ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার সংগঠনে বিভক্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৩:৩৭ পিএম, ২৮ জুলাই ২০১৮

বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার সংগঠনে বিভক্ত সৃষ্টি হয়েছে। ক্যাডারভুক্ত প্রগতিশীল মতাদর্শের শিক্ষকরা এক গ্রুপে এবং বিএনপিপন্থী সরকারি কলেজের শিক্ষকরা আরেক গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। সংগঠনের গঠনতন্ত্রকে অমান্য করে রোববার সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন বিএনপিপন্থীরা। অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে বদলিকৃত শিক্ষকদের বদলির প্রতিবাদ জানাতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, প্রশ্নপত্র ফাঁস, নানা ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে গত ২২ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা ক্যাডারের ৩০ কর্মকর্তাকে গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে ঢাকার বিভিন্ন কলেজ ও জেলা পর্যায়ে বদলি করা হয়। নতুন করে আরও কয়েকজন বিতর্কিত শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাকে বদলির জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তালিকা তৈরি হচ্ছে। তারই প্রতিবাদে বিএনপিপন্থী বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা বোর্ডের সচিব শাহিদুল খবির আলাদা একটি গ্রুপ তৈরি করেছেন। তার নেতৃত্বেই রোববার বদলিকৃত কর্মকর্তাদের ফিরিয়ে আনতে ও নতুন বদলি ঠেকাতে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলন করা হবে।

সংগঠনের একাধিক সিনিয়র সদস্য জানান, শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের কল্যাণে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার সমিতি গড়ে তোলা হয়েছে। সংগঠনের একটি গঠনতন্ত্র রয়েছে। সে অনুযায়ী সকল কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে। অথচ সরকারের শেষ সময়ে এসে বিএনপিপন্থী সরকারি কলেজের শিক্ষকরা সমিতির কার্যক্রমকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছেন। আমাদের মূল লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়ে সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হতে যাচ্ছেন।

এ কর্মকর্তারা অভিযোগ করে বলেন, ‘জাতীয়করণ কলেজ শিক্ষকদের ক্যাডারভুক্তকরণের প্রতিবাদে দীর্ঘ দিন ধরে আমরা আন্দোলন করে আসছি। সম্প্রতি আত্মীকরণ নীতিমালা জারি করা হলেও সেখানে জাতীয়করণ হওয়া শিক্ষকদের বিশেষ পরীক্ষার মাধ্যামে শিক্ষা ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। এছাড়াও অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষকে স্বপদে বহাল রাখা হবে বলে এই নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।

তারা বলেন, ‘জাতীয়করণ হওয়া শিক্ষকরা ক্যাডারভুক্ত হবেন- তা আমরা কোনোভাবেই মেনে নেব না। সঠিক প্রক্রিয়া অবলম্বন করে শিক্ষকদের ক্যাডারভুক্ত হতে হবে। কোনো বিশেষ পরীক্ষার মাধ্যমে ক্যাডারভুক্তকরণের বিষয়ে আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি।’

তারা বলেন, ‘দীর্ঘ ২০ বছর শিক্ষকতা করেও বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার শিক্ষকরা অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ হতে পারছেন না, অথচ আত্মীকরণ হওয়া কলেজের অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষরা সহজেই এই পদে আসলেও তাদের স্বপদে রাখা হচ্ছে। এর প্রতিবাদ জানাতে সমিতির পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত হলেও বিএনপিপন্থী শিক্ষকরা তা না করে দুর্নীতিবাজ শিক্ষকদের বদলি ঢেকাতে মাঠে নেমেছেন।’

এদিকে সমিতির সভাপতিকে না জানিয়ে বির্তকিত শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলি পুনর্বহাল ও নতুন করে বদলি না করতে সমিতির সাধারণ সম্পদকের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার (২৬ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে স্বারকলিপি দেয়া হয়েছে। একই ইস্যুতে কাল রোববার তারা সংবাদ সম্মেলন করতে যাচ্ছেন। সভাপতিকে না জানিয়ে যেসব কর্মকাণ্ড করা হচ্ছে, তা সমিতির গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক শিক্ষা কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক আই কে সেলিমুল্লাহ  খোন্দকার জাগো নিউজকে বলেন, ‘সরকারি সিদ্ধান্তে শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলি করা হয়েছে; যেটি চাকরি বিধি মোতাবেক হয়ে থাকে। কিন্তু তাদের বদলি ঢেকাতে তো আমরা আন্দোলন করতে পারি না। এ বিষয়ে আমার সম্মতি না নিয়েই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে নানাভাবে প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘কাল রোববার কেন সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছে তা আমি অবগত নই। এ বিষয়ে আমার কোনো অনুমতিও নেয়া হয়নি।‘এছাড়া সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এ সকল কার্যক্রমের আগে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের সম্মতিক্রমে হওয়ার কথা থাকলেও তার পরিপন্থী কাজ করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তবে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহিদুল খবির জাগো নিউজকে বলেন, ‘সংগঠনের সিদ্ধান্তক্রমে সকল কিছু হচ্ছে। এখানে গ্রুপিংয়ের কিছু নেই। প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারণলিপি প্রদান ও সংবাদ সম্মেলন আয়োজনের বিষয়টি সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত। সেটি আমি বাস্তবায়ন করছি। কেউ যদি জানেন না বলে দাবি করেন তা সত্যি নয়।‘

তিনি বলেন, ‘আমরা বদলি ঢেকাতে নয়, জাতীয়করণ শিক্ষকদের ক্যাডারভুক্ত করার সরকারি সিদ্ধান্তকে বাতিল করার আহ্বান জানাতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছি।‘

এমএইচএম/এসআর/জেআইএম

আরও পড়ুন