ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

চাকরি ও লাইসেন্স পেতে বাধ্যতামূলক হচ্ছে ‘ডোপ টেস্ট’

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৫:৩২ পিএম, ২৯ জুলাই ২০১৮

সরকারি, বেসরকারি চাকরি এবং যানবাহনের লাইসেন্স পেতে মাদকাসক্ত শনাক্তকরণ ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। এই টেস্টে উত্তীর্ণরাই কেবলমাত্র চাকরি এবং লাইসেন্স পেতে পারবেন। এছাড়াও দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও আকস্মিকভাবে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের ডোপ টেস্ট করা হবে।

রোববার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর আয়োজিত মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসন রোধে প্রণীত ‘অ্যাকশন প্ল্যানে’ বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।

অ্যাকশন প্ল্যানে বলা হয়, চলতি বছরের ডিসেম্বরের ৩০ তারিখের মধ্যে যে কোনো সরকারি/স্বায়ত্তশাসিত/আধা স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য গঠিত মেডিকেল ফিটনেস পরীক্ষায় মাদকাসক্তির টেস্ট চালুর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। একইসঙ্গে ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ও অন্যান্য বেসরকারি চাকরির ক্ষেত্রেও পর্যায়ক্রমে এটি প্রয়োগ করা হবে। এছাড়াও ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তিতে মাদকাসক্তদের অযোগ্য ঘোষণা করা হবে।

আরও বলা হয়, ২০১৯ সালের জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আকস্মিকভাবে ডোপটেস্টের বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ থেকে নির্দেশনা জারি করা হবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা ও সেবা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী বলেন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সময় স্বাস্থ্য পরীক্ষার পাশাপাশি ডোপ টেস্টের জন্য নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়া, বেসরকারি চাকরিতে নিয়োগ কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির সময়েও ডোপ টেস্টের বিষয়ে ভাবা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, এই অ্যাকশন প্ল্যানটি প্রথমে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়। সেখান থেকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে এবং কর্মকর্তাদের ওয়ার্কশপের মাধ্যমে এগুলো বুঝিয়ে দিতে বলা হয়েছে। অল্প সংখ্যক জনবল নিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর খুব ভালো কাজ করছে। তাদের জন্য আরও ৬ হাজার ৭০০ জনবলের চাহিদা জানানো হয়েছে। আশা করছি, শিগগিরই তাদের জনবল সাড়ে ৮ হাজারে দাঁড়াবে। মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান পরিষ্কার। মাদকের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ ম্যাসেজ হচ্ছে, ‘বাংলাদেশ থেকে মাদক শেষ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে।’ আমরা অভিযান চালিয়ে যাবো। পাশাপাশি দেশে মাদকের চাহিদা নিয়ন্ত্রণে আমরা কাজ করছি।

নতুন মাদক আইনের বিষয়ে তিনি বলেন, মাদকের আইনটি ১৯৯০ সালের। এখানে অনেক কিছুই যোগ করা হয়নি। আমরা নতুন আইনের খসড়া চূড়ান্ত করছি। এখানে মাদকের অর্থলগ্নিকারী, শিশা বিক্রিসহ নানা অপরাধ যুক্ত হচ্ছে। আশা করছি, আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের জন্য উঠবে আইনটি।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক জামালউদ্দীন আহমেদ বলেন, অধিদফতর এ পর্যন্ত মাদকাসক্ত ও মাদক ব্যবসায়ে জড়িত মোট ১৩ হাজার জনকে গ্রেফতার করেছে। ১২ হাজারের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। গ্রেফতারের সংখ্যাটা কম মনে হলেও আমাদের যতো সংখ্যক ফোর্স আছে সে অনুযায়ী অনেক বেশি। অধিদফতরের মোট ৫১টি গাড়ি রয়েছে। টেকনাফের মতো একটি সংবেদনশীল জায়গায় আমাদের টহল দেয়ার মতো কোনো গাড়ি নেই। ১০ জন আনসার সদস্যকে নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, আগে এই অধিদফতরকে কেউ চিনত না। এখন আমাদের কাজের জন্য অনেকেই অধিদফতরকে চেনে। কয়েকবছর আগেও আমাদের ২০০টি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির বিপরীতে আমরা ১৭ হাজার আবেদন পাই। সম্প্রতি ২৪২ জনের একটি সার্কুলারে ২ লাখ আবেদন করেছেন।

অ্যাকশন প্ল্যানের বিষয়ে তিনি বলেন, অ্যাকশন প্ল্যানের অনেক পদক্ষেপ ইতোমধ্যে নেয়া হয়েছে। বাকিগুলো পর্যায়ক্রমে নেয়া হবে। আজকের ওয়ার্কশপের মধ্যে পদক্ষেপগুলো নিয়ে বিস্তরভাবে কাজ করা হবে।

অনুষ্ঠানে পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি-অপস) ব্যারিস্টার মাহবুব হোসেন বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে সবাইকে একসঙ্গে লড়তে হবে। কোন বাহিনীর রিসোর্স বেশি, কারও রিসোর্স। আমরা যদি সমন্বিত হয়ে কাজ করি তাহলে কেউ পার পাবে না। পুলিশের পক্ষ থেকে আমরা সবসময় আন্তরিক। যে কোনো প্রয়োজনে অথবা কোনো তথ্য থাকলে আমাদের জানান। আমরা ফোর্স পাঠিয়ে সাহায্য করবো।

মাদক নিয়ন্ত্রণে উত্থাপিত অ্যাকশন প্ল্যানে স্বল্পমেয়াদি (১ বছর), মধ্যমমেয়াদি (২ বছর) ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা (৫ বছর) করা হয়েছে। এতে মাদকাসক্তদের পুনর্বাসন, মাদকের প্রবেশ রোধ, অপারেশন কার্যক্রম প্রণয়নের বিভিন্ন সময়কাল উল্লেখ করা হয়েছে।

এআর/জেএইচ/জেআইএম

আরও পড়ুন