আল্লাহকে রাজি-খুশি করতে যাচ্ছি, মৃত্যু হবে পরম সৌভাগ্যের
অবসরপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা মো. ইমাম হুসাইন। কর্মজীবন শেষে বেশ কয়েক বছর ধরেই অবসর জীবন-যাপন করছেন। চাকরি জীবনেই ইচ্ছা ছিল হজে যাবেন। চাকরি জীবনে সেই সুযোগ না আসলেও জীবনের শেষ অর্ধে সৌদির পথে পাড়ি জমাচ্ছেন কুমিল্লার এ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি।
মেয়ে হুসনে আরা বেগমকে সঙ্গে নিয়ে সৌদিতে পবিত্র হজ পালন করতে যাওয়ার উদ্দেশে তিনি অবস্থান করছেন আশকোনার হজক্যাম্পে। শনিবার হজক্যাম্পেই জাগো নিউজের সঙ্গে কথা হয় মো. ইমাম হুসাইনের।
ইমাম হুসাইন বলেন, চাকরি জীবনেই হজে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু তখন সুযোগ হয়নি। এখন অবসর জীবনে এসেই হজে যাওয়ার সৌভাগ্য হচ্ছে।
তিনি বলেন, আল্লাহর নামে হজে যাচ্ছি। দোয়া করবেন যেন হজ কবুল হয়। ভুলত্রুটি নিয়েই মানুষের জীবন। জীবনে হয় তো অনেক ভুলত্রুটি হয়েছে। জেনে, না জেনে হয় তো গুনাহর কাজও করেছি। এখন মহান আল্লাহর কাছে সব অপরাধের ক্ষমা চায়। দোয়া করবেন আল্লাহ যেন সব গুনাহ থেকে মুক্ত রাখেন।
তিনি আরও বলেন, হজে গিয়ে যদি সৌদিতেই মৃত্যু হয়, সেটা হবে পরম সৌভাগ্যের। এমন সৌভাগ্য সবার হয় না। ওই (সৌদি আরব) পবিত্র মাটিতে দাফন-কাফন হোক এটি প্রতিটি মুসলমানই চায়। আমিও এর ব্যতিক্রম না। আল্লাহ যদি কপালে লিখে রাখেন তাহলে হজ পালন করা অবস্থায় সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করবো।
ধর্মপ্রাণ এ মুসল্লি বলেন, হজ পলন অবস্থায় কারও মৃত্যু হলে তার মৃতদেহ আর দেশে ফিরিয়ে দেয়া হয় না। সৌদির পবিত্র মাটিতেই তার দাফনের ব্যবস্থা করা হয়। ওই মাটিতেই প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) শায়িত আছেন।
উল্লেখ্য, মক্কা, মিনা ও মুজদালিফায় অবস্থানরত কোনো হজযাত্রী মারা গেলে তার জানাজা হয় মসজিদুল হারামে। মদিনায় মারা গেলে তার নামাজের জানাজা হয় মসজিদে নববীতে। কেউ জেদ্দায় মারা গেলে জানাজা হয় জেদ্দায়। মরদেহের গোসল করানো, কাফন পরানো, জানাজা পড়ানো ও দাফন করাসহ যাবতীয় কাজ সৌদির নির্দিষ্ট বিভাগ করে থাকে।
মসজিদুল হারামের পূর্বদিকে অবস্থিত মক্কা শরিফের একটি বিখ্যাত কবরস্থান জান্নাতুল মোয়াল্লা। এই কবরস্থানের কোনো কবর বাঁধানো নয়, নেই কোনো কবরে নামফলক। সেখানে অনেক সাহাবির কবর রয়েছে। আছে নবী করিম (সা.)- এর স্ত্রীদের কবর। আগে হজ করতে এসে কেউ মক্কায় মারা গেলে এখানে কবর দেয়া হতো। এখন স্থান সংকুলান না হওয়ায় ভিন্ন কবরস্থানে দাফন করা হয়।
পবিত্র মক্কার রুশাইফায় রয়েছে লাশের গোসল ও কাফনের ব্যবস্থা। হজ পালনকারীদের লাশ বহনের জন্য সরকারি গাড়ির ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে মৃত ব্যক্তির ওয়ারিশের কোনো কিছু করতে হয় না।
মসজিদে হারামে জানাজার জন্য লাশ গাড়িতে করে কাবা শরিফের দক্ষিণে নবী করিম (সা.)-এর জন্মস্থানের পাশে বাবে ইসমাইলের কাছে রাখা হয়। ফরজ নামাজের পর ইমাম সাহেব লাশ রাখার স্থানে এসে জানাজার নামাজ পড়ান।
আরএম/এমএএস/এএইচ/জেআইএম