ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

‘স্বাধীনতা বিরোধীরা আর যেন ক্ষমতায় আসতে না পারে’

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশিত: ০৭:১৪ পিএম, ৩০ জুন ২০১৮

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বাধীনতা বিরোধীরা আর যেন ক্ষমতায় আসতে না পারে সে জন্য সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। কারণ যারা এ দেশকে বিশ্বাস করে না, তারা ক্ষমতায় এলে কখনও দেশের উন্নয়নে কাজ করবে না।

শনিবার (৩০ জুন) দুপুরে গণভবনে দলের দ্বিতীয় মেয়াদের বর্ধিত সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বর্ধিত সভার দ্বিতীয় পর্যায়ে গ্রাম-গঞ্জ থেকে আসা উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। অনুষ্ঠানের শুরুতে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ। স্বাধীনতা যুদ্ধে ও ১৫ আগস্টের সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে দেশের উন্নয়ন হয়, মানুষের কল্যাণে কাজ করে। তাই এসব উন্নয়নের কথা গ্রামের মানুষের কাছে বলতে হবে। দেশের উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণে যেসব কর্মসূচি নিয়েছি, সেগুলো তুলে ধরবেন।

শেখ হাসিনার ভাষ্য, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগকে আরও সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করতে হবে। জনসমর্থনও বাড়ানো দরকার। আমরা দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করি। কোনোরকম দলীয় কোন্দল যেন না থাকে সেদিকে খেয়াল রেখে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। যেখানে যেখানে সমস্যা আছে, তা দ্রুত মিটিয়ে ফেলা প্রয়োজন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৮১ সালে নিঃস্ব রিক্ত হয়ে দেশে ফিরে বিশাল পরিবার পেয়েছি। আমার পরিবার আওয়ামী লীগ, এ দলের সহযোগী সংগঠন, বাংলার জনগণ। আমাদের শক্তি আমার সংগঠন, তৃণমূলের নেতাকর্মী, দেশের গণমানুষ। এজন্য কোনো সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে পিছপা হই না।

দেশে গৃহহীনদের জন্য সরকার ঘর করে দেয়ার যে উদ্যোগ নিয়েছে ও যে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে, তা যেন তাদের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছায়, সেটা খেয়াল রাখতে ইউপি চেয়ারম্যান ও নেতাকর্মীদের অনুরোধ জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।

একই সঙ্গে বিধবা ও বয়স্কসহ যেসব ভাতা দেয়া হয় সেগুলোতে যেন অনিয়ম না হয় সেদিকে সজাগ থাকতেও ইউপি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও চেয়ারম্যানদের অনুরোধ জানান তিনি।

মাদকবিরোধী অভিযানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানে সবার সহযোগিতা চাই। গ্রামে-গঞ্জে সবার কাছে মাদকের কুফল তুলে ধরতে হবে। আগামী নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর খুনি, স্বাধীনতাবিরোধী, দুর্নীতিবাজ ও মাদক ব্যবসায়ীরা যাতে ক্ষমতায় আসতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। আমি বিভিন্ন রিপোর্ট সংগ্রহ করছি। আপনারা আগেও মতামত দিয়েছেন, এগুলো আমি পড়ি। আপনাদের মতামত নিয়েই মনোনয়ন দেয়া হবে।

গ্রামীণ উন্নয়নে বাজেটের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা গ্রামের রাস্তাঘাটের উন্নয়নে বাজেট দিচ্ছি, টাকা-পয়সা ছাড় দিচ্ছি। সেখানে যেন কোনো দুর্নীতি না হয় সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। প্রতিটি টাকা যথাযথভাবে ব্যয়ের মাধ্যমে আপনারা নিজেদের এলাকার উন্নয়ন করবেন, এটাই চাই।

তৃণমূলের ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী। তার কথায়, সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমাকে গ্রেফতারের পর আওয়ামী লীগসহ শিক্ষক ও ছাত্র সমাজ প্রতিবাদ করেছিল। তবুও একটার পর একটা মামলা দিয়েছিল ওই সরকার। কিন্তু তৃণমূল নেতারা ঐক্যবদ্ধ ছিলেন বলে সেনাসমর্থিত সরকার আমাকে মুক্তি ও নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়। নির্বাচনে বিরাট বিজয়ের মাধ্যমে আমরা ক্ষমতায় এসেছি। আওয়ামী লীগের লক্ষ্য দেশের সার্বিক উন্নয়ন। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় এসেছি বলেই আজ দেশ উন্নয়নের রোল মডেল।

মানুষের কল্যাণে এবং মানুষের জন্য রাজনীতি করতে তৃণমূল নেতাকর্মীদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’ পড়তে বললেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার এ দেশের মানুষের জন্য আজীবন কাজ করেছেন। মানুষ ও দেশের কল্যাণে অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেছেন। তার আদর্শে গড়ে ওঠে দেশের কল্যাণে আপনাদেরও কাজ করতে হবে। তবেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলা সম্ভব হবে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, মানুষ দল ত্যাগ করে মন্ত্রিত্বের জন্য, কিন্তু জাতির পিতা মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দলকে গড়ে তুলেছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করেছিলেন মানুষকে ভালোবেসে।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষ এ পর্যন্ত যা পেয়েছে, তা রক্ত দিয়ে অর্জন করতে হয়েছে। শুরু থেকেই পাকিস্তানিরা এখানকার মানুষকে অত্যাচার নির্যাতন করেছে, বঞ্চিত করেছে।

বিদেশে জাতির পিতার সঙ্গে ভ্রমণের একটি অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, আব্বার চিন্তা-ভাবনায় ছিল দেশের মানুষ। একদিন ইউরোপের একটি শহরে যাচ্ছি আমার স্বামীর কর্মস্থলে। বাবাও ছিলেন সঙ্গে। রাস্তার পাশে সুন্দর ও সাজানো গ্রাম দেখে তিনি দাঁড়িয়ে যেতেন। জিজ্ঞাসা করলেই বললেন- মা, আমরা একদিন স্বাধীন হব। এরপর আমি আমাদের গ্রাম ও ইউনিয়নকে এভাবেই গড়ে তুলবো।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্যই ছিল দেশের গ্রামকেন্দ্রিক। তিনি গ্রাম ও সেখানকার মানুষের সকল কল্যাণে কর্মসূচি দিয়ে গেছেন। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা তাকে হারিয়েছি। তিনি ভালোবাসা ও মমতা দিয়ে দেশকে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন।

এফএইচএস/এএইচ/এমএস

আরও পড়ুন