ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ে ভোগান্তিতে উত্তরাঞ্চলের যাত্রীরা

মুহাম্মদ ফজলুল হক | প্রকাশিত: ০৮:৪১ পিএম, ১৫ জুন ২০১৮

ঈদের আগের দিন ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় চরম আকার ধারণ করেছে। এতে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন উত্তরাঞ্চলের যাত্রীরা। ওই অঞ্চলের প্রতিটি ট্রেনই এক ঘণ্টা, দুই ঘণ্টা এমনকি চার-পাঁচ ঘণ্টা দেরিতে ঢাকা ছাড়া তো দূরের কথা কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছায়নি। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েন উত্তরাঞ্চলের ট্রেন যাত্রীরা।

কমলাপুরের স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশ চক্রবর্তী জাগো নিউজকে বলেন, অতিরিক্ত যাত্রী ও ট্রেন ক্রসিং জনিত কারণে বিলম্ব হচ্ছে। বিশেষ করে উত্তরভঙ্গের চারটি ট্রেনে শিডিউল বিপর্যয়। সকাল ৫টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত ৫৯টি ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার কথা কমলাপুর থেকে। বেলা ১১ টা পর্যন্ত ২০ টি ট্রেন ছেড়ে গেছে।

দিনের শুরুতেই ট্রেন ধুমকেতুর শিডিউল বিপর্যয় দিয়ে শুরু হয়। এরপর প্রায় প্রতিটি ট্রেনই ৩০-৪০ মিনিট এমনকি এক-দেড় ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ে। ধুমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেন কমলাপুর থেকে ছাড়ার কথা সকাল ৬ টায় সেটা কমলাপুরে এসে পৌঁছায় সকাল ১০ টার পর।

চিলাহাটিগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস সকাল ৮টায় ছাড়ার কথা থাকলেও সেটি ছাড়ে দুপুর ১টায়। সকাল ৯টায় রংপুর এক্সপ্রেসের স্টেশন ছাড়ার কথা থাকলেও সেটি ছাড়ে দুপুর আড়াটায়। রাজশাহী এক্সপ্রেস দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও তা স্টেশন ছাড়ে বিকেল ৩টার পরে। লালমনিরহাট ঈদ স্পেশাল সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে স্টেশন ছাড়ার কথা থাকলেও সেটি স্টেশনে আসে বেলা আড়াইটার পরে।

train3

জানা গেছে, সড়ক পথের দূরাবস্থার কারণে বেশ কিছুদিন যাবৎ উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ ট্রেন হয়েই ঢাকা অভিমুখে যাতায়াত করছেন। নিরাপদ যাত্রা আর অল্প সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে বর্তমানে খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ট্রেনযাত্রা। কিন্তু ঈদ এবং হাজারো ঘরমুখো মানুষের চাপে কারণে ট্রেন যাত্রা বিলম্বিত হওয়ায় বেশ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন যাত্রী সাধারণ।

উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চল মিলে খুলনা, সুন্দরবন, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা. নড়াইল রংপুর, চিলাহাটি হয়ে ঢাকা গামী অন্তত ১৪/১৫টি ট্রেনে কয়েক লাখ যাত্রী প্রতিদিন যাওয়া আসা করে।

আজ ঢাকা অভিমুখী যে ট্রেনগুলো বিশেষ শিডিউল বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে, সেগুলো হল রাজশাহীর ধুমকেতু এক্সপ্রেস, চিলাহাটির নীলসাগর এক্সপ্রেস, রংপুরের রংপুর এক্সপ্রেস এবং লালমনিরহাট ঈদ স্পেশাল।

ধুমকেতু এক্সপ্রেসের যাত্রী সলিমুল হক জাগো নিউজকে জানান, বউ বাচ্চাসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে ভোর ৪টায় স্টেশনে আসলাম। এতক্ষণে বাড়ি থাকার কথা। এখনও ট্রেন কমলাপুরেই ফিরেনি। দেরি হওয়াই অপেক্ষার প্রহর শেষ হচ্ছে না।

নীল সাগর এক্সপ্রেস ট্রেনটি সকাল ৮টায় কমলাপুর আসার কথা থাকলেও দুপুর পর্যন্ত না আসায় জয়পুরহাটের যাত্রী সরকারি কর্মচারী পলাশ টিকিট ফেরত দিচ্ছেন। কারণ হিসেবে তিনি জানান, সকাল ৮টার ট্রেন এখনও আসেনি। কখন আসে তার কোনো ঠিক নেই বলে কন্ট্রোল রুম থেকে জানিয়েছে। এদিকে, আবার জয়পুরহাট স্টেশনে গেলে গভীর রাত হতে পারে। এতো রাতে স্ত্রী সন্তান নিয়ে যাওয়া রিস্ক। কারণ রেল স্টেশন থেকে বাড়ি অনেক দূরে। তাই টিকিট ফেরত দিচ্ছি। ঈদের পরে যাবো তাও আশঙ্কা নিয়ে বাড়ি ফিরতে চাই না।

Train-journey-2

নীলসাগর এক্সপ্রেস এতো দেরির করার কারণ হিসেবে স্টেশন ম্যানেজার জানান, এই ট্রেন ফেরার সময় ২৩টি স্টেশন হয়ে আসতে হয়। যাওয়ার সময় অতিরিক্ত যাত্রী বোঝায় থাকার কারণে দেরি হয়। আমরা চাই নিবির্ঘ্নে যাত্রীরা যেন বাড়ি পৌঁছায়। পথে যাতে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে।

এদিকে রংপুরের এক যাত্রী ইয়াসমিন জানান, সকাল ৯টায় কমলাপুর আসার কথা রংপুর এক্সপ্রেস। এখন দেরি করে আসার কথা দুপুরে সেই সকাল ৮টায় স্টেশনে আসছি। এখন শুধু অপেক্ষা কখন ট্রেন আসে। আট ৯ ঘণ্টাতো লাগবে রংপুর যেতে। কখন গিয়ে পৌঁছায় দেখা যাক।

অন্যদিকে, লালমনিরহাট ঈদ স্পেশাল এক্সপ্রেস ট্রেনটি কমলাপুর আসার কথা সকাল ৯টা ১৫মিনিটে সেটাও কমলাপুরে পৌঁছায় বেলা ২টায়।

নাটোরের এক যাত্রী আলী হাসান হাওলাদার সকাল ৭টা থেকে স্টেশনে অবস্থান করছেন। এখনও ট্রেন এর খবর না হওয়াই স্ত্রী ও ছোট্ট সন্তান নিয়ে অপেক্ষায়। তার স্ত্রী বলেন, আমরা পরিবার নিয়ে সকাল সাতটায় স্টেশনে এসে বসে আছি। ৫ ঘণ্টা অতিবাহিত হতে চলেছে ট্রেনের খবর নেই।

এফএইচ/জেএইচ/পিআর

আরও পড়ুন