২ লাখ ৬৮ হাজার একর বনভূমি বেদখল
দেশের মোট বনভূমির পরিমাণ প্রায় ২৬ লাখ হেক্টর। এর মধ্যে দুই লাখ ৬৮ হাজার একর বনভূমি বেদখল রয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ভোলা-৩ আসনের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের লিখিত প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ তথ্য জানান।
মন্ত্রী বলেন, দেশের মোট আয়তনের শতকরা ২৫ ভাগ বনভূমি থাকা প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের রয়েছে ১৭ দশমিক ৬২ শতাংশ বনভূমি।
তিনি আরও জানান, অনেক আগে থেকেই প্রত্যন্ত অঞ্চলের সরকারি বনাঞ্চলের কাছের জনসাধারণ চাষাবাদ, বসতি স্থাপন, রাস্তাঘাট নির্মাণ ইত্যাদি কারণে জবরদখল হয়ে আছে। কোনো কোনো স্থানে পাকা ইমারত, শিল্পায়ন, পাকা সড়ক নির্মাণ, হাট বাজার স্থাপন ইত্যাদি কারণে বনভূমি বেদখল হয়ে আছে। তবে বর্তমানে ব্যাপক প্রচার এবং সরকারের তৎপরতার ফলে নতুন করে বনভূমি জবরদখলের কোনো সুযোগ নেই।
জবরদখলকৃত জমি দখলমুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিভাগীয় বন কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক করে কমিটিও গঠিত হয়েছে। এ কাজ চলমান।
মহিলা আসন-২৪ এর এমপি বেগম সানজিদা খানমের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগামী ৫ বছরে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী দেশের বনভূমি ২৪ শতাংশে উন্নীত করার কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে নতুন জেগে ওঠা চর বনায়ন, দেশের উপকূল জুড়ে বনায়নের মাধ্যমে সবুজ বেষ্টনী নির্মাণ, সড়ক ও বাঁধের পাশে ও রেল লাইনের ধারে বনায়ন সৃজন করা, সরকারি বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানসমূহের আঙিনায় বনায়ন এবং সকল স্তরের জনগণকে নিজস্ব পতিত জমিতে বনায়নের জন্য উৎসাহিত করার কাজ চলমান রয়েছে।
মহিলা আসন-৩৯ এর এমপি হাজেরা খাতুনের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বন অধিদফতরের অধীনে মোট ২৫টি প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে।
মন্ত্রী জানান, জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডে ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত মোট তিন হাজার দুইশ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মেকাবেলায় জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টি বোর্ড কর্তৃক ২০০৯-২০১৮ সালের মে পর্যন্ত দুই হাজার আটশ ৮৯ কোটি ২০ লাখ ২৯ হাজার কোটি প্রাক্কলিত ব্যয়ে ৫৬২টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এরমধ্যে ২৫৯ প্রকল্প সমাপ্ত হয়েছে। তবে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নের প্রকল্প গ্রহণের বিষয়টি প্রকল্পের কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ওপর নির্ভর করে। তবে বর্তমানে এ ফান্ডে বরাদ্দযোগ্য অর্থের স্থিতি নেই।
জলবায়ু ট্রাস্ট তহবিল পরিচালনায় আইনি বিধান অনুযায়ী ১৭ সদস্যের উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করা হয়েছে এবং ট্রাস্টি বোর্ডকে সহায়তার জন্য ১৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি সহায়তা কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তিনি জানান, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও ঝুঁকি নিরুপণে ‘এসেসমেন্ট অব সি লেবেল রাইজ এ- ভার্নাবিলিটি ইন দি কোস্টাল জোন অব বাংলাদেশ থ্রু টেন্ড এনালাইসিস’ শীর্ষক গবেষণা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে যা চলমান রয়েছে।
এ ছাড়া আন্তর্জাতিক পর্যায়ের অনেকগুলো প্রকল্প ও সহায়তাও কার্যকরি রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এইউএ/এএইচ/এমএস