ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

অবশেষে মায়ের ছোঁয়া পেল গুলিবিদ্ধ নবজাতক

প্রকাশিত: ০৪:০৯ পিএম, ০৫ আগস্ট ২০১৫

বাঙালি কোনো নারীকে যদি এমন প্রশ্ন করা হয় ‘আপনার জীবনের অন্যতম সেরা মুহূর্ত কোনটি’? নিঃসন্দেহে ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সবাই বলবেন গর্ভজাত সন্তান প্রসব করার পর তাকে প্রথমবারের মতো বুকে জড়িয়ে ধরার মুহূর্তটি জীবনের অন্যতম স্মরণীয় মুহূর্ত। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুসারে সন্তান প্রসবের কিছুক্ষণের মধ্যেই নবজাতককে মায়ের কোলে দেয়া হয়। এ সময় মায়েরা নবজাতক শিশুকে পরম স্নেহে বুকে টেনে উষ্ণ ছোঁয়া দেয়ার পাশাাপাশি বুকের শাল দুধ (শিশুর প্রথম টিকা) খাওয়ান।

কিন্তু মাগুরার নাজমা বেগম বড়ই হতভাগিনী মা। গর্ভে গুলিবিদ্ধ নবজাতককে জন্মের পর দেখার সুযোগ পাননি তিনি। ১৩ দিন পর অর্থাৎ ১৪ দিনের দিন কোলে নিতে পারলেন পৃথিবীতে আসার আগেই গুলির আঘাতে আহত শিশু সন্তানকে। যদিও দুদিন আগে কয়েক মুহূর্তের জন্য মুখদর্শন করতে পারলেও কোলে তুলে নিতে পারেননি তিনি।

/বুধবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে নাজমা বেগমের জন্য এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। প্রথমবারের মতো গুলিবিদ্ধ নবজাতক সন্তানকে বুকে জড়িয়ে ধরার সুযোগ পেলেন এই হতভাগিনী মা। পরম স্নেহে আলতো হাতে কোলে তুলে বুকে জড়িয়ে ধরলেন তিনি।

শিশু সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. কানিজ হাসিনা শিউলী জাগো নিউজকে জানান, আজ (বুধবার) দুপুর পৌনে ২টায় গাইনি অ্যান্ড অবস্ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন নাজমা বেগমকে নিউনেটাল আইসিইউতে ডেকে আনা হয়। উপস্থিত চিকিৎসকরা সন্তানকে কোলে তুলে নিতে বললে কিছুক্ষণের জন্য হতবাক হয়ে চিকিৎসক-নার্সদের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকেন নাজমা।

তিনি আরো জানান, কয়েক সেকেন্ড পর বিস্ময় সামলে উঠে নাজমা বেগম খুব সতর্কতার সঙ্গে আলতো করে সন্তানকে কোলে তুলে নেন। কিছুটা সময় ধরে বুকে জড়িয়ে ধরে রাখেন। এ সময় চিকিৎসকরা সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়াতে বলে একটু দূরে সরে দুধ খাওয়াতে চেষ্টা করতে থাকেন। এ সময় প্রায় আধ ঘণ্টা পর্যন্ত নবজাতককে নাজমা বেগমের কাছে রাখা হয়।

ডা. শিউলী জানান, নবজাতকের শারীরিক অবস্থা আগের তুলনায় উন্নত হয়েছে। রক্ত পরীক্ষা না করা হলেও বিলুরুবিনের মাত্রা কমছে বলে মনে হচ্ছে। আজ (বুধবার) অস্ত্রোপচারের সাতদিন পার হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো প্রকার ইনফেকশন হয়নি। আগামী ৩/৪ দিনের মধ্যে অস্ত্রোপচারের সেলাই কাটা হবে। অস্ত্রোপচারে নবজাতকের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ২১টি সেলাই পড়েছে। সকালে তার ওজন ছিল এক হাজার ৮শ’ ৫৫ গ্রাম।

মেডিকেল বোর্ডের বিশেষজ্ঞ  চিকিৎসকরা নিয়মিত তার খোঁজ খবর রাখছেন এবং প্রয়োজন অনুসারে চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন। শারীরিক অবস্থা আগের তুলনায় উন্নতি হলেও শিশুটি এখনো শঙ্কামুক্ত নয় বলে জানান শিশু সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. কানিজ হাসিনা শিউলী।

এমইউ/আরএস/আরআইপি