সংসদ সদস্যদের সহানুভূতি চাইলেন শিক্ষামন্ত্রী
মিথ্যা ‘প্রপাগান্ডা’ চালানো হচ্ছে জানিয়ে এ থেকে পরিত্রাণ পেতে জাতীয় সংসদ সদস্যদের সহানুভূতি চেয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
বৃহস্পতিবার (২৮ জুন) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দের উপর আনা ছাঁটাই প্রস্তাবের জবাব দেয়ার সময় তিনি এ সহানুভূতি কামনা করেন।
অধিবেশনে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে বরাদ্দের বিরোধিতা করে জাতীয় পার্টির ৯ সদস্য ছাঁটাই প্রস্তাব দেন। এরা হলেন-ফখরুল ইমাম, নূরুল ইসলাম ওমর, সেলিম উদ্দিন, মোহাম্মদ আব্দুল মুনিম চৌধুরী, রুস্তম আলী ফরাজী, রওশন আরা মান্নান, নুরুল ইসলাম মিলন, পীর ফজলুর রহমান।
বাজেটে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ২০১৯ সালের ৩০ জুলাই পর্যন্ত ১৮ হাজার ১৬৬ কোটি ৩১ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়।
ফখরুল ইমাম এ বরাদ্দের বিরোধিতা করে বলেন, শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বাড়ানো দরকার। কিন্তু এ মন্ত্রণালয়ে জিপিএ-৫ কেনা-বেচার ঘটনা ঘটে। এগুলো খারাপ কাজ। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। যতক্ষণ এটা ঠিক না করবে, ততক্ষণ টাকা ছাড় করা ঠিক হবে না।
রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, শিক্ষকরা এমপিওভুক্তির জন্য রাস্তায় অনশন করছেন। তাদের বিষয়টি বিবেচনা করে বরাদ্দ বাড়ানো উচিত। তবে এ সমস্যার সমাধান না করে বরাদ্দ বাড়িয়ে কি হবে?
জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জিপিএ-৫ টাকায় বিক্রি হয়। এ ধরনের একটা খবর একটা টিভিতে প্রচার হয়েছে। তবে এটা প্রমাণিত হয়নি। এরপরও আমরা বোর্ড থেকে বুয়েটের একটি তদন্ত কমিটি করে দিয়েছি। এ ছাড়া মন্ত্রণালয় থেকে আরেকটি কমিটি করেছি। যখনই এসব অভিযোগ আসে আমরা তা প্রকাশ করি। অভিযোগ অস্বীকার করছি না। তবে প্রতিবেদন এলে বলতে পারবো।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, এবার এসএসসির প্রশ্নফাঁস নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। এমনকি মিডিয়াতেও ব্যাপক প্রচার হয়েছে। এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে পাঁচটি মন্ত্রণালয় ও সব ধরনের নিরাপত্তা সংস্থার মাধ্যমে তদন্ত কমিটি করেছিলাম। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বেরিয়ে এসেছে মাত্র কয়েকটি প্রশ্ন আংশিক, তাও পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট পর ফাঁস হয়েছে। সেটি ৩০ নম্বরের এমসিকিউ ছিল। আমরা গোপন রাখিনি, তদন্ত করে প্রকাশ করেছি।
অন্য দেশের প্রশ্নফাঁসের নমুনা তুলে ধরে নাহিদ বলেন,ভারতে কেন্দ্রীয়ভাবে এবং রাজ্যভিত্তিক কিছু পরীক্ষা হয়। এবার রাজ্যের কিছু পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস হয়েছে। সিঙ্গাপুরেও প্রশ্নফাঁস হয়েছে। ইংল্যান্ডেও প্রশ্নফাঁস হয়েছে। ইন্টারনেটের যুগে এগুলো সব জায়গায়ই হচ্ছে।
ঘুষ নিয়ে নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাকে নিয়ে একটা পত্রিকা মিথ্যা তথ্য প্রচার করেছে। আমি নাকি বলেছি, দুর্নীতি সহনীয় পর্যায়ে করার জন্য। আমি উদাহরণ দিয়ে বলেছিলাম। দুর্নীতির জন্য ডিআইএ একটা আখড়া ছিল। আমরা সেটাকে ভেঙে নতুন ফরম্যাটে শুরু করেছি। সেদিন অতীতের উদাহরণ দিয়ে বলেছিলাম, আমরা অভিযোগ পেয়েছি এখানে বিভিন্ন জায়গায় ঘুষ দিতে হতো, ওপর লেভেল পর্যন্তও নাকি দিতে হতো, তখন আমি ওপর লেভেল বলতে আমাকে মিন করেছিলাম। ওপর লেভেল হলে তো আমি মন্ত্রীই। আমি নাকি সব মন্ত্রীকে বলেছি। এ কথা মোটেও সঠিক না। এটি নিয়ে বারবার আমাকে নির্যাতন করা হয়েছে। আপনারা এমপিরাও বিষয়টি নিয়ে অনেক সমালোচনা করেছেন। দয়া করে আপনারা সত্য, ন্যায় বিচার করুন, আপনাদের কাছে সহানুভূতি চাই।
এইচএস/এএইচ/পিআর