই পেয়েছে এ বিষয়টিও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।