ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

হালদায় ভেসে উঠছে মরা মাছ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১১:৫৩ এএম, ২২ জুন ২০১৮

বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র মিঠা পানির মৎস্যপ্রজনন ক্ষেত্র হালদায় ভেসে উঠছে মরা রুই, কাতলা, মৃগেলসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ। চারপাশে ছড়াচ্ছে কটূ গন্ধ। গত প্রায় ১০ দিন ধরে চলছে এ অবস্থা।

কেউ কেউ বলছেন, দূষণের কারণে নদীতে ময়লা পানির আধিক্যে অক্সিজেন কমে যাওয়াতে এভাবে মাছ মারা যাচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, গত ১২ থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত টানা বর্ষণে উত্তর চট্টগ্রামের হাটহাজারী, রাউজান ও ফটিকছড়ি উপজেলার অধিকাংশ এলাকা পানিতে ডুবে যায়। হালদা নদীও এই তিন উপজেলায়। ফলে বন্যার সময় খাল, বিল, ডোবা ও পুকুরের পানি একাকার হয়ে যায়। পরে দূষিত হয়ে এসব পানি আবার গিয়ে পড়ে হালদা নদীতে। এরপর থেকে মরা মাছ ভেসে উঠতে দেখছেন স্থানীয়রা।

মধ্যম মাদার্শা এলাকার বাসিন্দা এনোয়েতুল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ বছর অকস্মাৎ ঢলে হাটহাজারীর বিস্তীর্ণ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। নদীর পানিতে সাদা ফেনা বের হচ্ছে। পানি পচে কারখানার বর্জের সঙ্গে মিশে টেংরা, পুঁটি, মলা, রুই, বোয়ালসহ বিভিন্ন মাছ মরে ভেসে উঠেছে।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা রিসার্চ ল্যাবরেটরিরর সমন্বয়ক ড. মনজুরুল কিবরিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রতিনিয়ত নদীতে বিভিন্ন শিল্প কারখানার রাসায়নিক বর্জ্য পড়ছে। এরমধ্যে এক সপ্তাহ আগে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানির স্রোতে মুরগির খামারের বিষাক্ত বর্জ্য, শিল্প বর্জ্যসহ নানা পচাগলা পদার্থ পানি দূষণ করেছে। এ কারণে মাছ মারা যাচ্ছে। বিশেষ করে চিংড়ি মাছ প্রয়োজনীয় মাত্রার অক্সিজেন ছাড়া থাকতেই পারে না। তাই এই মাছই বেশি মারা যাচ্ছে।’

halda

স্থানীয় বাসিন্দা ও সাংবাদিক আমিন মুন্না জাগোনিউজকে বলেন, ‘এশিয়ান পেপার মিল, হাটহাজারী বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বর্জ্য সরাসরি খালের মাধ্যমে হালদা নদীতে এসে পড়ছে। বন্যায় পানি বাড়ার কারণে নদী ছাড়াও এসব দূষিত পানি খাল বিলে মিশে গেছে। ফলে নদীর মাছ মরে ভেসে ওঠার পাশাপাশি খাল-বিল পুকুরের মাছও মরে ভেসে উঠছে।’

এর প্রতিবাদে হালদা নদী রক্ষার দাবিতে শনিবার মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম মহানগরের পরিচালক আজাদুর রহমান মল্লিক বলেন, ‘খবর শুনে আমরা হালদা নদীতে গিয়েছিলাম। সেখানে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, বৃষ্টিতে বন্যার পানি একাকার হওয়ায় পানি দূষিত হয়ে যায়। তবে প্রকৃত কারণ উদঘাটনে বৃহস্পতিবার আমাদের টিম হালদা নদী থেকে পানি সংগ্রহ করেছে। সেটা পরীক্ষার পর মাছ মরে যাওয়ার কারণ জানা যাবে।’

হালদা নদী প্রাকৃতিকভাবে রুই, কাতল ও কার্প জাতীয় মাছ প্রজননের একমাত্র স্থান। চট্টগ্রামের হাটহাজারী, রাউজান ও ফটিকছড়ি উপজেলাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এটি। ১২৩ কিলোমিটার দৈর্ঘে্যর নদীটি ঘিরে জীবিকা নির্বাহ করছেন আশপাশের প্রায় আড়াই হাজার জেলে।

হালদা নদীর উৎপত্তিস্থল হলো খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার ১ নং পাতাছড়া ইউনিয়নের হালদা ছড়া থেকে। কার্যত সেখান থেকেই এই হালদা নদী উৎপত্তি হয়ে কালুরঘাটের কাছে হয়ে কর্ণফুলীতে গিয়ে মিলিত হয়েছে। চলতি পথে হালদায় ৩৬টি ছড়া ও খাল এসে যুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে খালের সংখ্যা ১৯টি।

এনএফ/এমএস

আরও পড়ুন