ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

কাউকে হত্যা করা আমাদের উদ্দেশ্য নয় : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৩:২০ পিএম, ২৫ জুন ২০১৮

গত মাসে বাংলাদেশে মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হয়। অভিযান শুরুর পর প্রতি রাতেই ‘বন্দুকযুদ্ধে’ কয়েকজন করে মারা গেছেন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, এদের মধ্যে কেউ পুলিশের সঙ্গে, কেউ র্যাবের সঙ্গে, কেউ আবার নিজেদের মধ্যে গোলাগুলিতে নিহত হয়েছেন।

তবে টেকনাফে কথিত বন্দুকযুদ্ধে পৌর কাউন্সিলর একরামুল হক নিহত হওয়ার পর একটি অডিও ঘিরে বদলে যায় প্রেক্ষাপট। কমে আসে বন্দুকযুদ্ধের সংখ্যা; যদিও আজও চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে একজন নিহত হয়েছেন

এসব বন্দুকযুদ্ধের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জমান খান কামাল বলছেন, যেখানে অবৈধ ব্যবসা, সেখানে অবৈধ টাকা, সেখানেই অবৈধ অস্ত্র। তাই এ ক্ষেত্রে জীবন বাঁচাতে গোলাগুলি হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে কাউকে হত্যা করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। আমরা কাউকে হত্যা করছি না। যাদের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে তাদের গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে। যতদিন মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণে না আসবে ততদিন এ অভিযান চলবে।

মাদকের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে আজ সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন। আগামীকাল (২৬ জুন) বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হবে।

অভিযান চলাকাল এ পর্যন্ত কতজন বন্দুকযুদ্ধ বা ক্রসফায়ারে মারা গেছে- সাংবাদিকরা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এই মুহূর্তে সংখ্যাটি বলতে পারছি না। তবে অভিযান শুরু থেকে এ পর্যন্ত মোবাইল কোর্ট ও আদালতের মাধ্যমে মাদক সংশ্লিষ্টদের বিচারের মুখোমুখি করে ২২ হাজার জনকে কারাগারে বন্দী করা হয়েছে। এ সংখ্যাটা একটু কমবেশি হতে পারে বলেও জনান তিনি।

তিনি আরও বলেন, অভিযান শুরুর পর জড়িতদের অনেকে অবস্থান ত্যাগ করেছে বা সরে পরেছে। তবে যাই করুক। আমরা তাদেরকে ধরবো।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কাউকে হত্যা করার উদ্দেশ্য সরকারের নেই। আমরা কোনো হত্যা করি না। চার-পাঁচটি গোয়েন্দা সংস্থা থেকে আমরা লিস্ট নিয়েছি। সেই লিস্টকে আমলে নিয়ে আমাদের এই মাদক বিরোধী অভিযান চলছে। দুই তিনটি লিস্টে যাদের নাম আছে তাদের নিকট আমাদের অভিযান টিম যাচ্ছে। যারা স্যারেন্ডার করছে তাদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট বা নিয়মিত আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। যদি তারা মাদকদ্রব্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে প্রমাণিত হয় তাদের সাজা দেয়া হচ্ছে। আর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া না গেলে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘যেখানে অবৈধ ব্যবসা, সেখানেই অবৈধ টাকা, অবৈধ অস্ত্র। যেখানে অবৈধ অস্ত্র থাকে সেখানে এ ধরনের অবৈধ গোলাগুলি হতেই পারে। গোলাগুলি শুরু হলে আমাদের নিরাপাত্তা বাহিনীও বসে থাকে না। কারণ জীবন রক্ষার্থে তারাও হয়তো কখনও কখনও ফায়ার ওপেন করে। সেখানে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যও কিন্তু আহত হচ্ছে। আমরা সব সময় সব ধরনের হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে।’

আসাদুজ্জমান খান বলেন, ‘আমাদের স্টাইল হচ্ছে আগে বিচারের মুখোমুখী করা। যারা বিচারের মুখোমুখী হচ্ছে না তাদেরকে আমরা ধরবার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সে যেখানেই থাকুক আমরা তাদেরকে ধরবো। মোটামুটিভাবে আমরা মাদক কন্ট্রোল করেই ছাড়বো।’

সন্দেহভাজনদের তালিকায় কোনো সংসদ সদস্যের নাম আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা পুলিশের কাছে তালিকা পাঠিয়ে দিয়েছি। সেগুলো পুলিশ দেখছে। এমপির নাম আছে কি না- এই মুহূর্তে আমি বলতে পারব না। তবে আমি এটা বলছি যারই নাম থাকুক আইনে মুখোমুখী তাকে হতেই হবে।’

মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান যথেষ্ট পরিমাণ সাড়া জাগিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এদেশের মানুষ এটাকে খুব আগ্রহের সঙ্গে দেখছে এবং সমর্থন দিচ্ছে।’

বর্ডার দিয়ে মাদক দ্রব্য আসার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি নিজে মায়ানমারের রাষ্ট্র প্রধানের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছি। তারা মুখে বলছে ব্যবস্থা নেবে, কিন্তু বাস্তবে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তবে আমাদের পার্শ্ববর্তী, বন্ধুপ্রতীম দেশ ভারত ফেনসিডিল বন্ধে উদ্যোগ নিয়েছে। তারা বর্ডার এলাকার অনেকগুলো ফেনসিডিল কারাখানা বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু মায়ানমার এ জিনিসটি করেনি।

তিনি বলেন, ইয়াবা মোস্টলি আসে মায়ানমার থেকে। মায়ানমারের সঙ্গে বর্ডার এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সারাদেশে এটার ডিমান্ড ছিল তাই নাফনদী, বান্দরবন ছাড়াও সাতক্ষীরা দিয়ে ইয়াবা আসছে। সেগুলো বন্ধ করার জন্য আমরা সবধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি।

এমইউএইচ/এনএফ/এমএমজেড/পিআর

আরও পড়ুন