অনলাইনেও টিকিট না পাওয়ার অভিযোগ
পরপর ২ দিন অনলাইনে ঈদের অগ্রিম ট্রেনের টিকিট সংগ্রহের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন বেসরকারি চাকরিজীবী সাব্বির আহমেদ। নির্ধারিত দুই দিনে আগামী ১৩ ও ১৪ জুনের টিকিট অনলাইনে কাটতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি।
কিন্তু ঈদ উৎযাপনে তো বাড়ি যেতেই হবে। তাই ভিন্ন পথ না পেয়ে বাধ্য হয়ে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে এসেছেন তিনি। কমলাপুরে সকাল ৮টা থেকে ২৬টি কাউন্টারে আগামী ১৫ জুনের টিকিট বিক্রি হচ্ছে। সাহরির পর থেকে রাজশাহীগামী ট্রেনের টিকিটের কাউন্টারের সামনে অপেক্ষা করছিলেন।
আলাপকালে সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘বিগত দুই দিন একই অবস্থা হয়েছে। অনলাইনে টিকিট ইস্যু হওয়ার কথা সকাল ৮টায়। সেভাবেই আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে বসে ছিলাম। ৮টা বাজার সঙ্গেই সঙ্গে চেষ্টা করতে থাকি, কিন্তু সাইটেই ঢুকতে পারছিলাম না। সার্ভার বিজির কারণে সেই সময় সাইটটি ব্যবহার করতে পারছিলাম না। কিন্তু পরবর্তীতে যখন ঠিক হল, তখন টিকিট শেষ। পরপর দুই দিন একই রকম অবস্থার মধ্যে পড়েছি।'
তিনি বলেন, ‘তাই বাধ্য হয়ে আজ স্টেশনেই এসেছি। সাহরির পর থেকে কাউন্টারের সামনে সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে ১৫ জুনের টিকিটের জন্য অপেক্ষা করছি। কিন্ত মানুষের যে ভিড়, এতে করে টিকিট পাব কি না-তা নিয়ে সংশয়। তিনি বলেন, অনলাইনে টিকিট বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও যদি সাধারণ মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে কিনতে না পারে, তাহলে অনলাইনে দিয়ে কী লাভ? যুগটাই এখন অনলাইনের, তাই অনলাইনের সেবা বৃদ্ধিসহ অনলাইনে টিকিটের সংখ্যা বাড়ানোর সময় এসেছে এখন।
পাশে থাকা আব্দুল আওয়াল নামের আরেক টিকিট প্রত্যাশীও একই অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘ঈদের অগ্রিম টিকিটের জন্য অনলাইনে আমার অনেক বন্ধুরাও চেষ্টা করেছে কিন্তু শেষ পর্যন্ত পায়নি। আমি নিজেও গতকাল (মঙ্গলবার) সকাল ৮টায় চেষ্টা করে টিকিট পাইনি। সে সময় বারবার সার্ভার ব্যস্ত ছিল। কেউই ভালোভাবে ঢুকতে পারেনি। আর যখন পেরেছে, তখন টিকিট শেষ। অনলাইনে না পেয়ে তাই আজ নিজেই কাউন্টারে এসেছি টিকিট সংগ্রহ করতে।’
অনলাইনে চেষ্টার পর টিকিট না পেয়ে অনেকেই কাউন্টারে এসেছেন স্বাভাবিক নিয়মে টিকিট সংগ্রহ করতে, এমন অভিযোগের কথা জানিয়েছেন অনেকেই।
অনলাইনে টিকিট না পাওয়া যাত্রীদের অভিযোগের বিষয়ে কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার সীতাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘অনলাইনে টিকিট পাচ্ছে না-এ অভিযোগ ঠিক না, কারণ, যারা অনলাইনে টিকিট কাটেন, তারা সেই টিকিটটি প্রিন্ট করে মূল টিকিট সংগ্রহের জন্য আমাদের এখানে আসে। তো স্বাভাবিকভাবে তারা তো আসছেনই, তাহলে অবশ্যই অনলাইনে টিকিট সংগ্রহ করতে পারছেন।’
তিনি বলেন, ‘এছাড়া অনলাইনে ২৫ শতাংশ আগ্রহীরা সার্ভারে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই টিকিট কাটতে চেষ্টা করেন। একই সময়ে অনেকজন একসঙ্গে সাইটে প্রবেশ করায় সার্ভার বিজি হয়ে যায়। আর টিকিটের প্রতি সবার চাহিদা থাকে, যে কারণে সবাই চেষ্টা করেন। এর মধ্যেই অনেকে পেয়ে যান। আর অনলাইনে টিকিট সংখ্যা নির্দিষ্ট, তাই সবাই টিকিট পাননা।’
এদিকে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে অগ্রিম টিকিট বিক্রির শেষ দিনেও (বুধবার) কমলাপুরে টিকিট প্রত্যাশীদের ভিড় ছিল। ১ জুন থেকে শুরু করে আজ ৬ জুন ঈদ উপলক্ষে অগ্রিম ট্রেনের টিকিট বিক্রি শেষ হচ্ছে। আজও বিক্রি হবে ২৭ হাজার ৪৬১টি টিকিট।
এএস/এসআই/এসআর/এমএস