ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

‘পিঁড়ির আঘাতে ফুফু ও শ্বাসরোধে দাদিকে হত্যা করে মুশফিকুর’

নিজস্ব প্রতিবেদক | চট্টগ্রাম | প্রকাশিত: ১১:১৫ এএম, ২৫ জুলাই ২০১৮

বাবা মারা যাওয়ার পর মা তার আপন চাচার সঙ্গে বিয়ে বসেন, কিন্তু সেই ঘরে ঠাঁই হয়নি মুশফিকুরের। ছোটবেলা থেকে ফুফু মেহেরুন্নেছা ও দাদি মনোয়ারা বেগমের হাতে লালিত-পালিত হন। টাকা-পয়সা নিয়ে বিরোধের জেরে সেই প্রতিপালকদের একজনকে পিঁড়ির আঘাতে ও অন্যজনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মুশফিকুর।

মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সালেম মোহাম্মদ নোমানের আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এমন তথ্য চট্টগ্রাম মা-মেয়ে হত্যায় গ্রেফতার মুশফিকুর।

ঘাতক মুশফিকুর রহিম ব্যাপ্তী (৩০) প্রয়াত মতিউর রহমানের ছেলে। মুশফিকুরের বাবা নিহত মনোয়ারা বেগমের দ্বিতীয় ছেলে। দুই ভাইয়ের মধ্যে মুশফিকুর বড়। তার ছোট ভাই ঢাকায় থাকেন।

চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. কামরুজ্জামান জাগো নিউজকে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার (২৩ জুলাই) নগরের মুরাদপুর এলাকা থেকে মুশফিকুরকে গ্রেফতার করা হয়ে। পরে মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) বিকেলে দাদি ও ফুপুকে হত্যার দায় স্বীকার করে মুশফিকুর চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আবু সালেম মো. নোমানের আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

ctg-mader2

আদালতে দেয়া জবানবন্দির বরাতে তিনি জাগো নিউজকে জানান, গ্রেফতার মুশফিকুর হত্যাকাণ্ডের শিকার মনোয়ারা বেগমের নাতি। পিতৃহারা মুশফিকুরকে জন্মের পর থেকে দাদি মনোয়ারা ও ফুফু মেহেরুন্নেছা লালনপালন করেন। টাকা-পয়সা নিয়ে বিরোধের জেরে মুশফিকুর প্রথমে মেহেরুন্নেছা এবং পরে মনোয়ারাকে খুন করে লাশ পানির ট্যাংকে ফেলে দেন।

জবানবন্দিতে মুশফিকুর জানান, নিজেদের কাছে লালিত-পালিত হওয়ায় ফুফু মেহেরুন্নেছা ও দাদি মনোয়ারা বেগম তাদের সব টাকা-পয়সা এবং খুলশি এলাকার বাড়িও মুশফিকুরের নামে লিখে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু দেড় বছর আগে মুশফিকুর ফুপু ও দাদির অজ্ঞাতে বিয়ে করেন। তখন মনোমালিন্য হলে তাকে ঘর থেকে বের করে দেয়া হয়। এরপর থেকে নগরীর মুরাদপুরে স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন তিনি।

সম্প্রতি মুশফিকুর রহিম ব্যাপ্তীর ব্যবসায় লোকসান হয়। ঘটনার দিন ব্যবসায় টাকা খাটানোর জন্য ফুফু শাহ মেহেরুন নেসা বেগমের কাছে টাকা চান তিনি। কিন্তু ফুফু শাহ মেহেরুন নেসা বেগম তাকে টাকা দিতে রাজি হননি। পরে মুশফিকুর রহিম নিজে আলমারি ভেঙে ব্যাংকের চেক বই বের করেন এবং চেকে ফুফু শাহ মেহেরুন নেসা বেগমকে স্বাক্ষর করতে বললে এতে রাজি হননি তিনি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বাড়িতে থাকা বসার পিঁড়ি দিয়ে ফুফু মেহেরুন নেসাকে আঘাত করেন মুশফিকুর। মেহেরুন্নেছা চিৎকার দিয়ে লুটিয়ে পড়েন। এরপর গলায় কাপড় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে মুশফিকুর। পরে এ ঘটনা দেখে ফেলায় দাদি মনোয়ারা বেগমকেও শ্বাসরোধে করে হত্যা করেন তিনি। পরে দুইজনের মরদেহ বাড়ির ভেতরে থাকা পানির রিজার্ভারে ফেলে দেন।

গত ১৫ জুলাই নগরীর খুলশী থানার আমবাগান এলাকায় ফ্লোরাপাশ রোডে একটি নির্মাণাধীন ভবনের ভূগর্ভস্থ পানির ট্যাংক থেকে ৯৭ বছর বয়সী মা মনোয়ারা বেগম এবং তার ৬৭ বছর বয়সী মেয়ে মেহেরুন্নেসার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

এই ঘটনায় মনোয়ারা বেগমের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে খুলশী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। ঘটনার পর পুলিশ মুশফিকুর ও তার দোকানের কর্মচারী ইমনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছিল।

এমবিআর/পিআর

আরও পড়ুন