আমি অ্যাকশনের লোক : ওবায়দুল কাদের
‘পরিবর্তন হবে না-এটা ভেবে তো আমি নাকে তেল দিয়ে ঘুমাতে পারি না। আমি বলার লোক না। অ্যাকশনের লোক। আমি অ্যাকশন নিচ্ছি। রাস্তায় থাকি, নৈতিক সাহস আছে আমার। ঘরে বসে নেই, আমি তো স্পটে আছি। পরিবহন খাতের পরিবর্তনে আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে।’
শনিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে এলেনবাড়ি বিআরটিএ সদর কার্যালয়ে এক সভা শেষে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মিটিং হলেই বিআরটিএ-কে শাসাচ্ছেন। কিন্তু কার্যত কোনো পরির্তন কি লক্ষ্য করা গেছে? বিআরটিএ নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছে এ কথা আজও আপনি বলছেন। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না কেন- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘ব্যবস্থা নিচ্ছি বলেই পরিবহনে কোনো খুন-খারাপি নেই। পরিবহনে ধর্মঘট নেই। টার্মিনালে টার্মিনালে খুনোখুনির জ্বালা এবং রোজ রোজ ক্যাজুয়ালটি (হতাহত)। ওই দিন কি ভুলে গেছেন? সেসব কি কমে নি? ছবির কি পরিবর্তন আস্তে আস্তে হচ্ছে না?
তবে হবে না, যদি আমরা আমাদের মন-মানসিকতার পরিবর্তন করতে না পারি। আমি বার বার বলছি মূল সমস্যা হচ্ছে আমাদের মন-মানসিকতা। আমাদের পরিবর্তনের চিন্তা করতে হবে। আমাদের নাকে তেল দিয়ে ঘুমালে চলবে না।‘
মন্ত্রী বলেন, ‘সকালে এক জায়গায় ১০ মিনিটের একটা যানজট হলো। সারাদিন যদি স্ক্রল যায়, টিভিতে যদি চলতে থাকে, তবে মানুষ তো আর ঘর থেকে বের হবে না। সেটাও কিন্তু টেলিভিশন, অনলাইন ও সংবাদপত্রকে বিবেচনায় রাখতে হবে। কারণ গুগল অ্যাপস সবাই দেখে না। আপনাদের অনুরোধ করছি, কাজেই বিভ্রান্তিকর তথ্য দেবেন না। ওই যানজট হয়তো আধাঘণ্টা কিংবা এক ঘণ্টা পর ঠিক হয়ে যাবে। আপনারাও (গণমাধ্যম কর্মী) তো বাড়ি যাবেন। তাহলে ১০০ কি.মি. যানজটের খবরে আপনার কেমন মনে হবে?
পুলিশ কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই শহরের রাস্তায় যে লক্কর-ঝক্কর, ভুংভাং যানবহন চলছে, তাকানো যায় না, পুলিশের কি চোখে পড়ে না। কিচ্ছু নেই। আল্লাহর নামে চলিলাম! কি যে কতগুলো চলছে, আল্লাহ মা’বুদ ভাল জানে। চলতে আছে। এই গাড়িগুলো কি একটুও দেখেন না? এগুলোর কাগজপত্র কিছুই নেই। বিদেশিরা বাংলাদেশে ঢাকার সিটির এই চেহারাটা দেখে কি ভাবে? এজন্য কি ব্যবস্থা নেয়া যায় না? সর্ষের মধ্যে কি অনেক ভূত?
উল্টোপথে মন্ত্রী কিংবা ভিআইপিদের গাড়ি ঘুরিয়ে সঠিক পথে পাঠিয়েছে পুলিশ। এটা শুধু উৎসব কিংবা বড় কোনো অনুষ্ঠানের সময় দেখি। এ ধরনের মানসিকতা পরিবর্তনে উদ্যোগে কি কাজ হবে?-এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘বললামই তো মন-মানসিকতার পরিবর্তন আগে জরুরি। নিয়ম-শৃঙ্খলা না মানলে, মন-মানসিকতার পরিবর্তন না হলে উন্নয়ন আজ ঈর্ষণীয় পর্যায়ে চলে যেত। নিয়ম-শৃঙ্খলা সবার জন্য। এ ধরনের প্রশ্ন শোনার পর তো আমাদের লজ্জা হওয়া উচিত!
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘গত কোরবানির ঈদে আমি বাইপাইল থেকে চন্দ্রা যাচ্ছিলাম। পুলিশের একজন ওসি এসে বললেন, রাস্তায় খুব যানজট, রং সাইডে না গেলে আপনি পৌঁছাতে পারবেন না। আমি বলেছিলাম, আমি রং সাইডে যেত পারব না। আমি ১৬ মিনিটের রাস্তা ৪ ঘণ্টায় গেছি। আমি যদি নিয়ম মানতে পারি, তবে অন্যরা কেন মানবেন না?
গতকাল (শুক্রবার) প্রেসক্লাবের সামনে বাসচাপায় নারীর মৃত্যু হয়েছে। আপনি কি মনে করেন পরিবহন খাতে শৃঙ্খলার অভাব আছে? মন্ত্রী বলেন, ‘অভাব তো আছেই। শৃঙ্খলার অভাব আছে বলেই তো এসব ঘটছে।’
অতিরিক্ত ভাড়ার আদায়ের ব্যাপারে কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অতিরিক্ত ভাড়া যাতে আদায় করা না হয়, সেজন্য তিনটি মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে। ভাড়া বেশি নিলেও ব্যবস্থা। আপনারাও ধরিয়ে দেবেন ব্যবস্থা নেব।’
জেইউ/এসআর/জেআইএম