ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

রাষ্ট্রায়ত্ত শ্রমিকদের মজুরি বেড়ে দ্বিগুণ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০২:২২ পিএম, ০২ জুলাই ২০১৮

রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পের শ্রমিকদের জন্য মজুরি বেড়ে দ্বিগুণ হলো। মজুরি সর্বনিম্ন ৮ হাজার ৩০০ টাকা ও সর্বোচ্চ ১১ হাজার ২০০ টাকা নির্ধারণ করে রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পের শ্রমিকদের জন্য নতুন মজুরি কাঠামো অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা।

সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশন-২০১৫’ এর সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকদের মজুরি স্কেল ও ভাতা অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘সরকারি কর্মচারীদের ২০১৫ সালের বেতন স্কেলের সাথে সামঞ্জস্যতা রেখে এটা মজুরি স্কেল-২০১৫ নামে অভিহিত করা হয়েছে। মজুরি স্কেল-২০১০ এ যেটা আছে সেটাকে প্রায় শতভাগ বৃদ্ধি করে এটা করা হয়েছে।’

নতুন মজুরি স্কেলে ১৬টি গ্রেড রয়েছে। নতুন মজুরি ২০১৫ সালের ১ জুলাই ও ভাতা ২০১৬ সালের ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে বলে জানান শফিউল আলম।

একই সঙ্গে ‘পণ্য উৎপাদনশীল রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প প্রতিষ্ঠান শ্রমিক (চাকরির শর্তাবলী) আইন, ২০১৮’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

Mojuri

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘সময়ে সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত শ্রমিকদের মজুরি-কাঠামো করার জন্য মজুরি কমিশন করা হয়। মজুরি কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে তাদের স্কেল নির্ধারণ করা হয়। আগের মজুরি স্কেল ছিল ২০১০ সালের। সেটা পরিবর্তন করার জন্য কমিশন করা হয়।’

সর্বশেষ ‘জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশন ২০১০’-এ রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পের শ্রমিকদের মজুরি প্রায় ৭০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল। ওই সময় সর্বোচ্চ মজুরি ৫ হাজার ৬০০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ৪ হাজার ১৫০ টাকা নির্ধারণ করে মজুরি কাঠামো ঠিক করা হয়েছিল।

ভাতা

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘বাড়ি ভাড়া মূল মজুরির ৫০ শতাংশ, চিকিৎসা ভাতা এক হাজার ৫০০ টাকা, যাতায়াত ভাতা ২০০ টাকা, ধোলাই ভাতা ১০০ টাকা, উৎসব ভাতা ২ মাসের মজুরির সমান। ছুটি নগদায়ন বছরে অর্জিত ছুটির ৫০ শতাংশ বা অবসরকালীন ১৮ মাসের মূল বেতনের ল্যাম্প-গ্র্যান্ট, কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড মূল বেতনের ১০ শতাংশ, টিফিন ভাতা ২০০ টাকা।’

শফিউল আলম বলেন, ‘মজুরি কাঠামো ২০০৯-১০ এর মতো প্রতি বছর চাকরির জন্য ২ মাসের মূল মজুরির গ্রাচুইটি যেটা, মূল মজুরির ৩০ শতাংশ তবে সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকা পাহাড়ি ভাতা (যারা পাহাড়ি অঞ্চলে কাজ করবে)।’

রাষ্ট্রায়ত্ত শ্রমিকরা মূল মজুরির ১০ শতাংশ প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা রুটেরিং শিফট ডিউটি ভাতা, প্রতি রাতে প্রতি ঘণ্টা ১৫ টাকা হারে সর্বোচ্চ আট ঘণ্টা নাইট শিফট ডিউটি ভাতা পাবেন। এছাড়া ঝুঁকি ভাতা মাসিক ৪০০ টাকা, প্রতি বছর মার্চ মাসে আহরিত মূল মজুরির ২০ শতাংশ হারে নববর্ষ ভাতা পাবেন বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

তিনি বলেন, ‘আগে যে সুবিধাগুলো ছিল সেগুলো মোটামুটিভাবে বহাল রাখা হয়েছে।’

সরকারি চাকুরেদের বেতন বৃদ্ধির পর ২০১৫ সালের ২২ নভেম্বর রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের মজুরি বাড়াতে সাবেক সচিব নজরুল ইসলাম খানকে চেয়ারম্যান করে ‘জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশন-২০১৫’ গঠন করা হয়। কমিশন গত বছরের ৩১ মার্চ শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করে। শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু গত বছরের ৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দেন।

কমিটি প্রতিবেদনে রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পের শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরি ৮ হাজার ৩০০ টাকা ও সর্বোচ্চ ১১ হাজার ৬০০ টাকা করার সুপারিশ করেছিল।

পরে কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে রাষ্ট্রায়ত্ত শ্রমিকদের মজুরি কাঠামো চূড়ান্ত করা হলো।

আরএমএম/এমবিআর/পিআর/এমএস

আরও পড়ুন