মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আইসিসির রুলিং প্রত্যাশা বাংলাদেশের
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের বলপূর্বক অনুপ্রবেশ করানো হয়েছে। এ কারণে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আইসিসির (ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট) কাছে রুলিং প্রত্যাশা করে বাংলাদেশ।
সক্রিয় সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে অভিপ্রায় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, মিয়ানমার আইসিসির সদস্যভুক্ত নয় কিন্তু বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই এ সংক্রান্ত প্রাসঙ্গিক তথ্যাদি আইসিসির প্রি- ট্রায়াল চেম্বার -১ এ উপস্থাপন করেছে। আইসিসির ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে রোম সনদের বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সবসময় পাশে থেকে সমর্থন অব্যাহত রাখবে।
মঙ্গলবার নেদারল্যান্ডসর হেগে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টে ‘এনডিউরিং ভেল্যু অব দ্যা রোম স্ট্যাটিউট টু হিউম্যানিটি’ শীর্ষক সিম্পোজিয়ামে বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
স্পিকার বলেন, সম্প্রতি মিয়ানমার কর্তৃক একটি সমৃদ্ধ ও ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিকে ধ্বংস করে দেয়ার মতো হৃদয়বিদারক ঘটনা প্রত্যক্ষ করল বিশ্ববাসী। গত ২৫ আগস্টের পর থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়েছে- যার বেশিরভাগই শিশু ও নারী। জাতিসংঘ ও জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন এ ঘটনাটিকে জাতিগত নিধন ও গণহত্যা হিসেবে চিহ্নিত করে বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করে।
তিনি বলেন, এখন বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের শান্তিপূর্ণ ও স্থায়ী প্রত্যাবাসনে প্রয়োজন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অব্যাহত ও কার্যকর ভূমিকা।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ সর্বজনীন রোম সনদের গুরুত্বকে স্বীকার করে। আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের সব লক্ষ্য অর্জনে অব্যাহতভাবে সমর্থন করে যাচ্ছে। অন্যায়, অবিচার ও বৈষম্যহীন বিশ্ব গড়তে বাংলাদেশ দৃঢ়প্রত্যয়ী। অপরাধীদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে বিশ্ববাসীর সঙ্গে বাংলাদেশ সহযাত্রী হবে।
স্পিকার বলেন, এই সিম্পোজিয়াম কেবলই উৎসব নয়—বরং মানবতা লঙ্ঘনীয় অপরাধের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্লাটফরম।
‘বাংলাদেশ গর্বিত- কারণ আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত সৃষ্টিতে এবং রোম সনদ গ্রহণের সূচনালগ্নে প্রচার-প্রচারণায় বাংলাদেশ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। সব প্রকার বিচারহীনতা, যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ অঙ্গীকারাবদ্ধ’,- বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে রোম সনদের প্রেসিডেন্ট ও-গোঁ কোয়ান, ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টের (আইসিসি) প্রেসিডেন্ট চিলি ইবোই-ওসুজি এবং আইসিসির প্রসিকিউটর ফাতো বেনসৌদা বক্তব্য দেন।
এইচএস/জেডএ/এমএস