ফের ভারী বৃষ্টি, পাহাড়ে ধস ও চট্টগ্রামে বন্যার অবনতি হতে পারে
বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে ফের অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। এতে চট্টগ্রামে আবারও পাহাড় ধসের আশঙ্কার কথাও জানিয়েছে সংস্থাটি। একই সঙ্গে চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। ভারী বৃষ্টিতে মঙ্গলবার গভীর রাতে রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর উপজেলায় পাহাড় ধসে মা-ছেলেসহ ১০ জন নিহত হয়েছেন।
ভারী বর্ষণের সতর্কবাণীতে মঙ্গলবার আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, প্রবল মৌসুমি বায়ুর কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এর প্রভাবে মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতিভারী (৮৯ মিলিমিটারে বেশি) বৃষ্টি হতে পারে। অতিভারী বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে।
সর্বশেষ আবহাওয়া পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে নৌকা ও ট্রলারকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলেছে আবহাওয়া বিভাগ।
মঙ্গলবার বেলা ৩টা থেকে পরবর্তী ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা পর্যন্ত কালবৈশাখীর সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে- রাজশাহী, পাবনা, টাঙ্গাইল, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের ওপর দিয়ে পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কি.মি. বা এর বেশি বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো বা দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর উপজেলায় ভারী বর্ষণে সোমবার গভীর রাতে পাহাড় ধসে মাটি চাপা পড়ে ১১ জন নিহত হয়
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জানিয়েছে, হালদা, সাঙ্গু, মাতামুহুরী, ফেনী ও খোয়াই নদীর পানি বিভিন্ন পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। হালদা, সাঙ্গু ও মাতামুহুরীর পানি বৃদ্ধি আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এতে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও বান্দরবান জেলার কতিপয় স্থানে বিদ্যমান বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।
গঙ্গা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মেঘনার কতিপয় অংশের (হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার) প্রধান নদীগুলোর পানি আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় দ্রুত বাড়তে পারে।
আরএমএম/জেডএ/আরআইপি