কয়লা গায়েবের প্রথম তদন্ত প্রতিবেদন জমা
দিনাজপুরে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির ২৩০ কোটি টাকা মূল্যের এক লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৪ টন কয়লা গায়েবের ঘটনায় পেট্রোবাংলার অনুসন্ধান কমিটি তাদের প্রতিদেন জমা দিয়েছে।
বুধবার বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে এই প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়। সচিবালয়ে প্রতিবেদনটি হাতে পাওয়ার পর বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু সাংবাদিকদের বলেন, প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রতিবেদনে কী আছে জানতে চাইলে এ বিষয়ে কিছু বলতে চাননি প্রতিমন্ত্রী। কয়লা উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনা তদন্তে পেট্রোবাংলার পরিচালক কামরুজ্জামানকে প্রধান করে শুক্রবার তিন সদস্যের এই কমিটি গঠন করা হয়েছিল।
এদিকে কয়লা কেলেঙ্কারির ঘটনায় কোল মাইনিং কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ১৯ জনকে আসামি করে দুর্নীতি দমন আইনে অভিযোগ দায়ের করেছে খনি কর্তৃপক্ষ। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আনিছুর রহমান বাদী হয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতে পার্বতীপুর মডেল থানায় এ অভিযোগ দায়ের করেন।
এ ছাড়া বড় পুকুরিয়ার চার কর্মকর্তার দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তারা হলেন, কোল মাইনের এমডি হাবিব খুরশিদ আহমেদ, জিএম (প্রশাসন) আবুল কাশেম প্রধানিয়া, জিএম (কোল মাইনিং) আবু তাহের মোহাম্মদ নুরুজ্জামান চৌধুরী, ডিজিএম (স্টোর) একে এম খাদেমুল ইসলাম।
দুদকের উপ-পরিচালক শামছুল আলম ইমিগ্রেশন পুলিশকে লেখা এক চিঠির মাধ্যমে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। দুদকের পরিচালক (গণসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বড়পুকুরিয়া খনির কোল ইয়ার্ড থেকে প্রায় এক লাখ ৪২ হাজার টন কয়লা গায়েব হওয়ার ঘটনায় দুদকের তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি খনি এলাকা পরিদর্শন ও অফিসিয়াল কাগজপত্র সংগ্রহ করে।
উল্লেখ্য, বড়পুকুরিয়া খনির ওপর নির্ভর করে খনির পার্শ্বে কয়লাভিত্তিক ৫২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রটি গড়ে তোলা হয়। বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে ২৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি ও ১২৫ মেগাওয়াট করে দুটি ইউনিট রয়েছে। কেন্দ্রটি পূর্ণ উৎপাদনে থাকলে প্রতিদিন গড়ে ৫ হাজার ২০০ টন কয়লার প্রয়োজন হয়। ১২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার ১নং ইউনিটটি বড় ধরনের (জেনারেল ওভারহোলিং) মেরামতের জন্য কয়েকমাস ধরে বন্ধ রয়েছে। ২নং ইউনিটটি কয়লা সংকটের কারণে গত ২৯ জুন বন্ধ করে দেয়া হয়। কয়লা সংকটের কারণে ২৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৩নং ইউনিটটি কিছুদিন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চললেও অবশেষে সেটিও বন্ধ রাখা হয়েছে।
এমইউএইচ/জেডএ/জেআইএম