‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াই জটিল ও দীর্ঘমেয়াদি’
সংসদে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াই জটিল ও দীর্ঘমেয়াদি, তা সত্ত্বেও এ কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করতে মাঠপর্যায়ে একাধিক ওয়ার্কি কমিটি গঠন করা হয়েছে। রাখাইন রাজ্যে যথাযথ সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক মহল মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে। আশা করা যায়, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ শিগগিরই রাখাইন রাজ্যে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করবে এবং রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করা সম্ভব হবে।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে টেবিলে উত্থাপিত সরকারদলীয় এমপি (নেত্রকোনা-৫ আসনের) ওয়ারেসাত হোসেন বেলালের লিখিত প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এই আশ্রিতদের প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে মাত্র চার মাসের মধ্যে তিনটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ। চুক্তির শর্তানুযায়ী মাঠপর্যায়ে প্রত্যাবাসন সংশ্লিষ্ট প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মুসলিম জনগোষ্ঠী তথা রোহিঙ্গাদের প্রতি দীর্ঘদিন ধরে বিরাজমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও স্থানীয় রাখাইন কমিউনিটির অত্যাচার নির্যাতনের পরিপ্রেক্ষিতে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
গত বছরের ২৫ আগস্ট মিয়ানমান সরকারের সামরিক বাহিনীর পরিচালিত নির্মম অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় সাত লাখ বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত দেশটির নাগরিক বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এত অল্প সময়ে বিপুলসংখ্যাক রোহিঙ্গার আগমনে দেশের আর্থ-সামাজিক ও পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ এবং নিরাপত্তা ঝুূঁকি তৈরি করেছে। এর আগে ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর নিজ দেশের বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে আরও ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা এখানে আশ্রয় নেয়। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ লাখে।
তিনি বলেন, এসব রোহিঙ্গার ওপরে মিয়ানমার এই নির্মম নির্যাতন নিয়ে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে। এমনকি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সমস্যা ও তার আশু প্রতিকারের ব্যাপারে বেশকিছু প্রস্তাব তুলে ধরেছেন। প্রস্তাবগুলোর মধ্যে অনতিবিলম্বে ও চিরতরে মিয়ানমারের সহিংসতা, ‘জাতিগত নিধন’ নিঃশর্তে বন্ধ করা, কফি আনান কমিশনের সুপারিশালার নিঃশর্ত পূর্ণ ও দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা।
এইচএস/জেডএ/এমএস