ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

জামায়াত নিবন্ধন পায় পরিস্থিতির কারণে : ব্রিগেডিয়ার সাখাওয়াত

প্রকাশিত: ০৭:১৪ এএম, ০৭ আগস্ট ২০১৫

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে আনতেই জামায়াতকে নিবন্ধন দেয় নির্বাচন কমিশন৷ তা না করলে বিএনপি নির্বাচনে আসতো না৷ ফলে ওয়ান ইলেভেনের পর নির্বাচন সম্ভব হত না এমটিই জানিয়েছেন তৎকালীন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার এম সাখাওয়াত হোসেন৷ সম্প্রতি জার্মান রেডিও ডয়েচ ভেলেকে তিনি এ কথা বলেন।
 
এম সাখাওয়াত বলেন, ওয়ান ইলেভেনের পর, অর্থাৎ ২০০৮ সালে নতুন জনপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী জামায়াতসহ ২৯টি রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশন থেকে নিবন্ধন পায় শর্ত সাপেক্ষে৷ তারা যে খসড়া গঠনতন্ত্র জমা দেয়, তা ছয় মাসের মধ্যে আরপিও এবং বাংলাদেশের সংবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রণয়ন করে কমিশনে জমা দিতে বলা হয়৷ জামায়াত ছাড়া সব রাজনৈতিক দল তা মেনেছে৷ কিন্তু জামায়াত মানেনি৷ পরে জামায়াতকে মোট তিন দফা নোটিশ দেয়া হলেও জামায়াত তাদের গঠনতন্ত্র চাহিদা মতো সংশোধন করেনি।

আরপিও-র ৯০-সি ধারায় রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের শর্তে বলা হয়েছে যে, দলীয় গঠনতন্ত্র বাংলাদেশের সংবিধানের পরিপন্থী হতে পারবে না। গঠনতন্ত্রে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, ভাষা এবং লিঙ্গ ভেদে কোনো বৈষম্য থাকতে পারবে না। সর্বশেষ গত বছরের ১২ই নভেম্বর জামায়াতকে গঠনতন্ত্র সংশোধনের জন্য নির্বাচন কমিশন চিঠি দেয়। তাতে জামায়াতের গঠনতন্ত্র থেকে ‘মৌলিক বিশ্বাস এবং চেতনার ভিত্তিতে ইসলামি সমাজ গঠনের মহান উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর এই গঠনতন্ত্র প্রণীত এবং প্রবর্তিত হইল` শব্দগুচ্ছ বাদ দিতে বলা হয়। এছাড়া, তাদের গঠনতন্ত্রের কয়েকটি ধারাকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা এবং রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী বলে উল্লেখ করা হয়। নির্বাচন কমিশন ২০২০ সালের মধ্যে জামায়াতকে তাদের বিভিন্ন স্তরের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতেও বলে। অথচ জামায়াত এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, ২০০৮ সালে ছয় মাসের জন্য সব রাজনৈতিক দলকে সমান সুযোগ দেয়া হয়েছিল। তবে জামায়াতের গঠনতন্ত্রে গুরুতর সমস্যা ছিল।কিন্তু নির্বাচন কমিশনের লক্ষ্য ছিল ২০০৮ সালের ২৯শে ডিসেম্বরের জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তারা চেয়েছিল সব দলের অংশগ্রহণে যেন একটি সফল এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়। এবং তা সম্ভবও হয়েছে৷ তখন যদি জামায়াতকে নিবন্ধন দেয়া না হতো, তাহলে বিএনপিও নির্বাচনে অংশ নিত না। বলা বাহুল্য, বড় দুটি রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হতো না। তাহলে দেশ আরো বড় ধরণের সংকটে পড়ত৷ তাই পরিস্থিতি বিচেনায় নিয়ে তখন জামায়াতকে নিবন্ধন দেয়।

তিনি আরো বলেন, হাইকোর্ট জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ বলে যে রায় দিয়েছে তা কার্যকর করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। আর নির্বাচন কমিশনের এ ব্যাপারে কোনো তাড়াহুড়ো করা ঠিক হবে না। আদালতের রায়, পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া এবং সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷ কারণ, এটি খুবই স্পর্শকাতর এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বিষয়।

উল্লেখ্য, ১৯৪১ সালে জামায়াত প্রতিষ্ঠার পর মোট তিনবার দলটি নিষিদ্ধ হয়েছে। ১৯৫৯ ও ১৯৬৪ সালে পাকিস্তানে এবং ১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর ১৯৭৯ সালের ২৫শে মে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো জামায়াত প্রকাশ্যে রাজনীতি করার সুযোগ পায়।

এএইচ/এমএস